নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। (বাঁ দিক থেকে)। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভা ভোটের বছর ২০২৪ শুরু হতে না হতেই রাজ্য বিজেপি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি তৈরি করে ফেলেছে। কিন্তু তাতে আসল পদটিই ফাঁকা! কেন? এই প্রশ্নই আপাতত ঘুরপাক খাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে।
মঙ্গলবার নিউ টাউনের একটি হোটেলে দিনভর বৈঠক হয়েছে রাজ্য বিজেপির। সেখানেই আগে থেকে তৈরি করা নির্বাচন পরিচালন কমিটি ঘোষণা করা হয়। জানানো হয়, এ বার সর্বশক্তি দিয়ে নির্বাচন লড়ার জন্য কমিটির আয়তন বড় করা হয়েছে। মোট ১০১ জন সদস্য থাকছেন। তাঁদের নিয়ে তৈরি হচ্ছে ৩৫টি বিভাগ। সেই সব বিভাগের প্রধানদের নামও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানদেরও ‘প্রধান’ কে হবেন তা জানা নেই। বৈঠকে উপস্থিত শীর্ষ নেতৃত্ব যে মুদ্রিত কমিটি তৈরি করেছেন, তার প্রথম কলমটিই ফাঁকা।
আনন্দবাজার অনলাইনের হাতে সেই তালিকা আসার পরে দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত চার কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডে, অমিত মালব্য এবং আশা লাকড়ার নাম রয়েছে সবার উপরে। এর পরে পাঁচ সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো, অগ্নিমিত্রা পাল, দীপক বর্মন এবং জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। মোট ১৩ জনের তালিকায় রয়েছেন দুই সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী এবং সতীশ ধন্দ।
এর সঙ্গে একটি তালিকা করা হয়েছে, যার নামই দেওয়া হয়েছে ‘রাজ্য নির্বাচন পরিচালন কমিটি’। বিজেপি ঠিক করেছে, আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই তালিকা এখনই প্রকাশ করা হবে না। সেই তালিকায় প্রথম ঘরটি ফাঁকা রয়েছে। তার পরে অবশ্য প্রতিটি বিভাগ ধরে ধরে প্রমুখের নাম, পদ এবং ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে।
এখন যে তালিকা, তাতে সবার উপরে নাম রয়েছে কার্যালয় সম্পাদক প্রণয় রায়ের। এর পরে প্রচার পরিকল্পনা থেকে বুথ স্তরে সংগঠন পরিকল্পনা বা বিস্তারক যোজনা-সহ বিভিন্ন বিভাগ রয়েছে। কিন্তু কোনও ভাবেই প্রণয় নির্বাচন কমিটির প্রধান নন। তিনি দফতর সামলালেও বিজেপির রীতি অনুযায়ী কমিটির মাথায় এক জন চেয়ারম্যান থাকেন। কিন্তু সেই পদটাই আপাতত শূন্য। এর কারণ নিয়ে প্রশ্নে প্রকাশ্যে কোনও উত্তর দিচ্ছেন না রাজ্য নেতারা। কারণ, প্রাথমিক ভাবে এমন তালিকার কথা প্রকাশই করতে চায় না রাজ্য বিজেপি। তবে এক রাজ্য নেতার একান্ত বক্তব্য, ‘‘চেয়ারম্যান কে হবেন, সেটা বড় বিষয় নয়। দল তৈরি হয়ে গিয়েছে ভোটে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। বিজেপির সংবিধান অনুয়ায়ী রাজ্য সভাপতিই সবার উপরে। তিনিই হয়তো চেয়ারম্যান হবেন। আর সুকান্তদার সঙ্গে দলের প্রচারে কাণ্ডারী হিসাবে থাকবেন শুভেন্দুদা। মানুষ তো চেয়ারম্যান নয়, ভোট দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখ দেখে।’’
বিজেপি সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, রাজ্যের পাঁচ সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে এক জনকে কমিটির চেয়ারম্যান করা হবে। যদিও সেই পাঁচ জনের মধ্যে একমাত্র লকেটকে একটি বিভাগের ‘প্রমুখ’ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন এমন ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য রাজ্য বিজেপি একটি ‘লাভার্থী সম্পর্ক’ বিভাগ তৈরি করেছে। তার প্রমুখ হয়েছেন লকেট। তবে লকেট যে হেতু হুগলির সাংসদ এবং আসন্ন ভোটেও তাঁর লড়াই করার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই তিনি চেয়ারম্যান হলে তা বিস্ময়কর হবে। বাকি চার জন্যের মধ্যে জ্যোতির্ময় পুরুলিয়ার সাংসদ, অগ্নিমিত্রা এবং দীপক বিধায়ক। এক মাত্র জগন্নাথ জনপ্রতিনিধি নন। তাই তাঁকে চেয়ারম্যান করার সম্ভাবনাই বেশি ছিল। রাজ্য বিজেপিতে জগন্নাথই ওই পদের জন্য যোগ্য বলে মনে করেন দলের অনেকেই। ইদানীং দলের সব বিষয়েই নীতি ও সিদ্ধান্ত নির্ধারণের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেন তিনি। পর পর বেশ কয়েকটি কর্মসূচির দায়িত্ব নিয়ে তিনি ভাল কাজ করেছেন বলেও মনে করেন রাজ্য নেতারা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও জগন্নাথের উপর ‘প্রসন্ন’ বলে শোনা যায়।
মঙ্গলবারের বৈঠকে অবশ্য জগন্নাথ ছিলেন না। দলের তরফে জানানো হয়, রাজনৈতিক কারণেই তিনি পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে কলকাতার বাইরে ছিলেন। বিজেপির অন্দরে জল্পনা তৈরি হয়েছে, জগন্নাথ বৈঠকে না থাকার জন্যই কি চেয়ারম্যান পদটি খালি রাখা হয়েছে? না কি অন্য কোনও কারণ? নতুন কোনও নাম নিয়ে কি ভাবনাচিন্তা চলছে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy