কুণাল ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র। বাংলায় সরকারও চালায় তৃণমূল। কিন্তু সেই তিনি, কুণাল ঘোষ শুক্রবার প্রকাশ্যেই বলে দিলেন, সরকারের কিছু কাজের জন্য তাঁদের মতো মুখপাত্রদের কাজ কঠিন হচ্ছে। ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বিজেপির সভা নিয়ে আদালতে রাজ্য সরকারকে যে ভাবে ‘ধাক্কা’ খেতে হয়েছে, তা নিয়ে কুণাল দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ।
ফি-বছর ২১ জুলাই তৃণমূল ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে তাদের ‘শহিদ দিবস’-এর সভা করে। আগামী ২৯ নভেম্বর ঠিক সেখানেই সভা করার জন্য কলকাতা পুলিশের কাছে আবেদন করেছিল বঙ্গ বিজেপি। যে সভায় থাকার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। পুলিশ সেই অনুমতি দেয়নি। বিজেপি আদালতে যায়। আদালত সেই সভা করার অনুমতি দেয়। কিন্তু ‘নাছোড়বান্দা মনোভাব’ নিয়ে রাজ্য সরকার সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। শুক্রবার এ নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ বলে, যদি অন্য দল ওখানে সভা না করতে পারে, তা হলে ২১ জুলাইয়ের সভাও বন্ধ করে দেওয়া হবে!
কুণালের বক্তব্য, কোর্টের হাওয়ায় যে মামলার গতি বোঝা যায়, বিচারপতিদের মনোভাব বোঝা যায়, সেখানে কোনও কোনও বিষয়ে রোজ আদালতে রাজ্য সরকারকে অপদস্থ হতে হচ্ছে। তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্রের কথায়, ‘‘কারা উপর মহলকে পরামর্শ দেয়? রোজ নন-ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে মুখপাত্রদের কাজ কঠিন হচ্ছে।’’ এখানেই থামেননি কুণাল। তাঁর কথায়, ‘‘এক বার ভুল হলে মানা যায়। কিন্তু ১৪ বার একই ভুল হচ্ছে! তা থেকে শিক্ষা নেওয়ার কোনও লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না। মুখপাত্রদের কাজ হল, দল ভুল করলেও সেটাকে ঠিক বলে বাজারে বিপণন করা। কিন্তু বার বার হতে থাকলে সেই কাজে আমাদেরও সমস্যা হচ্ছে।’’
বস্তুত, কুণালের অভিযোগ, যাঁরা পরামর্শ দেন, তাঁদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকেই রোজ বেইজ্জত হতে হচ্ছে। শুক্রবার এবিপি আনন্দকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলের সৈনিক হিসেবে আমি মনে করি, ২১ জুলাই ওখানে সভা করার অধিকার তৃণমূলের রয়েছে। আবার নাগরিক হিসেবে আমার মনে হয়, একটা দল করলে বাকিরা করবে না কেন? আদালত তো আইনের চোখেই দেখছে।’’ কুণাল এ-ও মনে করেন এর ফলে ‘চার আনার’ বিজেপি ‘১২ আনার’ প্রচার পেয়ে গেল। তাদের সেই প্রচারটা পাইয়ে দেওয়া হল। স্পষ্টতই কুণালের তির সরকার এবং প্রশাসনের দিকে।
তবে সরকার বা প্রশাসনের কাজ নিয়ে কুণাল যে এই প্রথম মুখ খুললেন, তা নয়। এর আগে বিজেপি নেতা সজল ঘোষকে যে ভাবে দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল, তা নিয়েও সরব হয়েছিলেন তিনি। কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা কৌস্তভ বাগচীর গ্রেফতারির পরেও কুণাল বলেছিলেন, ‘‘ওঁকে পুলিশ নেতা করে দিল! এ সবের কোনও দরকারই ছিল না।’’ শুক্রবার কুণাল আবার সরব হলেন আইনি পরিধিতে সরকারের ‘ল্যাজেগোবরে’ হওয়ার ধারাবহিক ঘটনা নিয়ে।
কুণালের এ হেন সুরকে অনেকেই অনেক ভাবে ব্যাখ্যা করতে শুরু করেছেন। অনেকের মতে, কুণাল সরাসরি বোঝাতে চেয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শদাতারাই আসলে অযোগ্য। কিন্তু ধারাবাহিক ভাবে তা প্রমাণিত হলেও সরকারের ভুল শুধরে নেওয়ার কোনও সদিচ্ছা নেই। আবার অনেকের মতে, কুণালের এই বক্তব্য গোটাটাই রাজনৈতিক। যা আসলে শাসকদলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণের জন্য ‘ইঙ্গিতপূর্ণ এবং অর্থবহ’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy