প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। সেই জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন নিয়ে আবার উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেন সুজয়কৃষ্ণ। শুক্রবার হাই কোর্টের বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁর আইনজীবী। জানান, অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পাশাপাশি, আদালতের নির্দেশে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী সুজয়কৃষ্ণের বাড়িতে নজরদারির দায়িত্বে রয়েছে, তাদের আচরণ নিয়েও আপত্তি তুলেছেন সুজয়কৃষ্ণ। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামী সোমবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট থেকে অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। আদালত জানিয়েছিল, মামলাকারীর শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে এবং মানবিক কারণে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করা হচ্ছে। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ৩১ মার্চ। তার আগেই তাই মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন নিয়ে সুজয়কৃষ্ণ আদালতের দ্বারস্থ হলেন।
আরও পড়ুন:
অন্তর্বর্তী জামিনের প্রেক্ষিতে সুজয়কৃষ্ণকে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছিল আদালত। বলা হয়েছিল, চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনও কারণে তিনি বাড়ির বাইরে বেরোতে পারবেন না। রাজনৈতিক ব্যক্তি বা বাইরের কারও সঙ্গে তিনি দেখা করতে পারবেন না। তাঁর উপর সর্ব ক্ষণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারি থাকবে। নজরদারি চালাবেন নিয়োগ মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আধিকারিকেরাও। সুজয়কৃষ্ণের দু’টি মোবাইল নম্বর সিবিআইকে দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কোনও সময়ে বাইরে বেরোতে হলে সিবিআইয়ের কাছ থেকে তাঁকে অনুমতি নিতেও বলা হয়েছিল। সেই থেকে সুজয়কৃষ্ণ তাঁর বেহালার বাড়িতে রয়েছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা সেখানে নজরদারি চালান। তাঁদের আচরণ নিয়ে আপত্তি তুলেছেন সুজয়কৃষ্ণ। স্বাস্থ্যের কারণেই অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেছেন।
নিয়োগ মামলায় ২০২৩ সালে সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। পরে একই মামলায় তাঁকে সিবিআই গ্রেফতার করে। দীর্ঘ দিন তিনি জেলে ছিলেন। একাধিক আর্থিক তছরুপ এবং দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সুজয়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে। লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস নামক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন তিনি। এই সংক্রান্ত চার্জশিটে সিবিআই তাঁর নাম উল্লেখ করেছে। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে একটি অডিয়ো হাতে পেয়েছে সিবিআই। অভিযোগ, তাতে সুজয়কৃষ্ণ-সহ আরও কয়েক জনের কণ্ঠস্বর শোনা গিয়েছে। সেই অডিয়োর সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে সুজয়কৃষ্ণের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তা দিল্লিতে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।