Advertisement
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
RG Kar Medical College and Hospital Incident

‘কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে এই ভাবে দেখেছেন?’ মমতার মাহাত্ম্য প্রচারে তৃণমূল, পাল্টা বিরোধীদের

মমতা এ দিন দুপুরে আচমকা উপস্থিত হন বিধাননগরে ডাক্তারদের অবস্থানে। সেখানে তিনি বলেন, আর জি করের ঘটনায় বিচার হবে, তাঁর উপরে চিকিৎসকেরা ভরসা রাখতে পারেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭
Share: Save:

স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের অবস্থানে আচমকা উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা দেওয়া থেকে কালীঘাটে তাঁদের বৈঠকে ডাকা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই আলোচনা না হওয়া— শনিবার এই গোটা পর্ব ঘিরে ফের রাজনৈতিক চাপানউতোর বাধল। শাসক দল মমতার এই অবস্থানকে রাজনীতিতে কার্যত ‘নজিরবিহীন’ বলে প্রচারে নেমেছে। যদিও বৈঠক হওয়ার জন্য ডাক্তারদের কোনও শর্তই মানেননি মমতা ও সরকার, এমন অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।

মমতা এ দিন দুপুরে আচমকা উপস্থিত হন বিধাননগরে ডাক্তারদের অবস্থানে। সেখানে তিনি বলেন, আর জি করের ঘটনায় বিচার হবে, তাঁর উপরে চিকিৎসকেরা ভরসা রাখতে পারেন। চিকিৎসকেরা এর পরে আলোচনা চাওয়ায় তাঁদের সন্ধ্যায় ডাকা হয়েছিল কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। কিন্তু দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে আন্দোলনকারীরা জানানা, তাঁরা বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার বা ভিডিয়োও চাইছেন না, শুধু কার্যবিবরণীর (‘মিনিটস’) শর্তেই আলোচনায় রাজি। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়ে দেন, তাঁরা অপেক্ষা করতে রাজি নন।

যদিও চন্দ্রিমা রাতে বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী দুপুরে জুনিয়র চিকিৎসকদের ধর্নাস্থলে গিয়ে আন্তরিকতার সঙ্গে ওঁদের সঙ্গে কথা বললেন। বাড়িতে বৈঠকের জন্য তিন ঘণ্টা ঠায় বসে রইলেন। বেরিয়ে এসে কত ভাবে কথা বলার চেষ্টা করলেন। কিন্তু হল না!” তাঁর সংযোজন, “কেউ কোথাও কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে এই ভাবে দেখেছেন? সবাই যখন উঠে গেলেন, তখন ওঁরা কথা বলতে চাইলেন। দেখা যাক, পরে কী হয়।” মমতার দিনভর এই সব পদক্ষেপকে ‘নজিরবিহীন’, ‘ঐতিহাসিক’ বলে সমাজমাধ্যমে প্রচার চালিয়েছেন তৃণমূলের নানা স্তরের নেতারাও।

তবে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রীর ‘বিশ্বাসযোগ্যতা’ নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “সন্দীপ ঘোষের (আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ) বিরুদ্ধে জুনিয়র ডাক্তারদের সব থেকে বেশি অভিযোগ ছিল। অথচ সন্দীপের পদত্যাগের পরে তাঁকে পুনর্নিয়োগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। এর পরে ওঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে কী করে বিশ্বাস করবেন?” মুখ্যমন্ত্রী বার বার সুপ্রিম কোর্টের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আসলে ‘ভয় দেখাচ্ছেন’ বলেই দাবি করেছেন সুকান্ত।

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী বাড়িতে নেমন্তন্ন করে আলোচনা করলেন না। কী গোপন করতে চান উনি? ভিতরে এক বলবেন, বাইরে এক রকম বলবেন, এটা তো সরকারের অভ্যাস। তাই কি ডাক্তারদের কোনও কথাতেই রাজি হলেন না?’’ শিলিগুড়িতে এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীরও দাবি, “বাংলার ছাত্র-ছাত্রীদের দৃঢ়তা, তেজ, সততার কাছে মুখ্যমন্ত্রী হার মেনেছেন। তাই ৩২-৩৩ দিন পরে এখন তাঁর মনে হয়েছে দেখা করা উচিত। এর আগে কখনও স্বাস্থ্যসচিব, মুখ্যসচিবের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেছেন, কখনও বলেছেন আমি আর বসব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE