এ বারও এই চিত্র দেখা যাবে বলে আশঙ্কা।—প্রতীকী ছবি।
এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নম্বরের ছড়াছড়ি। তাতে কলেজে ভর্তি নিয়ে সমস্যা দেখছে শিক্ষা শিবির।
অন্তত ৫০% পরীক্ষার্থী প্রথম বিভাগে পাশ করেছেন, অর্থাৎ ৬০% এবং তার বেশি নম্বর পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সভানেত্রী মহুয়া দাস। ‘ও’ গ্রেড অর্থাৎ ৯০% থেকে ১০০% পাওয়া পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০,২২০। গত বছর সংখ্যাটা ছিল ৭৮১৮। ‘এ+’ গ্রেড অর্থাৎ ৮০% থেকে ৮৯% শতাংশ নম্বর পেয়েছেন ৮৪,৭৪৬ জন। গত বার সংখ্যাটা ছিল ৪৭,৭৫৯।
প্রশ্ন উঠছে, এমন চোখধাঁধানো নম্বর পেয়ে পরীক্ষার্থীরা ভাল কলেজে ভর্তি হতে পারবেন তো? প্রশ্ন ওঠার কারণ, যত সংখ্যক পরীক্ষার্থী ‘ও’ এবং ‘এ+’ পেয়েছেন, তত আসন নেই রাজ্যের তথাকথিত ভাল কলেজে!
করোনা-কালে পড়ুয়াদের অনেকেই রাজ্যের বাইরে যেতে চাইছেন না। চাইছেন না অভিভাবকেরাও। এই পরিস্থিতিতে ভাল ফল করেও রাজ্যের নামী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। সংসদ-সভানেত্রী এ দিন জানান, এ বার অতিমারির জন্য ১৪টি বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। যে-সব বিষয়ে পরীক্ষা হয়েছে, পড়ুয়া তার মধ্যে যেটিতে সর্বাধিক নম্বর পেয়েছেন, তার ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়েছে অপরীক্ষিত বিষয়ে। ফল প্রকাশের পরে দেখা যাচ্ছে, তার জেরে নম্বরের ছড়াছড়ি!
লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার বলেন, ‘‘এই অবস্থায় পড়ুয়াদের প্রত্যাশা হবে বিরাট। আবার এত নম্বর পেয়েও পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে না-পারলে মানসিক চাপের মুখেও পড়বে অনেকে। স্নাতক স্তরে পড়ে গিয়েও কিন্তু এত নম্বর পাওয়া সম্ভব হবে না। সেটাও মন খারাপের কারণ হয়ে উঠবে।’’ পরীক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক পার্থিব বসু জানান, ভর্তির সমস্যা এ বার প্রকট হবে। যদি কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি নেওয়া যেত, তা হলে অন্তত ঠিক জায়গায় ঠাঁই পাওয়া কিছুটা সহজ হত পড়ুয়াদের। ‘‘অযথা বহু কলেজে আবেদন করতে হবে ছাত্রছাত্রীদের। তাতেও হয়তো মনের মতো কলেজ পাবে না অনেকেই,’’ বলেন পার্থিববাবু। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যেরও আশঙ্কা, ভর্তি নিয়ে এ বার একটা সঙ্কট তৈরি হবেই। প্রচুর পরীক্ষার্থী অনেক অনেক নম্বর পেয়েছেন। তাঁরা নামী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইবেন। কিন্তু এত পড়ুয়াকে জায়গা দেওয়ার মতো আসনই তো নেই!
বেথুন কলেজের অধ্যক্ষা কৃষ্ণা রায় জানান, কৃতীদের মধ্যে কিছু পড়ুয়া ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চলে যাবেন। করোনার জন্য সামগ্রিক মেধা যাচাই করা যায়নি। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘হয়তো কোনও পরীক্ষার্থী অনেক নম্বর পেয়ে পদার্থবিদ্যায় অনার্স পড়তে চাইবে। কিন্তু দেখা গেল, পদার্থবিদ্যায় সে পরীক্ষাই দেয়নি। এই বিষয়ে সরাসরি মূল্যায়ন হয়নি তার। কিন্তু যে-নম্বর সে পেয়েছে, তার ভিত্তিতে তাকে ভর্তি নিতে হবে। এ ভাবে ভর্তি হলে পরে পদার্থবিদ্যা নিয়ে সে কতটা পেরে উঠবে, প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy