Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বরকতির বিরুদ্ধে সরব টিপু সুলতান মসজিদ কর্তৃপক্ষই

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইমাম নুর-উর রহমান বরকতি যে ভাবে গাড়িতে লাল বাতি ব্যবহার করছেন, তাতে ক্ষুব্ধ টিপু সুলতান মসজিদ কর্তৃপক্ষ। শুধু লাল বাতি ব্যবহারই নয়, নানা রাজনৈতিক বিষয়ে বরকতি যে সব মন্তব্য করছেন ও ফতোয়া দিচ্ছেন, তারও দায় নিচ্ছেন না টিপু সুলতান মসজিদ কর্তৃপক্ষ।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ইমাম নুর-উর রহমান বরকতি যে ভাবে গাড়িতে লাল বাতি ব্যবহার করছেন, তাতে ক্ষুব্ধ টিপু সুলতান মসজিদ কর্তৃপক্ষ। শুধু লাল বাতি ব্যবহারই নয়, নানা রাজনৈতিক বিষয়ে বরকতি যে সব মন্তব্য করছেন ও ফতোয়া দিচ্ছেন, তারও দায় নিচ্ছেন না টিপু সুলতান মসজিদ কর্তৃপক্ষ।

ধর্মতলার মোড়ে টিপু সুলতান মসজিদটি পরিচালনা করে প্রিন্স গোলাম মহম্মদ ওয়াকফ এস্টেট। এই এস্টেটের মোতায়াল্লি আনোয়ার আলি শাহ-র সাফ কথা— লাল বাতি ব্যবহার নিয়ে বরকতি সাহেবের অনড় মনোভাব আদতে টিপু সুলতান মসজিদের সম্মানকেই ক্ষুণ্ণ করছে। টিপু সুলতানের ছোট ছেলে প্রিন্স গোলাম মহম্মদের বংশধর এই আনোয়ার আলি শাহ। তিনি বলেন, ‘‘এস্টেট পরিচালন সমিতি ১৯৮৯ সালে বরকতি সাহেবকে টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম নিযুক্ত করে। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহার করে দিনের পর দিন মসজিদের মধ্যে নানা অনৈতিক কাজ করে চলেছেন বরকতি।’’ তাঁর কথায়, বরকতির এ-হেন আচরণ গোটা দেশের কাছে এই মসজিদের ভাবমূর্তি ধুলোয় মিশিয়েছে। আনোয়ারের অভিযোগ, ‘‘মসজিদ চত্বরের মধ্যে তাঁর জন্য একটি ঘর বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু ওই ঘরটি তিনি একটি রাজনৈতিক দলের দফতরে পরিণত করেছেন।’’ মোতোয়াল্লি জানান, চলতি বছরের গোড়াতেই প্রথমে শো-কজ করার পরে বরকতিকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় এস্টেট কমিটি। আনোয়ার বলেন, ‘‘কিন্তু বহিষ্কারের চিঠি পেয়েও গায়ের জোরে মসজিদে রয়েছেন বরকতি।’’

বুধবার বরকতি দাবি করেছিলেন, ‘‘আমার বাবা ৫০ বছর টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম ছিলেন। তিনি বরাবর গাড়িতে লাল বাতি ব্যবহার করেছেন। সেই প্রথা মেনে চলছি।’’ এ প্রসঙ্গে মোতায়াল্লি আনোয়ার আলি শাহ বলেন, ‘‘বরকতি সাহেব অসত্য বলেছেন। তাঁর বাবা কখনওই কোনও গাড়িতে মসজিদে আসতেন না। তা ছাড়া টিপু সুলতান মসজিদ বরকতি সাহেবের পৈতৃক সম্পত্তিও নয়।’’ লাল বাতি ব্যবহার নিয়ে বরকতির যুক্তি ছিল, ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশে বংশানুক্রমে লাল বাতি ব্যবহার করছেন তাঁরা। আনোয়ারের বক্তব্য, ‘‘একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময়ে বরকতি আদালতে এই দাবি করেছিলেন। কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের এ ধরনের কোনও নির্দেশ তিনি দেখাতে পারেননি।’’ মোতোয়াল্লি জানান, সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১২-তে হাইকোর্টের তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি পুলিশকে নির্দেশ দেন বরকতির গাড়ি থেকে লাল বাতি খুলে নিতে। শুধু লাল বাতি ব্যবহারই নয়, বরকতির নানা বিতর্কিত ফতোয়ার কারণে রাজ্য তথা দেশে সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন এস্টেটের কো-ট্রাস্টি, টিপু পরিবারের আর এক সদস্য শাহিদ আলম। শাহিদ সাহেবের কথায়, ‘‘সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছেন বরকতি। টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম হিসাবে তাঁর এই ধরনের মন্তব্য করা চরম অপরাধ। ওঁর জন্যই রাজ্যে বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সুসম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে।’’ মোতোয়াল্লি আনোয়ার আলি শাহ বলেন, ‘‘আমরা চাই, বরকতির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা নিন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE