Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Suvendu Adhikari

মোদীকে কাঁথি উপহার দিতে চান শুভেন্দু, লোকসভায় কত আসন পাবে বিজেপি, করলেন ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ও

শুক্রবার মন্দারমণির সভা থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য খুব পরিষ্কার। এ বার আমরা কাঁথির আসনটি উপহার দেব নরেন্দ্র মোদীকে।’’

শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:১৮
Share: Save:

আসন্ন লোকসভা ভোটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তাঁর বাবা শিশির অধিকারীর জেতা কাঁথি কেন্দ্রটি উপহার দিতে চান শুভেন্দু অধিকারী। ২০১৯ সালের নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে কাঁথি থেকে জিতেছিলেন শিশির। তার পর রাজনীতির জল বহু দূর গড়িয়েছে। গত বিধানসভা ভোটের আগে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বাড়ে। এখন খাতায়কলমে দলের সাংসদ হলেও, নামেই তৃণমূলে আছেন শিশির। বাকি তাঁর সবটুকুই যেন গেরুয়া শিবিরের জন্য! মোদী, অমিত শাহের সভায় যাওয়া থেকে শুরু করে বিজেপি প্রার্থী প্রচারে, সর্বত্রই তাঁকে দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে এ বারের ভোটে কাঁথি থেকে বিজেপির প্রার্থীই দিল্লি যাবেন বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন বিরোধী দলনেতা।

শুক্রবার মন্দারমণির সভা থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেন শুভেন্দু। বেঁধে দেন লক্ষ্যও। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য খুব পরিষ্কার। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে আমরা কাঁথির আসনটি উপহার দেব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।’’ তবে এর পাশাপাশি শুভেন্দু স্পষ্ট করে দেন, কাঁথিতে বিজেপি না জিতলেও তৃতীয় বারের জন্য মোদীই প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু লোকসভায় কাঁথিতে দলীয় প্রার্থীর জেতা কেন জরুরি, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিন সরকার তৈরি করা। সেই লক্ষ্যেই কাঁথিতে বিরাট ব্যবধানে জিততে হবে। পদ্মফুলের প্রার্থীকে দিল্লি পাঠাতে হবে।’’ এরই সঙ্গে শুভেন্দু দাবি করেছেন, আসন্ন লোকসভা ভোটে বিজেপি ৪০০ আসন পেয়ে আবার ক্ষমতায় আসবে।

কিন্তু ভাষণে শুভেন্দুর বলা ‘না জিতলেও’ শব্দবন্ধটি নিয়ে গোল বেধেছে। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি কাঁথিতে জেতা নিয়ে কোনও সংশয় রয়েছে বিরোধী দলনেতার মনে? এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না শাসকদল। তৃণমূল মুখপাত্র তথা পূর্ব মেদিনীপুরে দলের বিশেষ দায়িত্বে থাকা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘শুভেন্দুর মুখ ফস্কে আসল কথাটা বেরিয়ে গিয়েছে। কাঁথি যে জিতবে না সেই সংশয় প্রকাশ করে ফেলেছেন। তার পর যে উপহারের কথা বলছেন, ওটা মেকআপ দেওয়ার জন্য। শুভেন্দু নিজেও জানেন, কাঁথি হারবেন।’’

তবে বিজেপি কোন অঙ্কে কাঁথিতে এগিয়ে রয়েছে, শুভেন্দু নিজেই তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘২০২১ সালের বিধানসভায় কাঁথির অধিকাংশ আসনেই বিজেপি জিতেছে। রাজ্যের যে লোকসভাগুলিতে বিধানসভার নিরিখে দল এগিয়ে, কাঁথি তার মধ্যে একটি।’’ প্রসঙ্গত, গত লোকসভা নির্বাচনে কাঁথিতে তৃণমূল পেয়েছিল ৫০.৩০ ভোট। আর বিজেপির ঝুলিতে আসে ৪২.৪০ শতাংশ। শিশির জিতেছিলেন এক লাখ ১১ হাজার ৬৬৮ ভোটে। কিন্তু অধিকারী পরিবারের সঙ্গে শাসকদলের সম্পর্ক ‘তিক্ত’ হয়ে যাওয়ার পরেও গত বিধানসভা ভোটে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভাগুলিতে ভাল ফল করে বিজেপি। সাতটির মধ্যে চারটিতে জয় পেয়েছিল বিজেপি। বাকি তিনটিতে দ্বিতীয় স্থানে। তার নিরিখে কাঁথি লোকসভা আসনে তাঁরা খানিকটা এগিয়েই রয়েছেন বলে মত শুভেন্দুর।

অন্য দিকে, দলের একটি অংশ অবশ্য মনে করছে, লোকসভাকে পাখির চোখ করে কাঁথিতে দলের প্রস্তুতি ততটাও ‘সন্তোষজনক’ নয়। গত পুরভোটে কাঁথিতে খারাপ ফল করেছে বিজেপি। কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের পঞ্চায়েতগুলিতেও যে একচেটিয়া ভাল ফল হয়েছে, তা-ও বলা যাবে না। সেখানেও শাসক তৃণমূলের সঙ্গে সমানে সমানে চক্কর চলেছে। এর পরেও কাঁথির সব বুথে এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি তৈরি হয়নি। কাঁথি লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভায় ১,৬০০ র কাছাকাছি বুথ রয়েছে। তার মধ্যে এখনও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি ৭০ থেকে ৭২টি বুথে। মূলত সংখ্যালঘু এবং সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় এই সমস্যা রয়েছে বলে দাবি ওই দলীয় সূত্রের। তবে বিজেপির এক জেলার নেতার কথায়, ‘‘কাঁথিতে দলের জেতার সব রকম সম্ভাবনা রয়েছে। সেই ভাবে বলতে গেলে উনিশ-বিশের ব্যবধান। কাঁথিতে একটু নজর দিলেই যে জেতা সম্ভব, তা সকলেই বুঝতে পারছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও গুরুত্ব দিচ্ছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Suvendu Adhikari BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy