মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারবে না, দাবি কৈলাস বিজয়বর্গীয়র। —ফাইল চিত্র
রাজ্যে প্রচারে এসে মোদী বলেছিলেন, ৪০ জন বিধায়ক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে ১২১ বিধানসভায় এগিয়ে বিজেপি। এ বার আরও এক ধাপ এগিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় দাবি করলেন, রাজ্যে পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণই করতে পারবে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। অর্থাৎ তার আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে তৃণমূল সরকার।
‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানে মমতার ক্ষিপ্ত যাওয়া থেকে মোদীর শপথে মমতার অংশগ্রহণ না করার মতো প্রশ্নে সর্বভারতীয় একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূল এবং দলনেত্রী মমতাকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে কার্যত রকেট উত্থান বিজেপির। ২ থেকে আসন সংখ্যা বেড়ে এক লাফে ১৮। লোকসভার এই ফল বিধানসভা ক্ষেত্র ধরে বিচার করলে ১২১টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। অর্থাৎ তৃণমূলের জন্য অশনি সঙ্কেত। লোকসভায় সাফল্যের পর ২০২১ সালে রাজ্যে বিধানসভা ভোটকেই পাখির চোখ করে এগোচ্ছে বিজেপি-ও। কিন্তু বিজয়বর্গীয়র দাবি, রাজ্যে পালাবদলের জন্য ২০২১ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। তার আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার।
কেন এমন দাবি করছেন কৈলাস? ওই সাক্ষাৎকারে বিজয়বর্গীয় বলেন, ‘‘ভোটের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পড়ে যাবে। কারণ, বিরাট সংখ্যার বিধায়ক বিদ্রোহ ঘোষণা করে দল ছাড়তে প্রস্তুত। তৃণমূল বিধায়কদের দল ছাড়ার বিরাট হিড়িক পড়ে যাবে। বর্ষীয়ান নেতারা ক্ষুব্ধ, কারণ তাঁদের আশঙ্কা মমতার উত্তরাধিকার হবেন তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি এমন কয়েক জন তৃণমূল নেতাকে জানি, যাঁদের রিপোর্ট করতে হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ বিষয়ে তাঁরা মোটেও খুশি নন।’’
আরও পড়ুন: ভাটপাড়া পুরসভা দখল করল বিজেপি, পুরপ্রধান হলেন অর্জুনের ভাইপো সৌরভ
প্রথমে মেদিনীপুর এবং পরে উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া। জয় শ্রীরাম স্লোগান শুনে কার্যত ক্ষিপ্ত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গাড়ি থেকে নেমে তেড়ে যেতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। এর পরেই মমতার বাড়িতে জয় শ্রীরাম লেখা পোস্টকার্ড পাঠানোর নতুন কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। সেই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই বিজয়বর্গীয়ের কটাক্ষ, ‘‘জয় শ্রীরাম ধ্বনি শুনে মমতা এমন করছেন, যেন তাঁর কানে কেউ গরম তেল ঢেলে দিয়েছে। এটা হাস্যকর। ওঁকে অপদস্থ করার জন্যই জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়া হচ্ছে বলে উনি ভাবছেন। একটা ধর্মীয় মন্ত্র কী ভাবে কারও অপছন্দ হতে পারে?’’ মমতার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগও তুলেছেন বিজয়বর্গীয়। তিনি বলেন, ‘‘ভোটের আগে মমতা বলেছিলেন, ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বদলা নেব। এখন সেটাই শুরু করেছেন তিনি।’’
গত ৩০ মে দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ নিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। দিল্লিতে সেই অনুষ্ঠানে মমতা যাবেন বলেও পরে সিদ্ধান্ত বদল করেন। সরাসরি না বললেও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, এ রাজ্য থেকে বিজেপির ‘শহিদ’ দলীয় কর্মীদের পরিবারের লোকজনকে শপথের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেই মমতা শেষ মুহূর্তে যাননি। এটা কি বিজেপির রাজনৈতিক চাল নয়? বিজয়বর্গীয়ের সোজাসাপটা জবাব, ‘‘এটা ছিল তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত। উনিই বরং পালানোর অজুহাত খুঁজছিলেন।’’
আরও পড়ুন: মোদীর পাশে থাকার আশ্বাস মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নাগরিকদের
ভোটের প্রচারে এসে মোদী-অমিত শাহরা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ভোটের পরেও সেই অবস্থান পাল্টায়নি। বরং আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে বলে অভিযোগ তুলছে গেরুয়া শিবির। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পাল্টা বলছেন মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে। রাজ্যে ক্ষমতায় এলে সেই আইনশৃঙ্খলাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বিজয়বর্গীয়। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের সবচেয়ে বড় সমস্যা আইনশৃঙ্খলা। তা ছাড়া উন্নয়নে পিছিয়ে পড়েছে। সীমান্ত এলাকায় জনসংখ্যার ভারসাম্য হারানোও সমান গুরুত্বপূর্ণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy