দুই পরগণায় প্রায় দেখা গিয়েছে এ রকম বিক্ষোভ।—ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এর ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন এলাকায় অবরোধ-বিক্ষোভে ‘রাজনৈতিক উস্কানি’ ছিল বলে অভিযোগ করল তৃণমূল। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী রবিবার বলেন, ‘‘বিদ্যুতের অভাবে মানুষের অসুবিধা হয়েছে ঠিকই। তবে অবরোধে যারা উস্কানি দিয়েছে, তারাই বলেছে দুর্ভোগের সময় তৃণমূলকে দেখা যায়নি।’’ রাজনৈতিক উস্কানির অভিযোগ তোলায় পাল্টা মুখ খুলেছে বিরোধীরাও। একই দিনে অন্য একটি সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আবার সরাসরি সিইএসসি-র দিকে আঙুল তুলে বলেছেন, কলকাতায় দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওই বিদ্যুৎ সংস্থা তৈরি ছিল না।
শাসক দল ও সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীরা যে প্রচার করছে, সব বিধানসভা কেন্দ্রে তার জবাব দিতে শুরু করেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী কেন্দ্র ভবানীপুরে রবিবার সেই কর্মসূচিতে দলের রাজ্য সভাপতি বক্সী ও কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম বিরোধীদের বিঁধেছেন। দুর্যোগের পরে দক্ষিণ কলকাতা ও সংলগ্ন শহরতলি অঞ্চলে তৃণমূলের কিছু জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে সাহায্য না পাওয়ার অভিযোগ ছিল। দক্ষিণ কলকাতার প্রাক্তন সাংসদ বক্সী অবশ্য সেই অভিযোগের পিছনেও ‘রাজনীতি’ আছে বলে মনে করেন। তাঁর পাশে বসেই ফিরহাদ বলেন, ‘‘বেশির ভাগ কো-অর্ডিনেটরই রাস্তায় নেমে মানুষের পাশে ছিলেন।’’
পাশের বিধানসভা কেন্দ্র রাসবিহারীর কর্মসূচিতে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে সমস্যায় অবশ্য ভিন্নমত জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেববাবু। তিনি বলেন, ‘‘গত ৮ বছরে রাজ্যে লোডশেডিং বন্ধ করে দিতে পেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই অভ্যাসে এই অবস্থায় পড়ে মানুষ যে ক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাতে কোনও অন্যায় নেই।’’ কলকাতায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিইএসসি তৈরি ছিল না বলে মন্তব্য করেন তিনি। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কাজের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কিছু জায়গায় এখনও জল জমে থাকায় খুঁটি পোঁতার কাজ করা যাচ্ছে না।’’
দক্ষিণ কলকাতার দু’টি সাংবাদিক বৈঠকেই জোড়া সঙ্কটে রাজ্যের বিরোধী দলগুলির ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রীর ‘সতর্ক ও সময়োপযোগী’ পদক্ষেপে রাজ্য এগিয়ে রয়েছে বলে দাবি করেছেন শাসক শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব। তারই প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমপান-এর ফলে আমরা কলকাতার সব চেয়ে অসফল এবং অযোগ্য মেয়রকে দেখলাম! সাত দিনের মধ্যে জল, বিদ্যুৎ চাইবেন না, এ রকম মহান বাণী ফিরহাদ হাকিম আমাদের শুনিয়েছেন। তাঁর ছবি বাঁধিয়ে রাখা উচিত!’’ দিলীপবাবুর আরও বক্তব্য, ‘‘বিপর্যয় মোকাবিলা মন্ত্রী, সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী— এঁদের মানুষ দেখতে পাবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু সকলে বিবৃতি আর বিজেপিকে গালি দিতেই ব্যস্ত!’’ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘শূন্য কলসি বাজে বেশি! প্রশাসনের ব্যর্থতা আছে বলেই মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’’ আর বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা বিচিত্র নির্দেশ এবং বিরোধীদের দোষ দিতে ব্যস্ত। কিন্তু কোনও পরিকল্পনা নেই। অফিস-দোকান-মল খুলে যাচ্ছে কিন্তু ট্রেন নেই, বাসের নিশ্চয়তা নেই। নিত্যযাত্রীরা কাজে যোগ দিতে আসবেন কী ভাবে?’’
আরও পড়ুন: নয়া ভবনেও ভাঙন বর্ধমান স্টেশনে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy