বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের জন্য শিক্ষক নিয়োগে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের সব রাজ্যকে পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই সংক্রান্ত মামলায় সম্প্রতি বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চের নির্দেশ, আগামী ২৮ মার্চের মধ্যে রাজ্যে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের শিক্ষণে উপযোগী শিক্ষকের পদসংখ্যা নির্দিষ্ট করে বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা করতে হবে। তারপরে এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিতে হবে এবং রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার (আরসিআই) নিয়ম মেনে নিয়োগ করতে হবে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকেরা কর্মরত থাকলে তাঁদেরও যোগ্যতা যাচাই করে স্থায়ী শিক্ষকের বেতন দিতে হবে। পুরো প্রক্রিয়া রায় ঘোষণার ১২ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
এই মামলায় আবেদনকারীদের মধ্যে অন্যতম গৌরাঙ্গকুমার দাস জানান, পশ্চিমবঙ্গেও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের জন্য চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকেরা আছেন। যোগ্যতা অনুসারে নিয়োগের মাধ্যমে তাঁরা স্থায়ী পদের বেতন পাবেন। আদালতের নির্দেশ, যোগ্যতা যাঁচাই উত্তীর্ণ হওয়ার পর থেকেই স্থায়ী পদে নিয়োগের বেতনক্রমে যুক্ত হবেন তাঁরা। বেতনের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী চাকরির কোনও অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে না। তবে বহু বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক পদে নিযুক্তদের বয়সজনিত ছাড় দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত জানতে চেয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার কোর্টে জানিয়েছে যে, প্রাথমিক স্তরে ১০ জন পড়ুয়াপিছু ১ জন শিক্ষক এবং মাধ্যমিক স্তরের ক্ষেত্রে ১৫ জন পড়ুয়াপিছু ১ জন শিক্ষক থাকতে হবে। বিভিন্ন রাজ্যে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়ার সংখ্যাও কোর্টে জমা পড়েছে। আদালত সূত্রের খবর, সব থেকে বেশি পড়ুয়া উত্তরপ্রদেশে (প্রায় তিন লক্ষ) এবং তার পরেই পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্যে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৩৫ হাজার।
কোর্ট এ-ও জানিয়েছে যে, কিছু রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরেই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকেরা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন পড়ুয়াদের পড়াচ্ছেন। তাই নিয়োগের ক্ষেত্রে ওই শিক্ষকদেরও বেতনক্রমের আওতায় আনতে বলেছে কোর্ট। এঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতা যাচাই কমিটিতে কারা থাকবেন, তা-ও স্থির করে দিয়েছেন বিচারপতিরা। নির্দেশে বলা হয়েছে যে, রাজ্যের প্রতিবন্ধী কমিশনার, শিক্ষা সচিব এবং আরসিআই-এর এক প্রতিনিধি থাকবেন। রাজ্যের প্রতিবন্ধী কমিশনারের পদ খালি থাকলে রাজ্যের ল’ রিপ্রেজ়েন্টেটিভ বা আইন সচিব কমিটিতে থাকবেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)