১৯টি রুটে সরকারি বাস চালানোর দায়িত্বে বেসরকারি সংস্থা। ফাইল চিত্র।
অলাভজনক বেশ কিছু বাস রুটকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল পরিবহণ দফতর। সূত্রের খবর, কলকাতা ট্রাম কোম্পানি এবং পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম (ডব্লিউবিটিসি)-এর মোট ১৯টি রুটের ৪০টি সরকারি বাস এর জন্য বাছাই করা হয়েছে। বাসরুটগুলির বেসরকারিকরণে টেন্ডার ডাকা হয়েছিল পরিবহণ দফতরের তরফে। এই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় ৮টি সংস্থা দরপত্র জমা দিয়েছে। দরপত্র খতিয়ে দেখার পর ওই সংস্থাগুলিকে বাস চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে। সম্প্রতি সরকারি বাস বেসরকারি পরিচালনায় চালানোর বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী।
তবে বাস চালানোর ক্ষেত্রে এই সংস্থাগুলির উপর বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে পরিবহণ দফতর। সেই শর্তে বলা হয়েছে, বাস চালানোর যাবতীয় খরচ বহন করতে হবে বেসরকারি সংস্থাকেই। যেমন, বাসের ড্রাইভার, কন্ডাক্টর, তেল, রক্ষণাবেক্ষণের সমস্ত খরচ দেবে বেসরকারি সংস্থা। বাস রাখতে হবে সরকারি গ্যারেজেই। শুধুমাত্র বাস চালানোর সময়ই তারা বাস ডিপোর বাইরে নিয়ে যেতে পারবে। সকালে ডিপো থেকে নিয়ে গিয়ে রাতে আবার ডিপোতেই বাসটিকে রেখে আসতে হবে। সঙ্গে প্রতি মাসে পরিবহণ দফতরের কাছে একটি সুনির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বেসরকারি সংস্থাকে জমা করতে হবে। রুটে যাত্রীসংখ্যা বিচার করে মাসে ছয় থেকে ১৫ হাজার টাকা জমা দিতে হবে।
বেসরকারি বাস নিজেদের মর্জিমাফিক ভাড়া নিলেও, সরকারি বাস এখনও পুরনো ভাড়াতেই বাস চালাচ্ছে। তাই সরকারের ঠিক করে দেওয়া হারেই ভাড়া নিতে হবে বেসরকারি সংস্থাকেও। পাশাপাশি, মাসে ৩০ দিনের মধ্যে অন্তত ২৬ দিন বাস রাস্তায় নামাতে হবে। যদি বাস রাস্তায় না নামানো হয়, তা হলে প্রতি বাসে দিনপিছু ৫০০ টাকা করে জরিমানাও দিতে হবে। সরকারি বাস হস্তান্তরের আগে লাইসেন্স ফি বাবদ ৩০ হাজার টাকা জমা দিতে হবে বেসরকারি সংস্থাকে।
প্রায় সব ক্ষেত্রেই বেসরকারি বাসমালিকরা এই বাস চালানোর দায়িত্ব নিয়েছেন বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর। তবে সরকারি বাস চালানোর ক্ষেত্রে তাঁরা মৌখিক ভাবে বাস চালানোর জন্য বেশ কিছু দাবি জানিয়েছিলেন পরিবহণ দফতরের কাছে। বাসমালিকদের দাবি ছিল, দীর্ঘ দিন ভাড়া বৃদ্ধি না হওয়ায় টিকিট খাতে আয় তলানিতে এসে ঠেকেছে, যার জেরে বহু রুটে বাস চালিয়ে রীতিমতো লোকসান হচ্ছে সরকারের। তাই কলকাতার রাস্তা থেকে সরকারি বাস ক্রমশ উধাও হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। এমন পরিস্থিতিতে যে রুটে সংশ্লিষ্ট বাসগুলি চালাতে বেসরকারি মালিকরা সম্মত হয়েছেন, সেখানে আর যেন সরকারি বাস না চালানো হয়। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেসরকারি সংস্থাগুলির এই দাবি মেনে নিতে চলেছেন আধিকারিকরা।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, চলতি অর্থবর্ষের ৫ মাস কেটে গেলেও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি অর্থ দফতর। সেই অর্থের অভাবে সরকারি ডিপোতে থাকা বহু বাস নিয়মিত তেল না পাওয়া যাওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে বসে রয়েছে। এ ছাড়াও ডব্লিউবিটিসি-র একাধিক ডিপোতে আড়াইশোর বেশি বাস অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বেসরকারি সংস্থার হাতে বাস চালানোর দায়িত্ব তুলে দিয়ে বাসগুলিকে ফের পথে নামানোই পরিবহণ দফতরের লক্ষ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy