Advertisement
E-Paper

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে স্কুলে ফিরতে চান অবস্থানরত শিক্ষকেরা, একই সঙ্গে জিইয়ে রাখতে চাইছেন আন্দোলনও

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর স্কুলে ফিরতে চাইছেন ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পাশাপশি আন্দোলনকেও জিইয়ে রাখতে চান। সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানিয়েছেন তাঁরা।

ধর্মতলায় রাস্তায় বসে আন্দোলন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের।

ধর্মতলায় রাস্তায় বসে আন্দোলন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২৫ ২০:৩৭
Share
Save

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে ফের স্কুলের চাকরিতে ফিরতে চান ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করে এমনটাই জানালেন তাঁরা। তবে নতুন করে পরীক্ষায় বসতে চাইছেন না অবস্থানরত শিক্ষকেরা। তাই একই সঙ্গে আন্দোলনকেও জিইয়ে রাখতে চাইছেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে স্কুলে শিক্ষকতার কাজে পুনরায় ফিরে গেলে তাঁরা অবস্থানমঞ্চে কী ভাবে সময় দেবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকেরা কি পর্যায়ক্রমে অবস্থানমঞ্চে আসবেন, না কি সময়সুযোগ মতো অবস্থানে বসবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও শিক্ষাকর্মীরা অবস্থান চালিয়ে যাবেন।

সন্ধ্যায় চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের সংগঠন ‘যোগ‍্য শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী অধিকার মঞ্চ’-র তরফে সাংবাদিক বৈঠকে বৃন্দাবন ঘোষ এবং মেহবুব মণ্ডল বলেন, “আমরা সরকারের অবস্থানে খুশি নই। অযোগ্যদের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। আমরা আদালতের নির্দেশে কাজে যোগ দিলেও আন্দোলন থেকে সরছি না। আইনি লড়াইও চলবে পাশাপাশি। সরকার যদি পরীক্ষার নেওয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, তবে বিকাশ ভবন, স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে অবস্থান বিক্ষোভ হবে চাকরিহারাদের পক্ষ থেকে।”

এই মঞ্চ অবশ্য সব চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর প্রতিনিধিত্ব করছে না। অনেকেই আছেন, যাঁরা এই মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত নন। চাকরিহারাদের ওই মঞ্চের অপর সদস্য ইল্লাজুর রহমান বলেন, “আমরা স্কুলে যাব আদালতের নির্দেশ মেনে। তবে আমাদের আন্দোলনও চলবে। আমরা সরকারি কর্মচারী, তাই সরকারকে উপেক্ষা করে কিছু করা যাবে না। সে রকম আমরা আশা করব সরকার আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।” নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে আগামী ১৮-১৯ এপ্রিল জেলাভিত্তিক মিছিল এবং গণস্বাক্ষর সংগ্রহের কর্মসূচি রয়েছে ‘যোগ‍্য শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী অধিকার মঞ্চ’-এর। এর পরে ২১ তারিখ এস‌‌এসসির সামনে অবস্থান এবং ২২ তারিখ শিয়ালদহ থেকে রাজভবন অভিযানেরও ডাক দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

২০১৬ সালের এসএসসির গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াই গত বছর বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চও চাকরি বাতিলের রায়ই বহাল রাখে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারান প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার থেকে ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলে অবস্থানে বসে ‘যোগ্য শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী অধিকার মঞ্চ’। এরই মধ্যে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলার রায় পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। বৃহস্পতিবার ওই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার এজলাসে।

শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ‘দাগি’ (টেন্টেড) নন এমন শিক্ষকেরা আপাতত স্কুলে যেতে পারবেন। তবে ৩১ মে-র মধ্যে রাজ্য এবং এসএসসিকে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরুর বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। ওই মর্মে ৩১ মে-র মধ্যে আদালতে হলফনামা দিয়ে তা জানাতে হবে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর না করলে, এই নির্দেশ প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে পুরনো নির্দেশই বহাল থাকছে।

শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর বিক্ষিপ্ত ভাবে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া আসছিল চাকরিহারাদের তরফে। ‘যোগ‍্য শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী অধিকার মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক চিন্ময় মণ্ডল প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে একটি ‘কৌশলগত সাফল্য’ হিসাবে ব্যাখ্যা করছিলেন। একই সঙ্গে স্থায়ী সমাধানের দাবিও তুলেছিলেন তিনি। চিন্ময় জানিয়েছিলেন, একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বেতন পাওয়া বা চাকরি থাকা নিয়ে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। তাঁরা চান অবসর গ্রহণের সময় পর্যন্ত চাকরি করতে। আন্দোলন জারি থাকবে কি না, সে বিষয়েও আজই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন চিন্ময়।

রাজ্যের শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের নতুন তালিকা ইতিমধ্যে দফতরকে ইমেল করে পাঠিয়েছে এসএসসি। যদিও চাকরিহারাদের এই সংগঠনের দাবি, শুধু ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’দের তালিকা প্রকাশ করলে হবে না, ‘অযোগ্য’দের চাকরি থেকে বাদ দিতে হবে। আগামী ২১ এপ্রিল এই দাবিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দফতরের সামনে অবস্থান এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে চাকরিহারাদের ওই মঞ্চ। বস্তুত, ওয়াই চ্যানেলে অবস্থানরত চাকরিহারাদের মধ্যে গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মীরাও রয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের নির্দেশে তাঁদের কোনও সুরাহা মেলেনি। চাকরিহারাদের ওই মঞ্চ সূত্রে খবর, চাকরিহারা গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মীরা অবস্থান চালিয়ে যাবেন। তবে শিক্ষকেরা স্কুলে গেলে কী ভাবে আন্দোলনে থাকবেন, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও ব্যাখ্যা এখনও মেলেনি।

সংক্ষেপে
  • ২০১৬ সালের এসএসসিতে নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট। বলল, পুরো প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে। ওই নিয়োগপ্রক্রিয়ার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
  • এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাই কোর্ট এই সংক্রান্ত শুনানির পর ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগপ্রক্রিয়াই বাতিল করে দিয়েছিল।
  • রাজ্যের ২৬ হাজার চাকরি (আদতে ২৫,৭৫২) বাতিল করে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
West Bengal Teacher Supreme Court WBSSC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।