সোনামুখী ব্লকের জগমোবনপুরে সৌমিত্র ও অমরনাথ (একেবারে বাঁ দিকে)। বৃহস্পতিবার ছবি শুভ্র মিত্র।
রাজ্যে নতুন করে আরও ৫৯ হাজার লোকের চাকরি যাবে বলে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন ওন্দার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা। বুধবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়া জেলার ওন্দার রতনপুরে ওই নির্বাচনী সভাতেই বিষ্ণুপুরের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম জড়িয়ে অভিযোগ করেছেন। যদিও তা মানেননি তৃণমূল নেতৃত্ব।
ওন্দার বিধায়ক তথা বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখা অভিযোগ করেন, ‘‘২৫ হাজার মানুষকে (আদালতের নির্দেশ ২৫,৭৫৩ জন) দুর্নীতি করে চাকরি দিয়ে তাঁদের জীবন নষ্ট করে দিল তৃণমূল। এই যে ৩০ তারিখ আসছে, তার মধ্যেই দেখবেন আরও ৫৯ হাজার লোকের চাকরি যাবে।’’ তবে কোন মাসের ৩০ তারিখের কথা তিনি বলতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি। শুভেন্দুর বোমা ফাটানোর ঘোষণার পরেই হাই কোর্ট ২০১৬ সালের প্যানেলের সবার চাকরি বাতিল করার নির্দেশ দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বলেন, ‘‘এটা কি কাকতালীয়? গত কাল ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা কর্মিসভা থেকে বলেছেন, এ তো সবে শুরু। ৩০ এপ্রিলের মধ্যে আরও ৫৯ হাজার জনের চাকরি যাবে!’
অমরনাথের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিজেপির সঙ্গে হাই কোর্টের বিচারপতিদের যোগসূত্র আছে বলে দাবি করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘ফের ওন্দার বিধায়ক একটি জনসভায় ৫৯ হাজার শিক্ষকের চাকরি যাওয়ার কথা আগাম বলেছেন। আগামী দিনে যদি একজনেরও চাকরি যায়, তাহলে ধরতে হবে বিজেপির সঙ্গে হাই কোর্টের বিচারপতিদের যোগসূত্র রয়েছে। সিবিআইয়ের এই বিষয়টা নিয়েও তদন্ত করা উচিত।’’ তবে অমরনাথের দাবি, ‘‘যে ভাবে এ রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে, তাতে আমার যা অনুমান সেটাই বলেছি। এটা আমার ব্যক্তিগত অভিমত।’’
রতনপুরের ওই সভায় ছিলেন বিজেপি প্রার্থী তথা তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। সেখানে তিনি দাবি করেন, ২০১৭ সালে তিনি কিছু বেকার ছেলেকে চাকরি দেওয়ার জন্য অভিষেককে বলেছিলেন। তিনি তাঁর ভাই আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে বলেন। সৌমিত্রের অভিযোগ, ‘‘আমি আকাশকে বললাম, অভিষেকদা বলেছেন কিছু ছেলের চাকরি করে দেবেন। কী করতে হবে? আকাশ বলেন, ১০০টা ছেলে নিয়ে এসো। প্রত্যেকের কাছে ১০ লক্ষ করে টাকা নাও। আমার আট লক্ষ লাগবে, দু’লক্ষ তোমার। পরে দশের বদলে নামিয়ে আনে আট লক্ষ টাকায়। তারপরেও ৫০ হাজার টাকা কম করতে চায়। বিশ্বাস করুন, মাথায় হাত দিয়ে বসলাম। আমি এই রাজনীতি করতে এসেছি!’’ তাঁর আরও দাবি, পরে ঘটনাটি অভিষেককে জানালে তিনি সৌমিত্রকে বিষয়টি আকাশের সঙ্গে, যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রের সঙ্গে বিষয়টি বুঝে নিতে বলেন। এমনকি অভিষেক তাঁকে বালি খাদান, জেলা পরিষদ থেকেও টাকা তুলতে বলেন বলে সৌমিত্র ওই সভায় দাবি করেন। ২০১৬-র প্যানেল বাতিল হওয়ার জন্য তৃণমূলকে দায়ী করে সৌমিত্র দাবি করেন, ‘‘আমি বলেছিলাম অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চোর। আজও বলছি। তিনি আমার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন।’’
সৌমিত্র নিজের দোষ ঢাকতেই অভিষেক ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে অপবাদ করছেন বলে দাবি করেছেন বড়জোড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান অলক মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘চাকরির নামে প্রতারণার মামলায় অভিযুক্ত হয়ে গত লোকসভা নির্বাচনের সময় নিজের কেন্দ্রে প্রচারেই ঢুকতে পারেননি সৌমিত্র। তিনি নিজেই একজন অভিযুক্ত। নিজের দোষ ঢাকতে আমাদের দল ও অভিষেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা রটনা করছেন।’’ সৌমিত্র বলেন, ‘‘আমি যা বলার প্রকাশ্য সভাতেই বলেছি। দরকার হলে আমাকে চ্যালেঞ্জ করুক অভিষেক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy