যত্ন: শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সেই ভাঙা মূর্তি থেকেই কালি মোছার চেষ্টা চলছে।
লেনিনের পাল্টা শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়!
বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ায়, কেওড়াতলা শ্মশান লাগোয়া পার্কে ঢুকে এক দল যুবক-যুবতী শ্যামাপ্রসাদের আবক্ষ মূর্তি ভেঙে দেয়। কালি মাখায়। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর এবং সম্প্রীতি ভঙ্গের অভিযোগে সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের দু’দিন পুলিশি হাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আলিপুর আদালত।
পুলিশ জানায়, সাত হামলাকারী স্লোগান দেয়, ‘ত্রিপুরায় লেনিনের মূর্তি ভাঙা হল কেন, বিজেপি সরকার জবাব দাও’। পার্কের মালি মৃত্যুঞ্জয় দাস জানান, সকাল ৮টা নাগাদ পার্কের গেট খুলতেই একটি মিছিল থেকে কয়েক জন ভিতরে ঢুকে পড়ে। তাদের হাতে ছিল ছেনি-হাতুড়ি, কালো স্প্রে। পুলিশে খবর যায়।
ভাঙচুরের পর মূর্তির পাদদেশে রেখে দেওয়া হয় এই পোস্টার। —নিজস্ব চিত্র।
পুলিশি সূত্রের খবর, ধৃতদের মধ্যে চার জন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া। তাদের কেউ কেউ র্যাডিক্যাল নামে একটি সংগঠনের সদস্য। ২০১৬ সালে জেএনইউ-কাণ্ডের বিরুদ্ধে যাদবপুরের মিছিলে জাতীয়তাবাদ-বিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে। ধৃতদের অন্যতম অভিষেক মুখোপাধ্যায়কে মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে আগে গ্রেফতার করেছিল এসটিএফ। সে-বার জেলও খাটতে হয় তাকে।
দেখুন মূর্তি ভাঙার সেই ভিডিও
;
সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মূর্তির চোখ-কান খুবলে নেওয়া হয়েছে। পড়ে আছে র্যাডিক্যালের নাম লেখা পোস্টার। ঘটনাস্থলে যান বিদ্যুৎমন্ত্রী তথা রাসবিহারী কেন্দ্রের বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের (পার্কটি যেখানে) কাউন্সিলর মালা রায়। মূর্তি ভাঙার নিন্দা করেন তাঁরা। সরকারের তরফে মূর্তি সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলায় এ জিনিস চলতে দেব না। যারা এটা করেছে, তাদের কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ মালাদেবী বলেন, ‘‘নকশাল আমলে বিদ্যাসাগরের মূর্তির উপরে হামলা হতে দেখেছি। এটা সংস্কৃতি হতে পারে না। আমাদের দল এবং নেত্রী কখনওই এটা সমর্থন করেন না।’’
বিক্ষোভ: বিজেপির আইন অমান্য আন্দোলন। গণেশ চন্দ্র অ্যাভিনিউয়ে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, ‘‘এই ধরনের তাণ্ডব বরদাস্ত করা হবে না। ধৃতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ দুপুরের পরে ভাঙা মূর্তি ঢেকে দেওয়া হয় পুলিশের তৎপরতায়। মুছে দেওয়া হয় কালো রং। তার আগে অবশ্য শ্যামাপ্রসাদের মূর্তিতে মালা দিতে আসা বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূলের লোকজন। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেয়।
আরও পড়ুন: মূর্তি ভাঙচুর দক্ষিণেও, ছাড় বিজেপি নেতাকে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy