কেন্দ্রীয় সরকারি বঞ্চনার বিরুদ্ধে দিল্লিতে অভিষেকের নেতৃত্বে সরব হবে তৃণমূল। ছবি: সংগৃহীত।
শনিবারে হাওড়া স্টেশন থেকে ‘তৃণমূল এক্সপ্রেস’ রওনা দেবে রাজধানী দিল্লির উদ্দেশে। ২-৩ অক্টোবর দিল্লিতে ধর্না কর্মসূচি। প্রায় তিন হাজার মানুষ একটি বিশেষ ট্রেনে চেপে দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে সরব হবেন বলে ঠিক হয়েছে।
এ বছর ২১ জুলাই শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন অভিষেক। তার পর থেকেই তৎপরতা শুরু হয়েছিল শাসকদলের অন্দরমহলে। কিন্তু সে ভাবে প্রশাসনিক অনুমতি না মেলায়, কর্মসূচির পরিধিতে বদল করেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। পায়ের আঘাতের কারণে দলীয় কর্মসূচিতে যোগদান করতে দিল্লি যেতে পারছেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই কর্মসূচি যাতে কেন্দ্রীয় সরকারের কানে পৌঁছয় সেই লক্ষ্যে প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই ৫০ লাখ চিঠি ইতিমধ্যেই সড়কপথে দিল্লি পাঠানো হয়ে গিয়েছে। যা দেওয়া হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহের মন্ত্রকে। ১০০ দিনের কাজের টাকা-সহ রাজ্যের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বকেয়া কেন্দ্রীয় সরকার আটকে রেখেছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। তাই এই কর্মসূচি নিয়েছে বাংলার শাসকদল।
দলের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহকারী সভাধিপতি এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের ১ অক্টোবরের মধ্যে দিল্লি পৌঁছতে বলা হয়েছে। কিন্তু তার আগে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ১০০ দিনের কার্ড হোল্ডারেরা যাতে নিশ্চিন্তে রাজধানী পৌঁছাতে পারেন, সেই লক্ষ্যে শাসকদলের তরফেই একটি বিশেষ ট্রেনের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শুভাশিস চক্রবর্তীকে এই ট্রেনটির যাবতীয় আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনিই রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে দিল্লি যাতায়াতের জন্য বিশেষ ট্রেনের বন্দোবস্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার শুভাশিস বলেন, ‘‘২২ বগির একটি ট্রেন ভাড়া করা হয়েছে যাতে জব কার্ড হোল্ডারেরা দিল্লিতে যেতে পারেন। তাঁদের ফিরে আসার বন্দোবস্তও দলের তরফেই করা হচ্ছে। ট্রেনেই তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ শাসকদলের নেতারা এই ট্রেনটিকেই ‘তৃণমূল এক্সপ্রেস’ নাম দিয়েছেন। দূরবর্তী জেলা থেকে জব কার্ড হোল্ডারেরা ইতিমধ্যে কলকাতায় এসে গিয়েছেন। তাঁদের ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র এবং নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাখা হয়েছে। শনিবার সেখান থেকেই তাঁরা হাওড়া স্টেশনে গিয়ে ট্রেনে উঠবেন। তবে কলকাতা লাগোয়া জেলাগুলি থেকে জব কার্ড হোল্ডারদের সরাসরি হাওড়া স্টেশনে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়কে।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব চাইছেন, ১ অক্টোবর কর্মসূচিতে শামিল সকলকে দিল্লিতে একত্রিত করতে। পর পর দু’দিনের কর্মসূচি কী ভাবে হবে সেই নির্দেশ সেখানেই অভিষেক জানাবেন দলীয় নেতাদের। গান্ধীজয়ন্তীর দিনে রাজঘাটের কর্মসূচিতে কী ভাবে তৃণমূল সাংসদ-বিধায়কেরা অংশ নেবেন, তা-ও বলে দেবেন অভিষেকই। এ ছাড়াও জব কার্ড হোল্ডারেরা যন্তর মন্তরে ধর্না দেওয়ার পাশাপাশি, কৃষি ভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি কী ভাবে রূপায়িত হবে, তা-ও তুলে ধরবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শুক্রবার একটি ভার্চুয়াল বৈঠক ডাকা হয়েছে, তাতে আলোচনা হবে দিল্লির কর্মসূচি কী ভাবে বাংলায় তুলে ধরা হবে তা নিয়ে। ওই দু’দিন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি ব্লকের বিডিয়ো অফিসের সামনে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে ধর্না দেওয়ার কর্মসূচি প্রচারের পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল। সেই পরিকল্পনাতে আরও কিছু সংযোজন করবেন অভিষেক, এমনটাই মত তৃণমূলের জেলাস্তরের নেতাদের। তাই শুক্রবার নির্দেশ পেয়েই তাঁদেরও সোম এবং মঙ্গলবার ব্লকে ব্লকে প্রস্তুতি নিতে হবে। কলকাতাতেও একটি কর্মসূচি করবে তৃণমূলের বঙ্গজননী বাহিনী। মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে দু’দিন ধর্না দেবেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy