Advertisement
E-Paper

Haldia: পেশা শিক্ষকতা, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির পেল্লায় বহুতল দেখে চক্ষু চড়কগাছ এলাকাবাসীর

স্কুলে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে গোটা রাজ্য যখন তোলপাড়, তখন হলদিয়ার এই শিক্ষক নেতার পেল্লায় নির্মীয়মাণ বাড়ি ঘিরে প্রশ্ন উঠছেই।

বর্তমান বসতবাড়ি (বামদিকে) ও নির্মীয়মাণ বহুতল। ইনসেটে  মানস দাস।

বর্তমান বসতবাড়ি (বামদিকে) ও নির্মীয়মাণ বহুতল। ইনসেটে মানস দাস। নিজস্ব চিত্র

সৌমেন মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২২ ০৭:৪৬
Share
Save

দোতলা বাড়িতেই এত দিন সপরিবার থাকতেন। পেশায় শিক্ষক তথা শাসক দলের অঞ্চল সভাপতি মানস দাসের সেই বাড়ি ঘিরে তেমন শোরগোল পড়েনি কখনও। কিন্তু মাস্টারমশাই শিল্পশহর হলদিয়ার প্রবেশদ্বার ব্রজলালচকে এখন যে ছ’তলা পেল্লায় বহুতল বানাচ্ছেন, তা দেখে লোকজনের চক্ষু চড়কগাছ। সকলেরই বিস্ময়, ‘‘বাব্বা! কোটি টাকার এই বাড়ি স্কুলমাস্টার বানাচ্ছেন!’’

স্কুলে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে গোটা রাজ্য যখন তোলপাড়, তখন হলদিয়ার এই শিক্ষক নেতার পেল্লায় নির্মীয়মাণ বাড়ি ঘিরে প্রশ্ন উঠছেই। বাড়ি যেখানে মাথা তুলছে, সেখানে প্রতি ডেসিমেল জমির দাম কম করে ১০ লক্ষ টাকা। প্রায় ৫ ডেসিমেল জমিতে ১০ হাজার বর্গফুটের ওই বাড়ির দাম তো কোটি ছাড়াবেই? মানস নিজেই মানছেন, ‘‘জমি-বাড়ি সব মিলিয়ে বহুতলটির দাম ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা তো হবেই।’’

তিন দশকেরও বেশি শিক্ষকতা করছেন মানস। বর্তমানে মহিষাদল ব্লকের হরিখালী বসন্তকুমার বাণী মন্দির বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। বছর ছয়েক সামলেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতির পদ। বর্তমানে তিনি হলদিয়া উন্নয়ন ব্লকে চকদ্বীপা অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি। ব্রজলালচকে ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক ঘেঁষে বালুঘাটা যাওয়ার রাস্তার সংযোগস্থলে তাঁর পেল্লায় বাড়ি তৈরি হচ্ছে দ্রুতই। বহুতলটির প্রথম দু’টি তলায় হচ্ছে মার্কেট কমপ্লেক্স। আর বাকি তিনটি তলার প্রত্যেকটিতে রয়েছে তিনটি করে ফ্ল্যাট (রাস্তার দিকের ফ্ল্যাটটি দুই বেডরুমের এবং পিছনের দিকের দু’টি ফ্ল্যাট এক বেডরুমের)। বহুতলে থাকছে লিফট এবং বেসমেন্টে গাড়ি রাখার জায়গা।

ওই এলাকার আশপাশে এমন বহুতল নেই। সমাজমাধ্যমের দৌলতে নির্মীয়মাণ বাড়ির ছবি ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে গিয়েছে ১০ কিলোমিটার দূরের গ্রামগুলিতেও। কেউ কেউ আবার ব্রজলালচকে এসে দেখ যাচ্ছেন বাড়ির বহর।

অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, তৃণমূলে থাকাকালীন শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ‘দাদার অনুগামী’ ব্যানারেও তাঁর নাম থাকত। বিরোধীদের অভিযোগ, ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি থাকাকালীন নিয়োগ এবং বদলিতে বহু দুর্নীতি করেছেন মানস। বিজেপি প্রভাবিত ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের রাজ্য সহ-সভাপতি প্রদীপ বিজলীর কথায়, ‘‘সংসদ সভাপতি থাকাকালীন ওঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তা ছাড়া, ওই সময়ই তো রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।’’

ব্রজলালচকের পৈতৃক বাড়ি সংস্কার করে সেটিও দোতলা করেছেন মানস। তার পরে এত টাকার বহুতল। শুধু শিক্ষকতা করে কি সত্যিই এ সব সম্ভব? জবাবে রীতিমতো হিসেব দিলেন মানস। বললেন, ‘‘১৯৯০ সাল থেকে স্কুলে চাকরি করছি। ২০০৮-এ প্রধান শিক্ষক হয়েছি। আর জমিটা প্রায় পাঁচ বছর আগে কিনেছিলাম। আমার এতদিনের সঞ্চয়, সঙ্গে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে বাড়িটি বানাচ্ছি। আমার এক শ্যালকও উচ্চপদস্থ চাকুরে। তিনিও কিছু টাকা দিয়েছেন।’’

আর শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ? শিক্ষক-নেতার জবাব, ‘‘টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিজের দুই ছেলেই তো বেকার। অযথা বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

Scam TMC Teacher

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}