Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নৌকাডুবিতেও ফেরেনি হুঁশ, যাত্রী সুরক্ষা শিকেয়

লাইফ জ্যাকেট বা যাত্রী ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় বয়া ছাড়াই প্রতিদিন চলছে যাত্রী বহন। হলদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেল টিকিট কাউন্টারের সামনে অপরিচ্ছন্ন অবস্থা।

যাত্রীদের নেই লাইফ জ্যাকেট। হলদিয়া-কেন্দেমারি রুটে এ ভাবেই পারাপার। নিজস্ব চিত্র

যাত্রীদের নেই লাইফ জ্যাকেট। হলদিয়া-কেন্দেমারি রুটে এ ভাবেই পারাপার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
হলদিয়া শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২৬
Share: Save:

মায়াচরে নৌকাডুবিতে দু’জনের মৃত্যুর পরেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। যাত্রী সুরক্ষার ন্যূনতম ব্যবস্থা না রেখেই রমরমিয়ে চলছে ফেরি চলাচল।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর রূপনারায়ণ নদে মায়াচর সংলগ্ন এলাকায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। নৌকার ৩৮ জন যাত্রী কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে গেলেও মারা যান দু’জন। ঘটনার পরেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন। তড়িঘড়ি গ্রেফতার করা হয় দনিপুর-মায়াচর ফেরিঘাটের ইজারাদার তথা ওই নৌকার মাঝি লক্ষ্মণ পালকে। ঘটনার পর বেশ কয়েক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা তথা ফেরি যাত্রীরা সেদিনের ঘটনা এখনও ভুলতে পারেননি। তবু মহকুমার অন্যান্য ফেরিঘাটগুলিতে যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করেই অব্যাহত ফেরি চলাচল।

হলদিয়া-কেন্দেমারি ফেরি পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল হলদিয়া, নন্দীগ্রামের বহু বাসিন্দা। প্রতিদিনই কয়েক‌শো মানুষ এই ফেরিঘাট দিয়ে যাতায়াত করেন। লাইফ জ্যাকেট বা যাত্রী ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় বয়া ছাড়াই প্রতিদিন চলছে যাত্রী বহন। হলদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেল টিকিট কাউন্টারের সামনে অপরিচ্ছন্ন অবস্থা। অযত্নে পড়ে লাইফ জ্যাকেট। মহিলা, শিশু নির্বিশেষে বয়ার অভাবে নৌকা থেকে পাড়ে লাফ দিয়ে নেমে যাতায়াত করছেন। কেউ কেউ পড়েও যাচ্ছেন। এক নিত্যযাত্রী বলেন, ‘‘ঘাটের ইজারাদাররা শুধুমাত্র মুনাফাটাই বোঝে। তাদের কাছে আমাদের প্রাণের কোনও দাম নেই। এদিকে আমরা যদি হলদিয়া থেকে নন্দীগ্রাম ঘুরে যেতে চাই তা হলে আরও ৭০ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরতে হবে। তাই এই জলপথ বেছে নিই। কোনওরকম সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়া বাধ্য হয়েই প্রতিদিন এ ভাবে যাতায়াত করতে হচ্ছে।’’

জেলা পরিবহণ আধিকারিক সজল অধিকারী বলেন, ‘‘প্রত্যেক ঘাটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে দু’জন করে জলসাথী কর্মী নিযুক্ত করা হয়েছে। ওই ফেরিঘাটগুলিতে উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে কিনা তা তাঁরা খতিয়ে দেখে সরাসরি প্রশাসনকে জানাবেন। যাত্রী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে জেলা পরিবহন দফতর আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’’

হলদিয়া ঘাটের জলসাথী কর্মী অভিজিৎ মাইতি বলেন, ‘‘এখানে আমি একাই আছি। বারবার বলা সত্ত্বেও ঘাট কর্তৃপক্ষ বা যাত্রীরা কেউই নিরাপত্তার বিষয়ে কর্ণপাত করেননি। পুলিশকে জানিয়েও ফল হয়নি।’’ হলদিয়া কেন্দেমারি ফেরিঘাটের ইজারাদার রবি দাস বলেন, ‘‘হলদিয়ার পুরপ্রধান শ্যামল আদক বলেন, ‘‘লাইফ জ্যাকেটের সংখ্যা অনেক কম। তুলনায় প্রতিদিনই যাত্রীসংখ্যা অনেক বেশি হয়। তবুও বিষয়টি নজরে রাখছি।’’

মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশের পক্ষ থেকে ঘাটের ইজারাদারকে বলা হয়েছে, যত সংখ্যক যাত্রী পারাপার করেন সেই সংখ্যায় লাইফ জ্যাকেট কিনতে। আমরাও বিষয়টিতে নজর রেখেছি। যাত্রী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Boat Accident Haldia হলদিয়া Administration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy