Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Justice Rajasekhar Mantha

বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘যথার্থ’, তবে বিক্ষোভের পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি তৃণমূলের একাংশের

মান্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভের যে চেহারা সামনে এসেছে তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত শাসক দলের অনেকে। পরিস্থিতির গভীরতা বিচার করে তারা মনে করছেন, বিক্ষোভের এই পথ অবাঞ্ছিত।

বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভের যে চেহারা সামনে এসেছে তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত শাসক দলের অনেকে।

বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভের যে চেহারা সামনে এসেছে তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত শাসক দলের অনেকে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৮
Share: Save:

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে যে ‘অভিযান’ করা হল তা থেকে দূরে থাকতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে হাই কোর্টের বিক্ষোভে শাসকদলের সমর্থক-আইনজীবীদের বিক্ষোভে সেই কাজ যথেষ্ট কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যে প্রশ্নে বিচারপতি সম্পর্কে অভিযোগ তোলা হয়েছে তাকে ‘যথার্থ’ মনে করলেও বিক্ষোভের পথ ও পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি রয়েছে শাসক দলের একাংশের মধ্যেই। এই ঘটনায় রাজ্যে আইনের শাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।

বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে শাসক- রাজনীতিকদের বিরোধ নতুন কিছু নয়। বেশ কিছু মামলার সূত্রেই এ রাজ্যে তা সংঘাতের চেহারা নিয়েছে। বিচারপতি মান্থার বাড়ির কাছে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার লাগানো এবং হাই কোর্টের মধ্যে আইনজীবীদের বিক্ষোভ সেই সংঘাতে একেবারে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে। সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক বার জনসভায় দাঁড়িয়েই বিচারপতিদের একাংশের কাজকর্ম নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তবে মান্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্ষোভের যে চেহারা সামনে এসেছে তা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত শাসক দলের অনেকে। পরিস্থিতির গভীরতা বিচার করে তারা মনে করছেন, বিক্ষোভের এই পথ অবাঞ্ছিত। রাজ্য বিধানসভার স্পিকার তথা প্রবীণ আইনজীবী বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘বিচারপতির রায় সম্পর্কে অসন্তোষ থাকতে পারে। তবে তা প্রকাশের পথ (পোস্টার বা এজলাসে) এটা তৈরি হতে পারে না।’’

তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা অবশ্য বিচারপতির বাড়ির কাছে পোস্টার লাগানোর সঙ্গে দলের সম্পর্ক অস্বীকার করেছে। ঘটনার পরই দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়ে দেন, ওই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত নয়। তবে হাই কোর্টে শাসক ঘনিষ্ঠ আইনজীবীদের বিক্ষোভ নিয়ে দলের তরফে তেমন কিছুও বলা হয়নি। এই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরে শাসক শিবিরের কেউ প্রকাশ্যে তার নিন্দাও করেননি। তাই প্রশ্ন উঠেছে তাদের মনোভাব নিয়েও। তৃণমূলের আর এক আইনজীবী নেতা অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘বিচারপতিদের সাম্প্রতিক কিছু রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ অবশ্যই রয়েছে। এবং তা তোলার অধিকারও রয়েছে। কিন্তু এ ভাবে বাড়িতে বা কোর্টে বিক্ষোভ দেখানো একেবারেই কাম্য নয়।’’ দলের আর এক আইনজীবী নেতার আশঙ্কা, ‘‘এর ফলে সামগ্রিক ভাবে বিচারপতিদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হওয়াও অসম্ভব নয়।’’

এই ঘটনার নিন্দা করে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আদালতের রায় পছন্দ না হতে পারে। কিন্তু তার জন্য বিচারপতির প্রতি এই আচরণ করা যায় নাকি! এতে তো রাজ্যে আইনের শাসন নিয়েই প্রশ্ন উঠে যায়।’’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর বলেন, ‘‘পুলিশ-প্রশাসনকে আগেই দখল করেছে তৃণমূল। এ বার তারা বলতে চাইছে, বিচারপতিও কিছু বলতে পারবেন না! সংবিধান ধ্বংসের দিকে এগোচ্ছে এরা। যা হচ্ছে, তাতে বাংলার মাথা আরও হেঁট হয়ে যাচ্ছে।’’

হাই কোর্টে বিশৃঙ্খলার প্রতিবাদে এ দিন কংগ্রেসের আইনজীবী সেল-এর সদস্যরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কর্মসূচিতে ছিলেন কৌস্তভ বাগচী, উর্বশী ভট্টাচার্যরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Justice Rajasekhar Mantha Calcutta High Court TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy