কুণাল ঘোষ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কুণাল ঘোষকে শো-কজ় করল তৃণমূল। সোমবার তাঁর কাছে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সই করা শো-কজ়ের চিঠি তৃণমূল ভবন থেকে পৌঁছেছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, রবিবারেই ওই শো-কজ় করার কথা ছিল দলের। তাপস রায় সংক্রান্ত বিবিধ পরিস্থিতিতে তা করে ওঠা যায়নি। সোমবার সকাল সকাল তাই কুণালকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ঘটনাচক্রে, তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণে বক্সী কুণালের বিরোধী শিবিরের বলেই পরিচিত। বস্তুত, তাঁর বদলে বক্সীকে পূর্ব মেদিনীপুরে ‘জনগর্জন সভা’র প্রস্তুতি বৈঠকে পাঠানো নিয়ে কুণাল প্রকাশ্যেই তাঁর ক্ষোভের কথা জানিয়েছিলেন। ফলে বক্সীকে দিয়ে তাঁকে শো-কজ় করানোর সিদ্ধান্তও ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ এবং ‘বার্তাবহ’।
শো-কজ় নিয়ে কুণালের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তাঁর ফোন নিরুত্তর থেকেছে। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও কোনও জবাব মেলেনি। তবে তাঁর হিতৈষীদের বক্তব্য, বিকালের দিকে কুণাল কিছু না কিছু বলতে পারেন। তিনি কী বলবেন বা আদৌ কিছু বলবেন কি না, তা নিয়ে তৃণমূলের ভিতরে-বাইরে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই চিঠিতে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনরায় গ্রেফতার করার দাবি সম্বলিত টুইট কেন তিনি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেছিলেন? এবং সেই পোস্টে কেন ইডির ডিরেক্টর এবং সিবিআইকে ট্যাগ করেছিলেন। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করেন, এর ফলে বিজেপিকেই ‘সুবিধা’ করে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার সকালে দলের উপরে ‘অভিমানী’ তাপসকে বোঝাতে সোমবার সকালে তাঁর বউবাজারের বাড়িতে গিয়েছিলেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং দলের সদ্য প্রাক্তন মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁরা বেরিয়ে যাওয়ার পর নিজের বাসভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে দলের উপর ক্ষোভ উগরে দেন বরাহনগরের বিধায়ক তাপস। সেই ক্ষোভ জানাতে গিয়েই দলের এক ‘গোপন’ কথা প্রকাশ্যে আনেন তিনি। জানান যে, কুণালকে শো-কজ় করেছে তৃণমূল।
সোমবার তাপস বলেন, “সকালে ব্রাত্য আর কুণাল এসেছিল। ওরা আমায় ভালবাসে। ছোট ভাই। ওরা আমার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ জানাতে এসেছিল। তখনই নাকি ওকে দলের তরফে সুব্রত বক্সী শো-কজ় নোটিস পাঠিয়েছে।” তার পরই তাপসের খেদোক্তি, “এই হচ্ছে দল!” প্রসঙ্গত, সুব্রত বক্সী হলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি। শনিবারই আনন্দবাজার অনলাইনে লেখা হয়েছিল, কুণালকে শো-কজ় নোটিস পাঠাতে চলেছে তৃণমূল। যদিও কুণাল কিংবা তৃণমূলের তরফে শো-কজ় নিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে কিছু জানানো হয়নি। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদ থেকে শুক্রবার ইস্তফা দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। শনিবার মুখপাত্র পদে তাঁর ইস্তফা গৃহীতও হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনেই সবার প্রথম মুখপাত্র পদে কুণালের ইস্তফা গৃহীত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে কুণাল খানিকটা ‘বেপরোয়া’ হয়েই সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে চলেছেন বা সংবাদমাধ্যমে কথা বলে চলেছেন বলে অনেকের মত। শনিবার সন্ধ্যাতে কুণাল এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) লেখেন, ‘‘আমি তৃণমূলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম। খবর পেয়েছি, শুধু মুখপাত্র থেকে ইস্তফার অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে। দলের কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ, সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফাটিও গ্রহণ করা হোক। আমি ওই পদে থাকব না। আমি শুধু কর্মী হিসেবে থাকব।’’ কুণাল সংবাদমাধ্যমে এ-ও বলেছেন, ‘‘আমার কোনও মান-অভিমান নেই। আমি জীবনে উত্থান-পতন, স্বর্গ-নরক দেখেছি। তাই আমি সব কিছুকে স্বচ্ছ ভাবে দেখতে চাই। সেটাই হয়ে যায় মুশকিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy