Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
The Telegraph School Awards for Excellence 2020

করোনাকালেও উজ্জ্বল হার না-মানা বীরগাথা

দ্য টেলিগ্রাফ এডুকেশন ফাউন্ডেশন-এর আয়োজনে এই পুরস্কার-আসর স্কুল বা ছাত্রদের সব ধরনের ভূমিকাই খেয়াল রাখে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২০ ০৬:০৬
Share: Save:

অতিমারির জেরে জীবন হয়তো থমকে গিয়েছে কিছুটা। তবে স্বপ্নেরা হার মানেনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ‘দ্য টেলিগ্রাফ স্কুল উৎকর্ষ পুরস্কার’-এর ভার্চুয়াল আসর সেটাই বুঝিয়ে দিল।

বরং দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া দশাতেই খেই মেলে নতুন পথের। বাধা-বিপত্তির বছর ২০২০তেই সিকি শতক পারও করে ফেলল স্কুলস্তরের রংবেরঙের পড়ুয়া, অভিভাবক, শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীদের স্বীকৃতির এই ছক-ভাঙা পুরস্কার আসর। ভার্চুয়াল পরিসরের প্রথম উদযাপনেও তা ছাপ রেখে গেল। সাধারণত দু’টি সংস্করণে বছরবছর দেখা যায় এই অনুষ্ঠান। প্রাথমিক পর্বেই ভিড় থাকে বেশি। আর চূড়ান্ত পর্বে সব থেকে চিত্তাকর্ষক কাহিনির শৃঙ্গজয়ীদের কুর্নিশ জানাতে ভরে ওঠে সায়েন্স সিটি-র প্রেক্ষাগৃহ।

এ বার পুরস্কার আসরের গোড়ার পর্বে বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের হাততালি-উচ্ছ্বাস ছিল না। সশরীরে ছিলেন না বিশিষ্ট অতিথিরা। আবেগ-ভরা আবহসঙ্গীতও নেই। তবে স্বীকৃতি ছিনিয়ে নেওয়া বাধা-বিপত্তি জয়ের গল্পগুলো একই রকম রেখাপাত করে গেল। জীবনে বিপর্যয় বা সঙ্কট তো আগাম দিনক্ষণ ঘোষণা করে আসে না। কিন্তু কেউ কেউ পারেন, হঠাৎ মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লেও ঘাড় সোজা রাখতে। হেরিটেজ স্কুলের প্রণয় মিত্তল যেমন এ বার আইএসসি-র অর্থনীতির পেপার লিখতে বসে ধানবাদে পিতৃবিয়োগের খবর পেয়েও মাথা ঠান্ডা রেখেছিলেন। পরীক্ষা দিয়ে ৪০০ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরে মায়ের পাশে থেকেছেন। আবার গাড়ি চালিয়েই কলকাতায় এসে পরের পরীক্ষা দিয়ে ফিরে গিয়েছেন। ৯৫ শতাংশ নম্বরও তাঁর হস্তগত। পরীক্ষার মুখে বাবার অসুস্থতার খবর পাওয়া কোমল পিল্লাইয়ের পরিস্থিতিও প্রায় এক রকম। হঠাৎ পক্ষাঘাতে চলৎশক্তি হারানো প্রিয়ঙ্কা ভঞ্জ চৌধুরী বা ফুসফুসের জটিলতায় রক্তবমি করার ফাঁকেও বোর্ডের পরীক্ষায় অবিচল শুভঙ্কর দাসের গল্পও এ দিন শোনা গিয়েছে। একলা মায়ের সন্তান, ভানুপ্রতাপ সিংহ বা অকালে পিতৃহারা প্রসেন্দু চৌধুরীও পেয়েছেন সাহসিকতার বৃত্তি পুরস্কার।

এমন বেশ কয়েক জন বাহাদুর পড়ুয়ার গল্প এ দিন মর্মস্পর্শী ভঙ্গিতে শুনিয়েছেন সঞ্চালক ব্যারি ও’ব্রায়েন। উজান-ঠেলা বিজয়ীদের দেখা না-গেলেও তাঁদের উদ্দীপনার উত্তাপের স্পর্শ ঠিকই পাওয়া গিয়েছে।

অর্ধশতক ধরে ক্লাস নেওয়া জন মজুমদার, শর্মিলা মজুমদার বা ৩০-৪০ বছর ধরে ছাত্রদের মানুষ করায় অক্লান্ত ভারতী মুখোপাধ্যায়, লক্ষ্মী ডি’মেলো, মনোজ ঘোষ, স্মৃতিকণা দত্ত, সুমিতা বসু, সুমিতা সেনগুপ্ত, তপতী রায়, স্বপ্না সেনদের মতে শিক্ষকদের গল্পও শুনিয়েছে পুরস্কারের আসর। অভিরূপ ভদ্র স্মৃতি ‘থ্যাংক ইউ বাবা মা’ পুরস্কারে এ বার একাধিক একলা মায়ের লড়াইও স্বীকৃতি পেয়েছে। সম্মাননার প্রাপক বিভিন্ন স্কুলের অশিক্ষক কর্মচারীরাও।

দ্য টেলিগ্রাফ এডুকেশন ফাউন্ডেশন-এর আয়োজনে এই পুরস্কার-আসর স্কুল বা ছাত্রদের সব ধরনের ভূমিকাই খেয়াল রাখে। নামজাদা স্কুলগুলির পাশে পিছিয়ে থাকা পড়ুয়াদের জন্য সহৃদয় স্কুল, পরিবেশরক্ষায় সক্রিয় স্কুলও স্বীকৃতি পায়। ছাত্রদের মধ্যে পড়াশোনা, গানবাজনা, খেলাধুলো বা কোনও বিশেষ প্রতিভাকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ দিন বিভিন্ন গোত্রের স্কুল, পড়ুয়াদের শংসাপত্র দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে। তবে সেরার স্বীকৃতি বাকি। শনিবার, বেলা ১১টায় দ্য টেলিগ্রাফ স্কুল পুরস্কারের চূড়ান্ত পর্বে হবে সেই ঘোষণা।

মূল পর্বের পুরস্কার আসরটি সে-দিন ‘দ্য টেলিগ্রাফ এডুকেশন ফাউন্ডেশন’-এর ফেসবুক পেজ এবং ইউ টিউব চ্যানেল আর টিটিআইএস-এর ফেসবুক পেজেও দেখা যাবে। এ বার নেটমাধ্যমের দর্শক সংখ্যা হলের ভিড়ের দ্বিগুণেরও বেশি। অপরাজেয় বীরগাথা যে কোনও পরিস্থিতিতেই ছড়িয়ে পড়ে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy