কেশপুরে তৃণমূল প্রার্থীর প্রচারে তাঁর ৭ বছরের নাতি। —নিজস্ব চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতি করেন দু’বছর বয়স থেকে— সম্প্রতি এই কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর কেশপুরে তৃণমূলের জেলা পরিষদ প্রার্থী মহম্মদ রফিকের মিছিলে দেখা গেল তাঁর ৭ বছরের নাতি শেখ আয়ানকে। সভায় বক্তৃতা করে দাদুর হয়ে ভোটও চাইল ওই খুদে।
সোমবার কেশপুরের ছুতারগেড়্যায় প্রচার সেরেছেন রফিক। সঙ্গে ছিল দ্বিতীয় শ্রেণির ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্র আয়ান। স্থানীয় সূত্রে খবর, ছুতারগেড়্যার ওই পথসভার শুরুতেই রফিক মাইক্রোফোন বাড়িয়ে দেন নাতির দিকে। সে বলে, ‘‘হ্যালো, নমস্কার। আমার দাদু, মহম্মদ রফিক আপনাদের এলাকায় প্রার্থী হয়েছে। আপনারা জোড়াফুলে ভোট দিন। ধন্যবাদ।’’
১৯৯৮-২০০০ সালে কেশপুরে তৃণমূলের ‘রবিনহুড’ ছিলেন রফিক। সেই সময়ে দলে তাঁর জনপ্রিয়তা এতটাই ছিল যে, ২০০০ সালে কলকাতা পুরভোটে তৃণমূলের তারকা-বক্তা ছিলেন তিনি। ’৯৮ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল তৈরি করেছিলেন। ওই বছর জেলা পরিষদে তৃণমূল প্রার্থী রফিক হেরেছিলেন। দু’দশক পরে তিনি ফের পঞ্চায়েতে লড়ছেন। মাঝে বিধানসভা ভোটে লড়েছেন রফিক। ২০০১ এবং ২০০৬ সালে। গড়বেতা থেকে। পরাজিত হয়েছেন। মামলায় জড়িয়ে দীর্ঘ সময়ে জেলে ছিলেন। এক সময়ে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত হয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। পরে ফের তৃণমূলে ফেরেন।
কিন্তু ৭ বছরের নাবালককে ভোটের প্রচারে নিয়ে কি নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙছেন রফিক, সেই প্রশ্নও উঠেছে। যদিও তৃণমূলের দাবি, নির্বাচনী আচরণবিধিতে এ সম্পর্কে কিছু বলা নেই। তবে একাধিক মহল মনে করাচ্ছে, একটি জনস্বার্থ মামলার রায়ে কলকাতা হাই কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ রয়েছে, স্কুল চলাকালীন কোনও পড়ুয়াকে নিয়ে মিটিং-মিছিল করা যাবে না। জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির চেয়ারপার্সন রেখা হুই বলছেন, ‘‘কেশপুরের ঘটনা জানা নেই। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমার মনে হয়, ভোটের প্রচারে শিশুকে শামিল না করাই উচিত।’’ রফিক জানাচ্ছেন, আয়ান তার পরিবারের সঙ্গে কোচবিহারে থাকে। ছুটিতে মেদিনীপুরে এসেছে। রফিকের কথায়, ‘‘ও আমার সঙ্গে কেশপুরে যেতে চেয়েছিল। তাই নিয়ে গিয়েছিলাম। এতে আপত্তির কী আছে!’’ গর্বিত দাদু আরও জুড়ছেন, ‘‘ও দিদিকে (মমতা) খুব ভালবাসে, তৃণমূলকেও। বক্তৃতায় আমি ওর কাছে ফেল!’’
রফিকের প্রতিদ্বন্দ্বী, জেলা পরিষদের সিপিএম প্রার্থী মিনহাজুদ্দিন মল্লিকের কটাক্ষ, ‘‘অভিষেক যদি দু’বছর বয়স থেকে রাজনীতি করে, তা হলে ৭ বছরে রাজনীতি করলে দোষ কোথায়!’’ জেলা পরিষদের বিজেপি প্রার্থী ইব্রাহিম আলিরও খোঁচা, ‘‘এ সবই অনুপ্রেরণা।’’
আয়ান অবশ্য বলছে, ‘‘দাদুর সঙ্গে গ্রামে ঘুরে খুব ভাল লেগেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy