মা দুর্গা ঘোষের সঙ্গে জ্যোতির্ময়। নিজস্ব চিত্র
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর, তিনিও যে দল ছাড়বেন তা প্রায় মনস্থ করেই ফেলেছিলেন ডোমজুড়ের সলপের নেতা জ্যোতির্ময় ঘোষ। শুরু করেছিলেন দলত্যাগের প্রস্তুতিও। কিন্তু মায়ের চোখের জলে শেষ পর্যন্ত দল বদল করা আর হয়ে ওঠেনি জ্যোতির্ময়ের। বরং সুর বদলে এখন তিনি বলছেন, ‘‘দলে থেকেই কাজ করতে চাই।’’
ডোমজুড়ের সলপ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জ্যোতির্ময়। এলাকায় তাঁকে সকলে চেনে গোপাল নামে। দলে তিনি পরিচিত ছিলেন রাজীবের অনুগামী হিসাবেই। তৃণমূলে থাকাকালীন যখন ‘বেসুরো’ গাইছেন রাজীব, তখন তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন গোপালও। রাজীবের সমর্থনে নেটমাধ্যমে দলের বিরুদ্ধে সরব হন তিনিও। শুধু তাই নয়, বিজেপির পদ্মফুল ছাপ উত্তরীয় পরেও তাঁকে দেখা গিয়েছে। রাজীব বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর, তাঁর সঙ্গেও সম্প্রতি একাধিক বার দেখা গিয়েছে গোপালকে। এমনকি বিজেপি-র দলীয় দফতরেও তাঁকে ঢুকতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি ডোমজুড় তৃণমূলের একাংশের। এ হেন গোপালের দলত্যাগ যে কেবলমাত্র সময়ের অপেক্ষা তা মনে করছিলেন অনেকেই।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর দল বদলানো হল না। গোপালই জানাচ্ছেন, দলত্যাগের সিদ্ধান্ত বাড়িতে জানাতেই প্রথম আপত্তি আসে তাঁর মা দুর্গা ঘোষের তরফে। গোপালের মন্তব্য, ‘‘মায়ের আপত্তিতেই সিদ্ধান্ত বদল করি। আমি বিজেপি-তে যেতে চাই না। তৃণমূলে থেকেই কাজ করতে চাই। কিছুটা আবেগতাড়িত হয়েই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। পরে নিজের বিবেককে প্রশ্ন করি।’’ গোপাল আরও বলছেন, ‘‘মায়ের চোখের জলে সিদ্ধান্ত বদলেছি। এ বার সব শক্তি দিয়ে লড়াই করে ডোমজুড়ে তৃণমূল প্রার্থীকে জেতাব।’’
ছেলের সিদ্ধান্ত শুনে দুর্গার প্রতিক্রিয়া, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মমতাময়ী। তিনি রাজ্যের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তাই ছেলেকে বিজেপি-তে যোগ দিতে নিষেধ করেছিলাম। তৃণমূল ছাড়া অন্য কোথাও ভোট দিতে হাত কাঁপবে।’’
গোপালের সিদ্ধান্ত শুনে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় বলছেন, ‘‘উনি যদি নিজের ভুল বুঝতে পারেন তা হলে ভাল। বিজেপি-র মতো দলে কেউ আত্মসম্মান নিয়ে কাজ করতে পারবেন না। যাঁরা গিয়েছেন তাঁদের অনেকেই ফিরে আসবেন।’’ হিন্দি প্রবাদ টেনে ডোমজুড়ের তৃণমূল নেতাদের একাংশ বলছেন, ‘‘অগর সুবহ কা ভুলা শাম কো ওয়াপস ঘর লওট আয়ে তো উসে ভুলা নেহি কহতে।’’ অর্থাৎ, সকালের পথভোলা পথিক যদি সন্ধ্যায় ঠিক পথে ঘরে ফেরে তা হলে তাঁকে আর পথভোলা বলা যায় না। আরও এক ধাপ এগিয়ে কারও আবার রসিকতা, ‘‘গোপাল বড় সুবোধ ছেলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy