সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজোর দিনগুলোতে শহর কলকাতা এবং জেলার সমস্ত বড় মণ্ডপের বাইরে বিশেষ ‘ডিউটি’ পড়তে চলেছে বিজেপির নেতা কর্মীদের। পুজোর এক মাস আগেই দলের কর্মীদের সেই কর্তব্য বুঝিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার ৬ নম্বর মুরলীধর সেন লেনে বিজেপির পুরনো দফতরে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। সেখানেই তিনি জানান, পুজোর মণ্ডপের বাইরে কর্তব্যরত বিজেপি নেতা-কর্মীদের কাজ হবে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ করা। তবে শুধু সেটুকুই নয়, পুজোর ক’দিন বিজেপির নেতা এবং কর্মীদের এ ছাড়াও আরও একটি দায়িত্ব দিয়েছেন শুভেন্দু।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে আন্দোলন চলাকালীন তৃণমূলের বিভিন্ন নেতার মন্তব্যে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে শাসকদলকে। শুভেন্দু শুক্রবার বলেছেন, ‘‘ওই সমস্ত মন্তব্য নারীবিরোধী। আর তা পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে ভুলতে দেওয়া চলবে না। পুজোর সময় ওই সমস্ত মন্তব্যের রেকর্ডিং বাজবে।’’
কাদের রেকর্ডিং বাজবে, তার একটা তালিকাও তৈরি করে ফেলেছে বিজেপি। সেই তালিকায় তৃণমূলের রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ থেকে শুরু করে সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার-সহ তৃণমূলের ১১ জন প্রথম সারির নেতা রয়েছেন। শুভেন্দু জানিয়ে দিয়েছেন, দেবীপক্ষ চলাকালীন ওই সমস্ত তৃণমূল নেতার নারী বিরোধী মন্তব্য মনে করানোর দায়িত্বও নিতে হবে ‘কর্তব্যরত’ বিজেপির নেতা-কর্মীদের।
সম্প্রতিই তৃণমূলের সাংসদ তথা চিকিৎসক কাকলি ঘোষদস্তিদার আরজি কর-কাণ্ডের আবহে করা তাঁর একটি মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। এক বিতর্কসভায় কাকলি বলেছিলেন, ‘‘ছাত্রীদের কোলে বসিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার একটা চল শুরু হয়েছিল। যার আমি তীব্র নিন্দা করি, ঘৃণা করি।... কিন্তু কোলে বসিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার চলটা যে এখানে এসে দাঁড়াবে, উৎকোচ নিয়ে পাশ করানো হবে, কিংবা কেউ মুখ খোলার সাহস দেখালে যে তার থিসিস আটকে দেওয়া হবে, এমনটা আমি ভাবতে পারিনি।’’ সেই মন্তব্যের পর কাকলিকে নিয়ে তৈরি হয় বিতর্ক! যার জেরে ক্ষমা চাইতে হয় শাসকদলের সাংসদকে। কিছু দিন আগে তৃণমূলের মন্ত্রী উদয়নও বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা মনে করছেন যে, কিছু ছাত্রছাত্রীকে ভুল বুঝিয়ে রাত দখল করে পশ্চিমবাংলার নবান্ন দখল করবেন, তাঁরা জেনে রাখুন তাঁদের জন্য শুধু ওই রাতের অন্ধকারটুকুই থাকবে। দিনের আলো আপনারা দেখতে পাবেন না। দিনের আলো আপনাদের জন্য থাকবে না।’’ শুভেন্দু ওই সমস্ত মন্তব্যকেই ‘নারী বিরোধী’ মন্তব্য বলে উল্লেখ করে তার রেকর্ডিং বাজানোর কথা বলেছেন।
এর পাশাপাশিই শুভেন্দু জানিয়েছেন, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে একসঙ্গে এক দিনে যে নবান্ন-লালবাজার-কালীঘাট অভিযানের কথা বলেছিলেন তিনি, সেই অভিযানের দিনক্ষণও শীঘ্রই জানানো হবে। আপাতত ধর্মতলায় ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ধর্নার যে কর্মসূচি আছে, তা চলবে। তার পরে ১৭ তারিখ একটি বৈঠক ডেকেছে বিজেপি। সেখানে পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা হবে। তার আগে আপাতত পুজোর সময়ের কর্মসূচির কথা জানিয়ে দিলেন শুভেন্দু। একই সঙ্গে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলেছেন, ‘‘ধর্মতলার ধর্না শেষ হলেও গোটা সেপ্টেম্বর মাসটাই বিজেপির নেতা-কর্মীরা প্রত্যেকটি বাজার, স্টেশন এবং বাসস্ট্যান্ডে পথসভা করবেন। এ ছাড়াও নানা কর্মসূচি চালিয়ে নিয়ে যাবেন।’’ অর্থাৎ, পুজোর আগে এবং পুজোর সময়েও আরজি কর আন্দোলনের জের মিটতে না দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েই আপাতত এগোতে চায় বিজেপি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy