হাতে রুটি নিয়ে বিক্ষোভ চাকরিপ্রার্থীদের
শিক্ষাক্ষেত্রে ‘কেলেঙ্কারি’র অভিযোগ তুলে শোরগোলের আবহে এ বার হাতে রুটি নিয়ে আন্দোলনে নামলেন ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা। যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবিতে বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার ভৈরবস্থান মোড় থেকে তামলিবাঁধ মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। ওই মিছিলে স্লোগান ওঠে, ‘নেতাদের ঘরে জমছে কোটি কোটি, আমাদের ঘরে জুটছে না রুটি’। চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভের একই ছবি দেখা গিয়েছে হুগলির চুঁচুড়ায়। সেখানে জেলা স্কুল পর্যবেক্ষকের দফতরের সামনেও বিক্ষোভ দেখান প্রাথমিক শিক্ষক পদের মেধাতালিকায় ‘নট ইনক্লুডেড’ তকমা পাওয়া চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, দুর্নীতি করে যাঁদের চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের বরখাস্ত করে শীঘ্রই যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার ভৈরবস্থান মোড় থেকে তামলিবাঁধ পর্যন্ত একটি মিছিল করে রাস্তার উপরই বসে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা। আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ-অবরোধের জেরে দীর্ঘ ক্ষণ শহরের একাংশে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। পরে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের দফতরেও বিক্ষোভ দেখান আন্দোলনকারীরা। তাঁদের অভিযোগ, মেধাতালিকায় ‘নট ইনক্লুডেড’ তকমা পাওয়া চাকরিপ্রার্থীদের ধাপে ধাপে প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে। টেট উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাঁরা দু’বার মৌখিক পরীক্ষার ডাকও পান। কিন্তু তার পরেও নিয়োগ মেলেনি।
আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থী মৌমিতা ঘোষ বলেন, “সিবিআই ও ইডির তদন্তে এই যে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হচ্ছে, এই টাকার জন্যই আজ আমরা বঞ্চিত। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি আর স্বজনপোষণ হয়েছে রাজ্যে। নেতাদের ঘরে কোটি কোটি টাকা জমছে আর আমাদের ঘরে রুটি নেই। আর এক চাকরিপ্রার্থী সমীর দণ্ডপাঠ বলেন, “অনেকে সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি পেয়ে গেল আর আমরা যোগ্য হয়েও ঘুরে বেড়াচ্ছি। চাকরি পাওয়ার জন্য নির্ধারিত বয়সও পেরিয়ে যাচ্ছে।’’
বাঁকুড়ার পাশাপাশি হুগলির ডিপিএসসি সভাপতির দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান চাকরিপ্রার্থীরা। সেখানে হুগলি ছাড়াও দুই বর্ধমান, বীরভূমের চাকরিপ্রার্থীরা ছিলেন। চুঁচুড়ার ময়ূরপঙ্খী ঘাট থেকে পিপুলপাতি পর্যন্ত মিছিল করেন আন্দোলনকারীরা। এর পর প্রাইমারি ডিআই অফিসের সামনে বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভের পর চাকরিপ্রার্থীদের তরফে স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয় ওই দফতরে। হুগলির চাকরিপ্রার্থী মৌটুসি বীর বলেন, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২০ সালের ১১ নভেম্বর নবান্নে প্রেস কনফারেন্স করে ঘোষণা করেছিলেন, ২০১৪ সালের টেট পাশ করা চাকুরিপ্রার্থীদের ধাপে ধাপে নিয়োগ করা হবে। মাননীয়ার সব আশ্বাস আজ মিথ্যায় পরিণত হয়েছে। এই বঞ্চনা থেকে আমরা মুক্তি চাই।’’
অন্য দিকে, বীরভূমের চাকরিপ্রার্থী পীযূষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রথমে পর্ষদ প্রায় ১৩ হাজার প্রার্থীকে ইনক্লুড করে চাকরিতে নিয়োগ করে। বাকিদের মেরিট লিস্টে নট ইনক্লুডেড করে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চিত করেছিলেন, সকলকেই নিয়োগ করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা সত্ত্বেও আজ প্রায় সাত হাজারের বেশি প্রার্থী চাকরি পাননি। আমাদের বাড়িতে আজ খাওয়ার রুটি নেই। তাই রুটি হাতে রাস্তায় নেমেছি আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy