Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
CPM

CPM: বিজেমূল স্লোগান আর নয়, তৃণমূল-বিজেপি এক নয়, কাকাবাবুর জন্মদিনে নোট-নির্দেশ সিপিএমের

তৃণমূল এবং বিজেপি-কে একাসনে বসিয়ে আর আক্রমণ করা যাবে না। সিপিএমের নিচুতলার কর্মীদের কাছে সেই বার্তাই পাঠাতে চলেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট।

গ্রাফিক — শৌভিক দেবনাথ।

অমিত রায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২১ ১১:৫৩
Share: Save:

তৃণমূল এবং বিজেপি-কে একাসনে বসিয়ে আর আক্রমণ করা যাবে না। সিপিএমের নিচুতলার সংগঠনের কর্মীদের কাছে সেই বার্তাই পাঠাতে চলেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। বৃহস্পতিবার প্রয়াত সিপিএম নেতা মুজফফর আহমেদের জন্মদিন। পার্টির নেতাদের কাছে যিনি ‘কাকাবাবু’ নামে পরিচিত। ৫ অগস্ট তাঁর জন্মদিনকে যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে পালন করে রাজ্য সিপিএম। এবার কাকাবাবুর জন্মদিন উপলক্ষে সমস্ত পার্টির সদস্যকে নিয়ে শাখা ও এলাকায় পাঠচক্র অনুষ্ঠান হবে।

এই পাঠচক্রের বিষয়বস্তু নির্ধারিত হয়েছে ‘নির্বাচনোত্তর পরিস্থিতি ও আমাদের কাজ’। পাঠচক্রের আনুষ্ঠানিক বিষয়বস্তু এটি হলেও আসলে পর্যালোচনা হবে বিধানসভা ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে সংগঠনের আগামী কর্তব্য নিয়েই। সেই আলোচনার জন্য শাখা ও এলাকার কমিটিগুলির কাছে একটি নোট পাঠানো হয়েছে। আনন্দবাজার অনলাইনের হেফাজতে-থাকা সেই নোটে আলোচনার জন্য একাধিক বিষয়ের কথা বলা হয়েছে।

ওই নোটে তৃণমূল এবং বিজেপি-র ‘সমমূল্যায়ন’ নিয়ে সিপিএমের আগের তত্ত্বকেই প্রশ্নের মুখে ফেলা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘বিজেপি ও তৃণমূলের বিষয়ে পার্টির অবস্থান নিয়ে, কিছু স্লোগান নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। পার্টির কর্মসূচিগত বোঝাপড়া হল, বিজেপি আর অন্য কোনও রাজনৈতিক দলই এক নয়। কারণ, বিজেপি-কে পরিচালনা করে ফ্যাসিবাদী আরএসএস। এটাই পার্টির বোঝাপড়া। কিন্তু নির্বাচনের সময় কোথাও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজেপি আর তৃণমূল সমান।’ এর পরেই নোটের ওই অংশে লেখা হয়েছে, ‘বিজেমূল জাতীয় স্লোগান বা বক্তৃতার ব্যবহার করা বিজেপি-তৃণমূল মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ-র মতো কিছু কথা বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছে। আমাদের পার্টির কর্মসূচিগত বোঝাপড়াতেই পরিষ্কার বিজেপি আর তৃণমূল কখনওই সমান নয়।’’

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ

একইসঙ্গে ওই নোটে এমনও বলা হয়েছে যে, তৃণমূল বিভিন্ন কৌশলে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা সামাল দিতে পেরেছে। ‘দিদিকে বলো’ বা ‘দুয়ারে সরকার’-এর মতো প্রকল্পগুলির উল্লেখ করে সিপিএম তাদের নোটে বলেছে, ওই ধরনের কর্মসূচিগুলি প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতাকে সামাল দিতে সফল হয়েছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমোহিনী প্রকল্পের সুফল তৃণমূল পেয়েছে। বলা হয়েছে, ‘সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পকে ইতিবাচক হস্তক্ষেপের পরিবর্তে ছোট করে দেখা ঠিক হয়নি।’ আরও বলা হয়েছে, ‘বিজেপি-র বাংলা দখলদারির মনোভাব রাজ্যের মানুষ মেনে নেয়নি। বাঙালি অস্মিতা বিজেপি-র দখলদারিকে মেনে নেয়নি।’

‘সংযুক্ত মোর্চা’ শব্দবন্ধ নিয়েও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল বলে ওই নোটে জানিয়েছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক সুর্যকান্ত মিশ্রের সাক্ষরিত নোটে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচনের সময় সংযুক্ত মোর্চা শব্দ এলেও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, কেন আমরা ফ্রন্ট বলছি না।’ অতঃপর ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে— ‘আমাদের কাছে ফ্রন্ট মানে বামফ্রন্ট। সংযুক্ত কিষান মোর্চার নামে যদি ৫০০টির বেশি সংগঠন এক হতে পারে, তা হলে বিজেপি-তৃণমূলের বিরোধী সব শক্তিকে কেন আমরা সংযুক্ত মোর্চার নামে এক করতে পারব না। আমরা সংযুক্ত মোর্চা তুলে দিতে চাই না। আমরা চাই, আগামী সাতটি বিধানসভা উপনির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চার যারা যেখানে প্রার্থী দিয়েছিল, তারা সেখানে লড়ুক।’

তবে এ সবের মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য নিশ্চয়ই বিজেমূল তত্ত্বের অসারতার কথা উল্লেখ। আগেই সূর্য একটি ফেসবুক লাইভে সে কথা বলেছিলেন। এ বার তার দলীয় নোটেও জানিয়ে দেওয়া হল। গত কয়েক বছর ধরেই সিপিএম বা তাদের নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট প্রচার করে এসেছিল, তৃণমূল- বিজেপি’র মধ্যে অঘোষিত নির্বাচনী সমঝোতা রয়েছে। সিপিএমের এই নোটে সেই তত্ত্বকেও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, দুই দলের মধ্যে লড়াই গড়পেটা নয়। আমরা বিজেপি-র বিরুদ্ধে নির্বাচনে বলেছি, আক্রমণ করেছি। তাতে লাভবান হয়েছে তৃণমূল।’

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC CPM Political Slogan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy