গুরুঙ্গ-তামাঙ্গ দ্বৈরথে কি ফের উত্তপ্ত হবে পাহাড়? প্রশ্ন এখন এটাই। —প্রতীকী ছবি।
বন্ধ উঠছে, নাকি চলছে— এই প্রশ্নকে ঘিরে আড়াআড়ি ভেঙে গেল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। বিনয় তামাঙ্গের নেতৃত্বে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিল, ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকছে না পাহাড়ে। এই সিদ্ধান্তের ঘণ্টা দু’য়েকের মধ্যেই গোপন ডেরা থেকে পাহাড়ে অডিও-বার্তা পাঠালেন বিমল গুরুঙ্গ। জানালেন, বন্ধ চলবে। দোকানপাট খোলার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারিও দিলেন।
দীর্ঘ বন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন পাহাড়ের মানুষও। ২৯ অগস্ট নবান্নে সর্বদল বৈঠক হওয়ার পর যেই আভাস মিলেছিল যে বন্ধ উঠতে পারে, অমনি পাহাড়ের কিছু অংশে বিচ্ছিন্ন ভাবে দোকানপাট খুলতে শুরু করেছিল। পাহাড়ের মানুষ যে স্বাভাবিকতা চাইছেন, তা স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় মোর্চা নেতৃত্বের উপর চাপ বাড়ছিল। রাজ্য এবং কেন্দ্রও বন্ধ তুলতে বলছিল মোর্চাকে। চাপের মুখে বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপারা সিদ্ধান্ত নেন, পাহাড়ের অচলাবস্থা এ বার কাটাতে হবে। বৃহস্পতিবার পাহাড়ে ফিরেই তাই মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক ডাকেন বিনয় তামাঙ্গরা। বিমল গুরুঙ্গ এবং রোশন গিরি দার্জিলিঙের বাইরে থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই তাঁরা এই বৈঠকে ছিলেন না। যাঁরা বৈঠকে ছিলেন, তাঁরা বন্ধ প্রত্যাহারেরই সিদ্ধান্ত নেন। ১২ সেপ্টেম্বর উত্তরকন্যায় ফের পাহাড় নিয়ে সর্বদল বৈঠক। তাই ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ স্থগিত রাখা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
গুরুঙ্গ-পন্থীরা বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকেই পাহাড়ে বিনয় তামাঙ্গের বিরুদ্ধে জমায়েত করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ দ্রুত তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। —প্রতীকী ছবি।
আরও পড়ুন: পাহাড় খুলছে, ক্ষিপ্ত গুরুঙ্গ
বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপারা এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার পর যে গুরুঙ্গ শিবির থেকে পাল্টা ঘোষণা আসবে, তা অনেকেই আঁচ করছিলেন। হলও তেমনই। তামাঙ্গদের ঘোষণার পর ঘণ্টা দু’য়েক কাটতে না কাটতেই সামনে এল গুরুঙ্গের অডিও-বার্তা। গোপন ডেরা থেকে পাঠানো সেই বার্তায় গুরুঙ্গের ঘোষণা, পাহাড়ে বন্ধ চলবে। গুরুঙ্গ জানিয়েছেন, বন্ধ প্রত্যাহার করা হয়নি। হুঁশিয়ারির সুরে তাঁর বার্তা, যাঁরা দোকানপাট খুলবেন, তাঁরা নিজেদের দায়িত্বে খুলুন, আক্রান্ত হতে হলে দায় মোর্চা নেবে না। দিল্লি থেকে রোশন গিরিও জানিয়েছেন, বন্ধ প্রত্যাহার করা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: বৈঠকের পরদিনই ভিড়ে ঠাসা লালকুঠি
বিনয়-অনীতদের সিদ্ধান্ত এবং বিমল-রোশনদের পাল্টা হুঁশিয়ারিতে খুব স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা আড়াআড়ি ভাবে দু’ভাগ। মোর্চার এই অভ্যন্তরীণ বিভাজনে পাহাড়েও ফের রাজনৈতিক উত্তেজনা দেখা গিয়েছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই। দার্জিলিং এবং কার্শিয়াঙে গুরুঙ্গ-পন্থীরা এ দিন বিনয় তামাঙ্গের বিরুদ্ধে মিছিলও বার করে। তবে পুলিশি তৎপরতায় মিছিলগুলি বেশি দূর এগোতে পারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy