তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য-রাজনীতি নিয়ে কারা সংবাদমাধ্যমে কথা বলবেন, সেই তালিকা তৈরি করল তৃণমূল। তালিকায় আছে ছ’জনের নাম। সোমবার কালীঘাটে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে দলের মুখপাত্রদের নাম ঠিক করে দিয়েছিলেন দলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের অন্যতম নেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ‘এলাকাভিত্তিক’ এবং ‘বিষয়ভিত্তিক’ কয়েক জন মুখপাত্রের নাম জানিয়েছিলেন। তবে তিনি এ-ও বলেছিলেন, ‘‘পরে দলের তরফে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে।’’
মঙ্গলবার সেই তালিকায় রাজ্য-রাজনীতি নিয়ে কথা বলার ক্ষেত্রে ছ’জনকে নির্দিষ্ট করেছে তৃণমূল। তালিকায় রয়েছেন, অর্থ প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) চন্দ্রিমা, শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা, ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক, শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
বিভিন্ন বিষয়ে কারা দলের হয়ে কথা বলবেন, সোমবারের বৈঠকে মমতা তা নিজেই ঠিক করে দিয়েছিলেন। অর্থনৈতিক বিষয়ে বলার ভার দেওয়া হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং চন্দ্রিমাকে। শিল্প সংক্রান্ত বিষয়ে বলার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে শশী এবং পার্থকে। উত্তরবঙ্গ নিয়ে বলার দায়িত্ব পেয়েছেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ এবং সাংসদ প্রকাশ চিক বরাইক। চা-বাগান নিয়ে বলার দায়িত্ব শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটকের। ঝাড়গ্রাম এবং আদিবাসী বিষয়ে বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা এবং মন্ত্রী মানস ভুঁইয়াকে। উত্তরবঙ্গের আদিবাসী বিষয়ক প্রতিক্রিয়া দেওয়ার ভার দেওয়া হয়েছে আলিপুরদুয়ারের নেতা বুলুচিক বরাইককে।
টেলিভিশন চ্যানেলে তৃণমূলের হয়ে বিতর্কে যাঁরা অংশ নিতে পারবেন, সেই নামের তালিকাও চূড়ান্ত করেছে শাসক দল। রাজ্যের সার্বিক বিষয়ে যাঁরা প্রতিক্রিয়া দেবেন, তাঁরা টেলিভিশন চ্যানেলে যেতে পারবেন। তা ছাড়া আরও কিছু নাম স্থির করেছে তৃণমূল। সেই তালিকায় রয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, কলকাতার কাউন্সিলর বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী, শ্রমিক নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, দলের আইটি সেলের ইনচার্জ দেবাংশু ভট্টাচার্য, টিএমসিপির প্রাক্তন সভানেত্রী জয়া দত্ত, সন্দীপন সাহা, মৃত্যুঞ্জয় পাল, প্রদীপ্ত মুখোপাধ্যায়, তন্ময় ঘোষ, ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেন এবং প্রাক্তন বিধায়ক দীনেশ বাজাজ।
এই তালিকা নিয়েই তৃণমূলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর তৃণমূলে যোগ দিয়ে ঋতব্রত সাংগঠনিক দায়িত্ব পেলেও তাঁকে সংবাদমাধ্যমে খুব একটা দেখা যেত না। এ বার মুখপাত্রদের তালিকায় জুড়ল ‘বাগ্মী’ ঋতব্রতের নাম। একই সঙ্গে তালিকায় জয়ার নামও ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন শাসক দলের অনেকে।
উল্লেখযোগ্য ভাবে, মুখপাত্রদের তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন কলকাতার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী। একই ভাবে বাদ পড়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রথম সারির নেতা সুদীপ রাহাও। সোমবারই তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছিল, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়টি দেখবেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ঘটনাচক্রে, কাউন্সিলর অরূপ টালিগঞ্জ এলাকারই পুরপ্রতিনিধি। যে এলাকা মন্ত্রী অরূপের বিধানসভায়। টালিগঞ্জ এলাকার আর এক তরুণ তৃণমূল নেতা কোহিনুর মজুমদারের নামও বাদ পড়েছে মুখপাত্রদের তালিকা থেকে। তৃণমূল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে মুখপাত্রদের নিয়ে একটি হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপও তৈরি হয়েছে। তার নাম ‘এআইটিসি বেঙ্গল মিডিয়া প্যানেল’। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিশ্বাস অরূপদের গ্রুপে চক্রবর্তী অরূপেরা নেই। যাকে দলেরই অনেকে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সমীকরণে দেখতে চাইছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy