Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু, সাহায্যে কি কুলোবে    

দেবস্মিতার বয়স এখন চার বছর। গত চার বছর ধরে তাকে বাঁচানোর জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন বাবা নির্মল দত্ত ও মা সুস্মিতা।

দেবস্মিতা দত্ত

দেবস্মিতা দত্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৩
Share: Save:

চার মাসের মেয়ে দেবস্মিতাকে স্নানের আগে তেল মাখাতে গিয়ে মায়ের মনে হয়েছিল, মেয়েটার চেহারাটা খুব ফ্যাকাসে লাগছে। কেমন যেন নিস্তেজ। স্থানীয় চিকিৎসক জানান, রক্তের কোনও জটিল অসুখে ভুগছে ওই মেয়ে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখালে, তিনি হাড়ের মজ্জা পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, ‘পিওর রেড সেল আলফাসিয়া’ নামে বিরল রোগে ভুগছে সে। শরীরে রক্ত তৈরি হচ্ছে না একরত্তি মেয়েটার।

দেবস্মিতার বয়স এখন চার বছর। গত চার বছর ধরে তাকে বাঁচানোর জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন বাবা নির্মল দত্ত ও মা সুস্মিতা। মাসে এক বার রক্ত দিতে হয় দেবস্মিতাকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মেয়ের বয়স যত বাড়বে, তখন মাসে হয়তো দু’-তিন বার রক্ত দিতে হতে পারে। খরচও বাড়বে।

পুরুলিয়ার বাসিন্দা নির্মলবাবু ঝড়িয়ার এক সোনার দোকানের কারিগর। বললেন, ‘‘গত চার বছরে জামশেদপুর, কলকাতা, ভেলোর— সব জায়গায় গিয়েছি। ভেলোরের মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের চিকিৎসকরা বলেছেন, নিকটাত্মীয় কারও স্টেম সেল মিলছে না দেবস্মিতার সঙ্গে। অনেক খোঁজার পরে জার্মানির এক মহিলাকে পাওয়া গিয়েছে। তাঁর স্টেম সেল এনে ট্রান্সপ্লানটেশনের খরচ ৩৫ লক্ষ টাকা।’’ কলকাতার হেমাটোলজিস্ট প্রান্তর চক্রবর্তী বললেন, “মেয়েটির কোনও ভাইবোন থাকলে, তার স্টেম সেল নিলে এত খরচ হত না। এ ক্ষেত্রে তা জার্মানি থেকে আনতে হচ্ছে বলেই এত খরচ পড়ছে।”

নির্মলবাবু বলেন, “আমার নিজের বাড়ি পুরুলিয়ায় হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করে মুখ্যমন্ত্রীর তহবিল থেকে ১ লক্ষ টাকা ও নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন করে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ৩ লক্ষ টাকা পেয়েছি। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও কিছু টাকা দিয়েছে। মেয়ের জন্য বাকি টাকা কোথা থেকে জোগাড় হবে, কিছুই বুঝতে পারছি না।”

চার বছরের মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়েছে ঝড়িয়া। ঝড়িয়ার এক শিক্ষক পিনাকী রায় বলেন, ‘‘পুরো ঝড়িয়া দেবস্মিতার পাশে দাঁড়িয়েছে। যতটা সম্ভব মানুষের কাছে পৌঁছে টাকা তোলার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া রাঁচী, ধানবাদের মতো ঝাড়খণ্ডের অন্যান্য বড় শহরেও মানুষের কাছে সাহায্য চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাতেও কি কুলোবে? জানেন না নির্মল। বলেন, “সোনার দোকানে কারিগরের কাজ করি। ওটাই একমাত্র উপার্জন। কাজেও যাওয়া হয় না ঠিক মতো।”

অন্য বিষয়গুলি:

Health Blood Rare Disease Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy