অবশেষে কেন্দ্রীয় সরকার মেনে নিল, মেডিক্যালের সর্বভারতীয় অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষায় বা ‘নিট’-এ বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নপত্র করাটা ঠিক হয়নি। এতে বিভ্রান্তি বেড়েছে। শনিবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘এই বছর এই পার্থক্য থেকেই সমস্যা হয়েছে। আগামী বছর থেকে তাই ভাষা অন্য হলেও মূল প্রশ্ন একই থাকবে। সুপ্রিম কোর্টও এটা মেনেছে।’’ অভিন্ন মেডিক্যাল প্রবেশিকা কতটা সফল হয় তা দেখে তার পর অভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান জাভড়েকর।
নিটের প্রশ্নপত্র নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ-প্রতিবাদ হয়েছিল প্রচুর। কিন্তু তখন পিছু হঠেনি কেন্দ্র। বরং বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন রকম প্রশ্নপত্র হওয়ার প্রতিবাদে একাধিক রাজ্য থেকে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা যখন আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন তখন তার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল পরীক্ষার মূল আয়োজক সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন বা সিবিএসই। তার পরিপ্রেক্ষিতেই গত ১২ জুন বিচারপতি পি সি পন্থ এবং বিচারপতি দীপক গুপ্ত-কে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের অবসরকালীন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, দেশের কোনও হাইকোর্ট নিট সংক্রান্ত কোনও আবেদনের বিচার করতে পারবে না। এই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে দিতে হবে।
এতে ১২ লক্ষ পরীক্ষার্থীর অনেকেই খুশি হয়েছিলেন। ফল বার হওয়ার পর এখন ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু বাংলা-সহ একাধিক ভাষায় প্রশ্ন কঠিন হয়েছে বলে অভিযোগ করে যাঁরা নতুন করে পরীক্ষার দাবি করেছিলেন তাঁরা হতাশায় ভেঙে পড়েছেন। এ দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বক্তব্যের পর তাঁরাই জানিয়েছেন, তাঁদের অভিযোগ যে ঠিক ছিলেন তা কেন্দ্র এতদিনে মেনে নিল। মাঝখান থেকে বাংলা-সহ একাধিক ভাষার পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন কঠিন হওয়ায় তাঁরা পাশ করতে পারলেন না।
তাঁদের বছর নষ্ট হল। রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘কেন্দ্রকে এত চিঠি দিলাম, ওরা কোনও উত্তর দিল না। এখন স্বীকার করছে যে ভুল হয়েছিল। শুধু-শুধু এত ছাত্রছাত্রীকে হেনস্থা হতে হল।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও এ দিন বলেন, ‘‘এক দেশ, এক প্রশ্ন হওয়ার কথা ছিল। কেন্দ্র যে ভুল করেছিল তা কেন্দ্র নিজেই মানল। এই জন্যই ওরা টিউবলাইট সরকার। এর আগে প্রতিবাদ করে কতবার চিঠি দিয়েছি কিন্তু ওরা উত্তর দেয়নি।’’ এর আগে জুন মাসে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘বাংলার পড়ুয়াদের স্বার্থে রাজ্য সরকার প্রতিবাদ করবে, চিঠি দেবে, যতদূর যেতে হয় ততদূর যাবে।’’ কিন্তু বাংলা ভাষার নিট দেওয়া অনেক পরীক্ষার্থী ও তাঁদের অভিভাবকদের কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার মুখে বললেও আমাদের পাশে দাঁড়ায়নি।’’ এইরকম ১০ জন পড়ুয়া অভিভাবকদের দায়ের করা মামলায় আগামী ৩১ জুলাই শীর্ষ আদালত সিবিএসই-কে হলফনামা দিতে বলেছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, ‘‘আমরা সবসময় ছাত্রছাত্রীদের পাশেই ছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy