Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2020

আসন্ন বিধানসভা ভোটে লড়ার ইচ্ছাই নেই, জানালেন শুভেন্দু অধিকারী

শুভেন্দুর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আরও একবার মুখ খুলেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

সখ্য: পূর্বস্থলীতে বিজেপির সভায় শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

সখ্য: পূর্বস্থলীতে বিজেপির সভায় শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল

কেদারনাথ ভট্টাচার্য ও প্রণব দেবনাথ
পূর্বস্থলী ও কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৩৮
Share: Save:

তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার দিন থেকেই গুঞ্জন— নতুন দল তাঁকে কী ভাবে ব্যবহার করবে? জল্পনায় এমনকি আগামী নির্বাচনে তাঁকে দলের ‘মুখ’ হিসেবে তুলে ধরার কথাও ভেসে উঠছে।

যদিও এখন পর্যন্ত এ সবের কোনও সমর্থন মেলেনি। তবে অন্য রকম জল্পনা উস্কে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী নিজেই মঙ্গলবার জানিয়ে দিলেন, আসন্ন বিধানসভা ভোটে লড়ার ইচ্ছাই তাঁর নেই। এ দিন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে বিজেপির মঞ্চে তাঁর প্রথম জনসভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘পার্টিকে বলব, আমাকে এমএলএ টিকিট দেওয়ার দরকার নেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৬ ঘণ্টা খাটব। যেখানে বলবে, সেখানে যাব। এদের ( তৃণমূল) বিসর্জন দিতে, যা করার করব।’’ এই সূত্রেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘অমিত শাহ বিএসএফকে দিয়ে টাইট দিয়ে দিয়েছেন। পাথর, বালি, গরু, কয়লা পাচার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ বার যদি ওরা জিততে পারে, কিডনি পাচার করবে। সেটাই শুধু বাকি আছে।’’ রবিবার বিজেপিতে যোগ দিয়ে যে অভিযোগ তুলেছিলেন এ দিনও তাঁরই পুনরাবৃত্তি করে তিনি বলেন, ‘‘অমিতজি (শাহ), দিলীপদা ( ঘোষ), কৈলাসজিকে (বিজয়বর্গীয়) সবাইকে বলেছি, আমার একটাই শর্ত— তোলাবাজ ভাইপোর হাত থেকে বাংলাটাকে বাঁচান।’’

আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় সংস্থা সায় দিলে পিয়ারলেসে পরীক্ষা রুশ টিকার

আরও পড়ুন: ট্যাব কিনতে টাকা দেবে সরকার

শুভেন্দুর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আরও একবার মুখ খুলেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আপনি কি নন্দীগ্রামে প্রার্থী হতে পাচ্ছেন? পায়ের তলায় জমি নেই তা বুঝতে পেরে গিয়েছেন!’’ তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘তোলাবাজ কে হলদিয়ার মানুষ তা জানেন। হলদিয়ায় কান পাতলে সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’

এ দিন পূর্বস্থলীতে সভা ছিল বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। সেখানে অন্যতম বক্তা হয়ে শুভেন্দু কার্যত আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেন। তাঁর পরে বক্তৃতা দিয়ে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘শুভেন্দু বিজেপির সাধারণ কর্মী হিসেবে আজ এখানে এসেছেন। তাঁর ওপেনিং ব্যাটিং আমরা দেখলাম।’’
যে নন্দীগ্রাম আন্দোলন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতায় আসার পথ প্রশস্ত করেছিল, তাঁর ‘কৃতিত্ব’ শুভেন্দু আজ বিজেপিকে অর্পণ করেন। তাঁর দাবি, ‘‘৬২ দিন ধরে লোকসভা, রাজ্যসভা অচল করে নন্দীগ্রাম গণহত্যা যদি কেউ দিল্লিতে আলোচনার জায়গায় পৌঁছে দেয়, তার নাম বিজেপি। সিঙ্গুরের অনশন মঞ্চে ফলের রস যিনি খাইয়েছিলেন, তাঁর নাম রাজনাথ সিংহ।’’

২০১১ সালেও তৃণমূলের সরকার গড়ার পিছনেও বিজেপির হাত ছিল বলে দাবি করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘যে কংগ্রেস ভেঙে মমতা তৃণমূল করেছিলেন, সেই কংগ্রেসের হাত ধরতে হয়েছিল ২০১১-তে। আমি জানি, বিজেপি নেতারা সে দিন বলেছিলেন, ‘পারলে পদ্মফুলে দাও, না পারলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দাও। কারণ এই অত্যাচারী কমিউনিস্ট রাজ খতম হওয়া দরকার আছে’। তাই পরোক্ষ ভাবে সেই নির্বাচনে বিজেপিরও ভূমিকা ছিল। পরিবর্তন হয়েছিল।’’ ‘বিজেপির আশ্রয়’ না থাকলে ১৯৯৮ সালে তৈরি মমতার তৃণমূল ২০০১ সালের আগে উঠে যেত বলেও অভিমত শুভেন্দুর।
শুভেন্দু যে সরকারে ২০১৬ থেকে এতদিন এক টানা মন্ত্রী ছিলেন এ দিন তার সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘আজ যমের দুয়ারে সরকার। এরা সব সব স্থায়ী চাকরি তুলে দিয়েছে। ২০১৪ থেকে এসএসসি বন্ধ। টেটে কেলেঙ্কারি। গোটা বাংলায় দু’কোটি বেকার।’’

বিজেপির সভায় তৃণমূল ছাড়ার ব্যাখ্যা দিয়ে শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘‘এই দলটা প্রাইভেট কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। দেড় জন মিলে চালাচ্ছে। যাঁদের আত্মসম্মান আছে, তাঁরা তৃণমূল করতে পারেন না। তাই আমি বেরিয়ে এসেছি।’’

এর আগে কেতুগ্রামের সভায় পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকদের দিকে আঙুল তুলে দিলীপবাবুর স্বভাবসুলভ হুমকি, ‘‘মানুষকে বিনা কারণে যাঁরা কষ্ট দিচ্ছেন, তাঁদের ছাড়া হবে না। প্রত্যেকের নামের তালিকা করা হচ্ছে। আপনাদের কপালে কষ্ট জমা হচ্ছে। বাকি জীবন শান্তিতে থাকতে পারবেন না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy