পানিহাটি, ঝালদা, রামপুরহাট, গলসি, মগরাহাটের ঘটনায় এই ধরনের বিড়ম্বনায় পড়েছে তৃণমূল। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, নতুন করে বিতর্কে জড়াতে চাইছে না শাসকদল। তাই অভিযুক্তদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছে শাসকদল। যে ভাবে তৃণমূল নেতৃত্বকে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগে ভাগে তাই নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে জেলা নেতৃত্ব।
হাঁসখালির ঘটনায় গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য সমর গোয়ালার ছেলের বিরুদ্ধেই অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
হাঁসখালির ঘটনার প্রেক্ষিতে কড়া অবস্থান নিল তৃণমূলের নদিয়া জেলা কমিটি। এ বিষয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কোনও মন্তব্য না করতে চাইলেও, ঘটনা প্রসঙ্গে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল জেলা তৃণমূল। নদিয়া তৃণমূলের জেলা সভাপতি কল্লোল খাঁ বলেন, ‘‘ঘটনা প্রসঙ্গে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট। প্রশাসনকে রং না দেখে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে বলেছি। সেই তদন্তে যদি অভিযুক্তর বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হয়, তাহলে আইন আইনের পথে চলবে।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘দোষ করলে দল কোনওভাবেই তাঁকে প্রশ্রয় দেবে না, তা আমরা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিতে চাইছি। কারণ দল অপরাধীদের দায় কোনও ভাবে বহন করবে না।’’
প্রসঙ্গত, নাবালিকা প্রেমিকাকে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, অত্যধিক রক্তপাতে ওই নাবালিকার মৃত্যুও হয়েছে। এমনকি রাতারাতি ওই নাবালিকার দেহ জোর করে দাহ করানোর অভিযোগও উঠেছে ওই তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে। গত সোমবার এই ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার হাঁসখালি এক নম্বর ব্লকের গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্যামনগর এলাকায়। তা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
অভিযোগ উঠছে, গাজনা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সমর গোয়ালার ছেলে ব্রজগোপালের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ, গত সোমবার ব্রজগোপালের জন্মদিনের পার্টি ছিল। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয় বগুলার বাসিন্দা ওই নাবালিকাকে। নাবালিকার পরিবারের দাবি, ওই রাতে এক জন মহিলা এবং কয়েক জনকে দিয়ে মেয়েকে ব্রজগোপালদের বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল। ১৪ বছরের ওই নাবালিকার বাড়ির লোকজনের দাবি, ব্রজগোপালের বাড়ির লোকেরা জানান, পার্টিতে মেয়েটি ‘অসুস্থ’ হয়ে পড়েছে। নাবালিকাকে স্থানীয় কোনও ‘হাতুড়ে ডাক্তার’-এর কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয় বলে দাবি নাবালিকার পরিবারের। ওই নাবালিকাকে সরকারি হাসপাতাল বা বেসরকারি কোনও হাসপাতালে নিয়ে যেতে তাঁদের ‘নিষেধ’ করা হয় বলেও অভিযোগ পরিবারের।
ওই ধর্ষণ-কাণ্ডে গ্রেফতার করা হল তৃণমূল নেতা সমর গোয়ালার ছেলে ব্রজগোপাল গোয়ালাকে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ, খুন-সহ কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলা রুজু করা হয়েছে পকসো আইনেও। ধৃত ব্রজগোপালের বিরুদ্ধে গত শনিবার হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন নির্যাতিতা নাবালিকার বাবা এবং মা। শনিবার রাতে থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই বেপাত্তা ব্রজগোপালের বাবা তৃণমূল নেতা সমর। দেখা মিলছে না তাঁর পরিবারেরও।
পানিহাটি, ঝালদা, রামপুরহাট, গলসি, মগরাহাটের ঘটনায় এই ধরনের বিড়ম্বনায় পড়েছে তৃণমূল। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছেন, নতুন করে বিতর্কে জড়াতে চাইছে না শাসকদল। তাই অভিযুক্তদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেছে শাসকদল। যে ভাবে তৃণমূল নেতৃত্বকে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে, তা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগে ভাগে তাই নিজেদের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে জেলা নেতৃত্ব।
রাজনীতির কারবারিদের মতে, শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য না করে বিষয়টির ওপর নজর রেখে চলেছে। তাই এখনও এ বিষয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও শীর্ষ নেতার বয়ান প্রকাশ্যে আসেনি। ফোনে প্রশ্ন করা হলেও, বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তৃণমূল নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy