ছবি পিটিআই।
রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে বিশেষ ট্রেন ঢোকা শুরু হওয়ার পর থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে, দাবি করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে দীর্ঘ চাপানউতোরও চলে রাজ্যের। কিন্তু জেলায় জেলায় নজর দিলে দেখা যাচ্ছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার সময় থেকেই ঊর্ধ্বমুখী হয় রাজ্যে করোনা সংক্রমণের লেখচিত্র। জেলা প্রশাসনগুলির তরফে তথ্য দিয়ে বিষয়টি দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি বলা হচ্ছে, শ্রমিকের ঘরে ফেরা কমে যেতে বা বন্ধ হতেই সংক্রমণের হার কমতে শুরু করে। ফলে সম্প্রতি বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে যাওয়া মানুষের সংখ্যা আক্রান্তের সংখ্যার খুব কাছাকাছি। গোটা রাজ্যে ‘অ্যাক্টিভ’ রোগীর সংখ্যাও এখন পাঁচ হাজারের কম।
বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, প্রথমে পরীক্ষা কম হচ্ছিল বলে আক্রান্তের সংখ্যাও ছিল কম। পরে পরীক্ষা বাড়তেই রোগীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যায়। তাদের আরও দাবি, এখন উপসর্গহীন হলে পরীক্ষা না করার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাতেই কিন্তু সংক্রমিতের সংখ্যা কমছে।
জেলা প্রশাসনগুলির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এপ্রিলের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহ থেকে শ্রমিকদের ঘরে ফেরা শুরু হতেই সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। কয়েকটি জেলা থেকেই জানানো হয়েছে, এই সময়ে এক দিকে বাইরে থেকে আসা লোকের সংখ্যা বাড়ছিল। সেই দলে অধিকাংশই শ্রমিক। অন্য দিকে, পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারের সংখ্যাও বাড়ে। ফলে সংক্রমণের সংখ্যাও বাড়তে থাকে দ্রুত।
আরও পড়ুন: গোষ্ঠী সংক্রমণ ৬৭৬ জনের, আরও দু’সপ্তাহের লকডাউন গুয়াহাটিতে
প্রথম থেকেই সংক্রমণের দিক থেকে যে জেলাগুলি সামনের সারিতে ছিল, সেই দলে রয়েছে হাওড়া এবং হুগলি। হাওড়ায় ২৩ জুন পর্যন্ত সংক্রমিতের সংখ্যা ২২২৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৫৭৭ জন। তবে দিনপ্রতি গড় মৃত্যু হার এখনও দু’জনই রয়েছে। জেলার সিএমওএইচ ভবানী দাস বলেন, ‘‘আক্রান্তের সংখ্যা এখনই কমবে না। কারণ, অনেকেই বাড়াবাড়ি হলে তবেই হাসপাতালে আসছেন।’’
মৃত্যুর সংখ্যা হুগলিতেও যথেষ্ট। এখন পর্যন্ত ১৯ জন। শিলিগুড়ির পুর এলাকায় এই অবধি ১৪ জন মারা গিয়েছেন। প্রশাসন দুষছে কোমর্বিডিটি-কে। যদিও চিকিৎসকদের একটা অংশের দাবি, কোভিড হাসপাতালগুলির পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। উত্তরবঙ্গে কোভিডের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘যে সব রোগীর অবস্থা ভাল নয়, তাঁদের চিকিৎসার দিকে বাড়তি নজর দিতে বলা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: সংক্রমণ রোধে মেট্রোয় টোকেন বন্ধের ভাবনা
দক্ষিণবঙ্গের দুই মেদিনীপুর, নদিয়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, মুর্শিদাবাদ বা উত্তরবঙ্গের মালদহ থেকে কোচবিহার— সব ক্ষেত্রেই প্রশাসনের কর্তারা দাবি করেছেন, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে যখন শ্রমিক ট্রেন ঢুকতে শুরু করে, করোনা সংক্রমণও বাড়তে শুরু করে। বীরভূমের মতো একসময়কার সবুজ জেলাতেও ওই সময় আক্রান্ত বাড়তে থাকে। দুই ২৪ পরগনাতেও গত দু’সপ্তাহে লাফিয়ে বেড়েছে সংক্রমিতের সংখ্যা।
সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, সুস্থ হয়ে ওঠার হারও যথেষ্ট ভাল। মুর্শিদাবাদের জেলা প্রশাসনের দাবি, তাদের সুস্থতার হার ৮৫ শতাংশ। একই ছবি প্রায় গোটা রাজ্যেই। সুস্থতার হার যেমন স্বাস্থ্য দফতরকে স্বস্তি দিয়েছে, তেমনই আশা জাগিয়েছে, বাইরে থেকে আসা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে সংক্রমণের হারও দ্রুত কমে আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy