বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র ।
হাওড়ার লিলুয়ায় একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ওই নির্মাণটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করা হয়। মঙ্গলবার বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশের উপর এক সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
মঙ্গলবার কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ওই নির্মাণটির প্রোমোটার, সেটির বাসিন্দা এবং ফ্ল্যাটের মালিক-সহ সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শুনতে হবে বালি পুরসভাকে। সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে পুরসভার আধিকারিকেরা ওই জায়গাটি নতুন করে পরিদর্শন করবেন। তার পরেই পুরসভার তরফে প্রশাসনিক অবস্থান ঠিক করা হবে। তার আগে নির্মাণটি ভাঙা যাবে না।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর এই সংক্রান্ত মামলায় ওই বাড়ি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। লিলুয়াার ২৯৫ স্কোয়্যার মিটারের একটি বেআইনি নির্মাণ ২৯ নভেম্বরের মধ্যে ভেঙে ফেলতে বলে বিচারপতি বলেছিলেন, ভাঙার কাজে কেউ বাধা দিলে তাকে গ্রেফতার করবে লিলুয়া থানার পুলিশ।
বেআইনি নির্মাণের সঙ্গে কোনও রকম আপেস না করার বার্তা দিয়ে বিচারপতি স্পষ্ট করে দিয়েছেলিন, তাঁর বাড়িও যদি বেআইনি হয়, তবে তা ভেঙে ফেলতে হবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটিও বেআইনি নির্মাণ থাকা উচিত নয়। হাওড়ায় আমার বাড়ি রয়েছে। সেটিও যদি বেআইনি হয়, তবে তা বুলডোজ়ার দিয়ে ভেঙে দিতে হবে।’’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সে দিনের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে এর পর বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন জানানো হয়। তার ভিত্তিতেই মঙ্গলবার একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর এক সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। তবে একই সঙ্গে জানিয়েছে, ওই স্থগিতাদেশের নির্দেশ ‘অন্তবর্তী’। অর্থাৎ, এক সপ্তাহের মধ্যে বালি পুরসভাকে নির্মাণটি খতিয়ে দেখে তাদের অবস্থান ঠিক করতে হবে। আদালতকেও সেই মর্মে অবহিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, হাওড়ার লিলুয়ায় ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙার আবেদন জানিয়ে হাই কোর্টে আগেই মামলা দায়ের হয়েছিল। ওই নির্মাণ ভেঙে ফেলার নির্দেশ প্রথমে দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিংহের একক বেঞ্চ। পরে বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চও ওই রায় বহাল রেখেছিল।
কিন্তু গত ৪ সেপ্টেম্বর ওই নির্মাণ ভাঙতে গিয়ে বাধা পান বালি পুরসভার লোকজন। পুলিশের সাহায্য ছাড়া ওই নির্মাণ ভাঙা সম্ভব নয় জানিয়ে এর পর আবার মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। সেই মামলার শুনানিতেই পুলিশের সাহায্য নিয়ে নির্মাণটি বুধবার অর্থাৎ ২৯ নভেম্বরের মধ্যে ভেঙে ফেলতে বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সেই নির্দেশেই এক সপ্তাহের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy