
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। — ফাইল চিত্র।
চাকরিহারাদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনারা দয়া করে কাজে ফিরুন। মহামান্য আদালত যা রায় দিয়েছে, আমার মনে হয়, সেই নির্দেশ অনুযায়ী আপনাদের এখন পড়ুয়াদের কথা ভাবা উচিত এবং নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ফেরত যাওয়া উচিত।’’
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চের নির্দেশের পরে চাকরিহারাদের একাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা আন্দোলন জিইয়ে রাখতে চান। তবে এই মতামত শেষ পর্যন্ত ‘সর্বসম্মত’ হবে কি না, তা এখনও জানানো হয়নি। আন্দোলনকারীরা বলেছেন, তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘‘আপাতত সাময়িক স্বস্তি মিলেছে। এখন আন্দোলন স্তিমিত হওয়া উচিত। তবে বিরোধীরা তা হতে দিচ্ছেন না।’’
তবে সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘ইতিবাচক’ বলেই মনে করছে রাজ্য। ব্রাত্য বলেন, ‘‘আমি প্রথম দিন থেকেই বলেছিলাম, চাকরিহারাদের জন্য এখনও ইতিবাচক ভাবনার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। মাঝে কসবায় একটি অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তবে আজ সেই ইতিবাচকতার প্রথম সদর্থক পদক্ষেপটি লক্ষ্য করা গিয়েছে। আপনারা ধৈর্য্য ধরুন। যত ক্ষণ না মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে শিক্ষকদের মর্যাদা ফিরিয়ে না দিতে পারছি, তত ক্ষণ পর্যন্ত আমরা চেষ্টা করব। আমরা সর্বতোভাবে আপনাদের সঙ্গে আছি।’’
ব্রাত্য আরও এক বার জানিয়েছেন, আগামী ২১ তারিখ, অর্থাৎ সোমবারের মধ্যে যোগ্য-অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করবে এসএসসি।
চাকরিহারাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গেগত শুক্রবার বৈঠক করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য। বিকাশ ভবনে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর ব্রাত্য জানান, চাকরিহারাদের দাবিগুলির সঙ্গে তাঁর মৌলিক কোনও বিরোধ নেই। তবে যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, তাই আইনি পরামর্শ ছাড়া কিছু করা যাবে না। সেই পরামর্শ নিচ্ছে রাজ্য সরকার। আইনি পরামর্শ নিয়েই আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। ‘মিরর ইমেজ’ও প্রকাশ করা হবে। বৃহস্পতিবার ফের ব্রাত্য বলেন, তালিকা প্রকাশের বিষয়ে চাকরিহারাদের শীঘ্রই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে এসএসসি।
শিক্ষকেরা সাময়িক ভাবে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি পেলেও শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজ্য শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষাকর্মীদেরও পাশে আছে। আইনি পথে এর পর যে যে ধাপ আছে, তার সবই করা হবে।
ব্রাত্য আরও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে শিক্ষকদের মর্যাদা ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা লড়ে যাওয়ার চেষ্টা করব। আইনি পথে যা যা করা সম্ভব তার সবটাই করা হবে।’’
বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘আপৎকালীন স্বস্তি পাওয়া গিয়েছে। আমাদের জন্য এই রায় অল্প হলেও আশাব্যঞ্জক।’’
২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলায় সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে আবেদন করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার কথা মাথায় রেখে তাদের আর্জি ছিল, যাঁরা ‘দাগি’ বা ‘অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত’ নন, আপাতত তাঁদের চাকরি বহাল থাক। বৃহস্পতিবার সেই আর্জিতেই পর্ষদের পক্ষে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যদিও শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে এই রায় কার্যকর হচ্ছে না। ৩১ মে-র মধ্যে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরুর বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। ওই মর্মে আদালতে হলফনামা দিয়েও তা জানাতে হবে। শুধু তা-ই নয়, শীর্ষ আদালতের আরও নির্দেশ, বর্ষশেষের আগেই পরীক্ষা নিয়ে শেষ করতে হবে নিয়োগপ্রক্রিয়া। বেঁধে দেওয়া এই সময়ের মধ্যে নির্দেশ কার্যকর না-হলে তা প্রত্যাহার করা হবে বলেও জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
যদিও আন্দোলনকারী চাকরিহারারা জানিয়েছেন, তাঁরা এই রায়ে খুশি নন। তাঁদের অনেকেই ফের পরীক্ষা দিতে চান না। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সমান অধিকার না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-র কর্মীরাও। নিজেরা আলোচনার পর এসএসসি-র কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁদের একাংশ। এই সব জল্পনার মধ্যেই এ বার প্রতিক্রিয়া জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
বৃহস্পতিবার পর্ষদের আর্জিতে সাড়া দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। জানানো হয়েছে, ‘দাগি’ (টেন্টেড) নন এমন নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকেরা স্কুলে যেতে পারবেন। পাশাপাশি, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী ৩১ মে-র মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, তারা চলতি বছরেই নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করবে। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে শেষ করতে হবে নিয়োগপ্রক্রিয়া। তবে জানানো হয়েছে, শিক্ষাকর্মীদের ক্ষেত্রে এই রায় প্রযোজ্য নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy