সুশান্তকুমার ঘোষ এবং খোন্দেকার হাসনু আলম (ডান দিকে)।
এক জন লকডাউনেও ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া ছাড়তে দেননি। আর এক জন অভাবে লেখাপড়া যাতে ছেড়ে না যায়, সে চেষ্টায় ২৫ বছর বিনা পারিশ্রমিকে পড়াচ্ছেন। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম ও কেতুগ্রামের দুই শিক্ষক বনস্পতির ছায়া দিচ্ছেন বহু প্রান্তিক পড়ুয়াকে।
আউশগ্রাম ১ ব্লকের গলিগ্রাম হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষক সুশান্তকুমার ঘোষ লকডাউন-পর্বে সপ্তাহে-সপ্তাহে গ্রামে-গ্রামে স্কুলের স্মার্টফোন না থাকা পড়ুয়াদের বাড়ি গিয়ে পড়া বুঝিয়ে এসেছেন। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিয়েছেন। উত্তরপত্র নিয়ে এসেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার চেষ্টায় এক জনও যদি পড়াশোনাটা ধরে রাখতে পারে, বুঝব পরিশ্রম সার্থক।’’ সুশান্তবাবুর বাড়ি গুসকরা শহরে। দশ কিলোমিটার দূরের স্কুলে যেতে ১৯ বছর ধরে রোজই কয়েকটা গ্রাম পেরোতেন তিনি। তবে সব চিনতেন না। জুন থেকে মোটরবাইক নিয়ে গলিগ্রাম, গঙ্গারাম, হামিরগ্রাম, শীতলগ্রাম, দেবগ্রামের একাধিক পড়ুয়ার বাড়িতে গিয়েছেন তিনি। ববিতা মণ্ডল, সুস্মিতা মণ্ডলদের কথায়, “স্যর আমাদের বুঝিয়েছেন, এখন ভাল করে না পড়লে, সারা জীবন খেসারত দিতে হবে।’’
চাকরি পাওয়ার আগে থেকে স্কুল শিক্ষকদের টাকার বিনিময়ে টিউশন করার বিরোধী কেতুগ্রামের সিরুন্দির খোন্দেকার হাসনু আলম। কোমরপুর গোকুলচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সঙ্গেই সকাল-সন্ধ্যায় জনা কুড়ি দুঃস্থ পড়ুয়াকে বিনা পারিশ্রমিকে পড়ান তিনি। জানালেন, অভাবের কারণে বহু পরিবারের ছেলেমেয়েরাই স্কুলের সঙ্গে তাল মেলাতে পারে না। তাদের সাহায্য করার ইচ্ছে থেকেই শুরু হয় পড়ানো। সুমাইয়া খাতুন, তানিয়া খাতুনেরা বলে, ‘‘স্যর না থাকলে লেখাপড়া চালাতে পারতাম না।’’ শিক্ষক বলেন, ‘‘যত দিন পারব, এ ভাবেই পড়াব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy