আদালতে জেলে পাঠানোর আবেদন চাকরিচ্যুতদের। — ফাইল ছবি।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন ৮৪২ জন গ্রুপ সি কর্মী। এ বার তাঁদের জেলে পাঠানোর আবেদন জানালেন তাঁরা নিজেরাই। বললেন, ‘‘মন্ত্রী-আধিকারিকেরা জেলে রয়েছেন। আমাদেরও জেলে পাঠিয়ে দিন। ওখানে অন্তত খাবার দেয়, তা পাব।’’
মঙ্গলবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানিতে চাকরিহারা গ্ৰুপ সি কর্মীদের আইনজীবী বলেন, ‘‘দুর্নীতির মন্ত্রী তো জেলে! শিক্ষা দফতরের অনেক আধিকারিকও জেলে। আমাদেরও ওখানে পাঠিয়ে দিন। ওখানে খাবার দেয়, উপোস করে তো থাকতে হবে না।’’
চাকরিচ্যুত গ্ৰুপ সি কর্মীদের বক্তব্য, সিবিআইয়ের উদ্ধার করা উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এই ওএমআর শিটগুলির সত্যতা যাচাই করা হয়নি। তাই আদালতে দাখিল করা ওএমআর শিট যে আমাদেরই, তা নিশ্চিত করল কে? তাঁদের দাবি, বিভিন্ন সফ্টঅয়্যার ব্যবহার করে এখন অনেক নথি বিকৃত করা হয়। চাকরিচ্যুতরা বলেন, ‘‘আমাদের ক্ষেত্রে যে তেমনটা হয়নি সেটা কেন নিশ্চিত করা হচ্ছে না? ওই ওএমআর সিট নাইসার অফিস না কি, এক প্রাক্তন কর্মীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হল তা-ও পরিষ্কার নয়! ফলে ওএমআর শিটগুলির সত্যতা কে মূল্যায়ন করল?’’
শুনানিতে হালকা মেজাজে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের মন্তব্য, ‘‘এই মামলার নথির যা ওজন তাতে দেহের উপরের অংশের জন্য আলাদা করে কোনও ব্যায়াম করতে হবে না। বাইসেপ-ট্রাইসেপ, কাঁধের ব্যায়াম এমনিতেই হয়ে যাবে। আবার একটু হাঁটাহাঁটি করলে পায়ের ব্যায়ামটা হয়ে যাবে।’’
মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সওয়াল, এই ডিভিশন বেঞ্চই জানিয়েছিল এটা একটা দুর্নীতি। অথচ আদালতের এই নির্দেশকে কোথাও চ্যালেঞ্জ জানানো হয়নি। আদালতের চাপে সব তথ্য বাইরে আসছে।
এর পরেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের উদ্দেশে বিচারপতি তালুকদারের প্রশ্ন, ‘‘বলা হচ্ছে যে ফরম্যাটে (জেপিজি ফরম্যাট) আপনারা ওএমআর শিট প্রকাশ করেছেন তা বিকৃত করা সম্ভব। সিবিআইয়ের দেওয়া তথ্য আপনারা কিসের ভিত্তিতে গ্রহণ করলেন?’’
এসএসসি-র আইনজীবী সওয়াল করেন, ‘‘নথি বিকৃত করা সম্ভব, এটা ঠিক। কিন্ত প্রশ্ন হল, এ ক্ষেত্রে সেটা করা হয়েছে কি না? সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো সিবিআই আমাদের যে নথি দিয়েছে তা খতিয়ে দেখে তার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যা ভুল আগে হয়েছে তা আমরা সংশোধন করার চেষ্টা করছি।’’ এই মামলায় সিবিআইয়ের বক্তব্যও শুনতে চায় আদালত। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এই সংস্থাকে মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে চাকরি যায় ৮৪২ জন গ্ৰুপ সি কর্মীর। সিঙ্গল বেঞ্চের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে চাকরিহারাদের একাংশ ডিভিশন বেঞ্চে যান। সেখানেই এ দিন তাঁদের জেলে পাঠানোর আবেদন জানানো হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy