জামালপুরের তৃণমূলের সভা। —নিজস্ব চিত্র।
এক সপ্তাহে তিনটে সভা। সভার পাল্টা সভা। সেই পাল্টা সভার উত্তরে ফের সভা রবিবার পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে। বিরোধীদের টক্করের পাশাপাশি জামালপুরে গোষ্ঠী কোন্দলেও জেরবার তৃণমূল।
বুধবার, ২০ জানুয়ারি জামালপুরের চকদিঘির মাঠে কৃষি আইনের সমর্থনে সভা করেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ। পর দিনই তৃণমূলের জামালপুর ব্লক সভাপতি শ্রীমন্ত রায়ের নেতৃত্বে প্রতিবাদসভা হয় ওই একই জায়গায়। এক দিনের বিরতির পর রবিবার ফের জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহমুদ খানের আহ্বানে সভা হয়। অনেকের মতে, দু’বার সভা করে বিজেপি-র ক্ষমতা প্রদর্শনের জবাবে তৃণমূলের শক্তি দেখানো হল। এর পিছনে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
বুধবার বিজেপি-র সভা কার্যত ফাঁকা হলেও ভাষণ দেন সৌমিত্র খাঁ। তৃণমূলের ব্লক সভাপতির আয়োজনে সভাও তেমন ভিড় হয়নি। তবে রবিবাসরীয় বিকেলে তৃণমূলের সভায় থিকথিকে ভিড়। ব্লক তৃণমূলের যুব সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ভূতনাথ রায় বলেন, “সভার ভিড়ই প্রমাণ করেছে, মানুষ কাদের সঙ্গে রয়েছে।”
অনেকের মতে, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে জনসভা বলে প্রচার করা হলেও আসলে তা ছিল মেহমুদ খানের শক্তি প্রদর্শনের সভা। এবং তাতে তিনি সফল। কারণ, দু'দিন আগে ব্লক সভাপতির সভায় তেমন ভিড় হয়নি। তবে রবিবার দুপুর ২টোর পর থেকেই বাস-ট্রাক্টরে করে কর্মী-সমর্থকরা সভায় ঢুকতে শুরু করেন। মহিলাদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। মেহমুদের দাবি, “কোন পাল্টা সভা নয়। কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সভার আয়োজন করা হয়েছে। দলের শীর্ষনেতৃত্বের নির্দেশেই সভার আয়োজন করা হয়েছে। তৃণমূলের সঙ্গে মানুষ রয়েছে, এটা তারা বুঝিয়ে দিয়েছে। এ বার জামালপুর বিধানসভায় তৃণমূলই জিতবে।” যদিও বিজেপি-র জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর পাল্টা দাবি, “এলাকার বাসিন্দারা দেখছেন আশপাশে কী হচ্ছে। বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুরে জিতবে বিজেপি-ই।
জামালপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি ছাড়াও তৃণমূলের সাফল্যের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জামালপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হন উজ্জ্বল প্রামাণিক। সে সময় মেহমুদ এবং উজ্জ্বল একসঙ্গে ছিলেন। তবে বছর গড়াতেই দুই নেতার সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। ’১৬-র বিধানসভা ভোটে মেহমুদের চরম বিরোধিতা স্বত্ত্বেও ফের প্রার্থী করা হয় উজ্জ্বলকে। তবে বাম প্রার্থী সমর হাজরার কাছে হেরে যান তিনি। এর পর থেকে দুই নেতার মধ্যে ফাটল আরও বেড়েছে।
রবিবারের সভায় বিজেপি এবং সিপিএমের বহু কর্মী মেহমুদ খানের সভায় তৃণমূলে যোগদান করেন। ব্লক সভাপতি বা উজ্জ্বলের নাম না করলেও মেহমুদ বুঝিয়ে দেন, জামালপুরে তাঁরই ক্ষমতা বেশি। তবে এ নিয়ে কিছু বলতে নারাজ উজ্জ্বল।
রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, “দলের সভায় বহু মানুষের জমায়েতই প্রমাণ করে যে বিজেপি নয়, সাধারণ মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছে।” যদিও জামালপুরে মেহমুদ-উজ্জ্বলের দ্বন্দ্ব নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy