—ফাইল চিত্র।
কলকাতার মতোই রাজ্যের আরও চারটি পুর-নিগমের ভোটেও মেয়র মুখ সামনে রেখে লড়তে যাচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে ভোটের ফলপ্রকাশের পরেই। তবে শিলিগুড়িতে প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবকে পুরভোটের টিকিট দিয়ে জল্পনা উস্কে দিয়েছে তারা। ওই শহরে শাসক দল জিতলে গৌতমকেই মেয়রের আসনে দেখা যাবে কি না, সেই চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শিবিরে। বিধাননগরে আবার দল ছেড়ে ফিরে আসা প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত এবং বিদায়ী মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, দু’জনকেই প্রার্থী করা হয়েছে। ফলে, বিধাননগর পুরসভা নিয়েও তৈরি হয়েছে নানা রকমের জল্পনা। তবে বিধাননগরের বিদায়ী ডেপুটি মেয়র এবং তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়কে এ বার আর পুরসভায় প্রার্থী করা হয়নি। আসানসোল ও চন্দননগরের তালিকায় অবশ্য তেমন কোনও বড় চমক নেই।
বিধাননগর, শিলিগুড়ি, আসানসোল ও চন্দননগর পুর-নিগমের প্রার্থী তালিকা নিয়ে বৃহস্পতিবার বৈঠক বসেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে। সাগরে প্রশাসনিক সফর সেরে মুখ্যমন্ত্রী এবং গোয়ায় রাজনৈতিক সফর সেরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শহরে ফেরার পরেই পুরভোট সংক্রান্ত ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। যেখানে ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, মন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাসেরা। অসুস্থ থাকায় বৈঠকে ছিলেন না তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৈঠকের পরে ফিরহাদ জানান, ‘সর্বসম্মতিক্রমেই’ চারটি পুরসভার প্রার্থী-তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। রাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী-তালিকা ঘোষণা করা হয়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকের শুরুতেই এ দিন মমতা জানান, তাঁর এক জনই প্রার্থী আছে! তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি ঘুরে আবার দলে ফিরে আসা সব্যসাচীকে বিধাননগরে ফের প্রার্থী করার প্রস্তাব দেন তিনি। দলনেত্রীর প্রস্তাব মেনে নেন তৃণমূলের নেতারা। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে গত বিধানসভা নির্বাচনে বিধাননগর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়ে তৃণমূলের সুজিতের কাছে হেরে গিয়েছিলেন সব্যসাচী। তার পর থেকেই তৃণমূলে ফিরতে আগ্রহী ছিলেন তিনি। মমতা ও অভিষেক, দু’জনের সঙ্গেই তাঁর যোগাযোগ ছিল। ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মমতার উপনির্বাচনের পরে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁকে তৃণমূলে ফেরানো হয়। তৃণমূল সূত্রের ব্যাখ্যা, পুরভোটে ফের প্রার্থী করে তাঁকে ‘স্বীকৃতি’ দেওয়া হল।
বিধাননগরের ৪১টি ওয়ার্ডে এ বার ২৭ জন নতুন প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। ডেপুটি মেয়র তাপসের মতোই প্রাক্তন ফুটবলার শৈলেন মান্নার কন্যা নীলাঞ্জনাকে আর প্রার্থী করা হয়নি। টিকিট পাননি বিদায়ী বোর্ডের অন্তত তিন জন মেয়র পারিষদ। তবে তাপসের মেয়ে আরাত্রিকা ভট্টাচার্যকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। তালিকা ঘোষণার পরে সব্যসাচী অবশ্য বলেছেন, ‘‘বিধাননগরের ৪১টি ওয়ার্ডেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী। তাঁর শুভেচ্ছা, আশীর্বাদ এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহায়তা নিয়েই সকলে লড়ব। বিধানসভায় আমি নিশ্চয়ই হেরেছিলাম। তবে সেটা ব্যক্তি আমার পরাজয় নয়, বিজেপির পরাজয় ছিল।’’
কালীঘাটের বৈঠকেই এ দিন ঠিক হয়, শিলিগুড়িতে গৌতমকে প্রার্থী করা হবে। বিধানসভা ভোটে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রে বিজেপির শিখা চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন তিনি। এ বার শিলিগুড়ি পুরসভায় প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্যকে ফের প্রার্থী করেছে সিপিএম। বিজেপিও দাঁড় করিয়েছে শিলিগুড়ির বিধায়ক এবং একদা অশোক-অনুগামী শঙ্কর ঘোষকে। এই পরিস্থিতিতে গৌতমের মতো পরিচিত মুখকে সামনে রেখেই পুর-যুদ্ধের ময়দানে নামতে চাইছে তৃণমূলও। প্রার্থী করা হয়েছে রঞ্জন সরকারকেও।
ফিরহাদ এ দিন বলেছেন, ‘‘নিজেদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি, জেতার সম্ভাবনা এবং এলাকায় দলের ভাবমূর্তি কারা অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবেন— এই বিষয়গুলি বিবেচনা করেই প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy