প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের মামলায় আবার আদালতে জামিন চাইলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর আইনজীবী শুক্রবার জানান, পার্থ গুরুতর অসুস্থ। বৃহস্পতিবার থেকে তিনি অক্সিজেন সাপোর্টে রয়েছেন। পার্থের বিরুদ্ধে সিবিআই যে তিনটি মূল অভিযোগ এনেছে, তার পাল্টা যুক্তিও দিয়েছেন আইনজীবী। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন সিবিআইকে এই সংক্রান্ত কেস ডায়েরি আনতে বলেছে আদালত।
কলকাতার বিচার ভবনে শুক্রবার পার্থের জামিন মামলার শুনানি ছিল। তাঁর আইনজীবী জানিয়েছেন, প্রাথমিকের মামলায় ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর পার্থকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ (গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিকে পুনরায় গ্রেফতারির প্রক্রিয়া) করেছিল সিবিআই। তার পর ১৫ অক্টোবর জেলে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পর থেকে সিবিআই আর কোনও জেরা করেনি। সিবিআইয়ের অভিযোগ, ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীদের নামের তালিকার উপর বিভিন্ন নির্দেশমূলক মন্তব্য লিখে দিতেন পার্থ নিজে। তার পর সেই লেখা অন্য একটি কাগজে নকল করতেন এক মহিলা। পার্থের হাতের লেখা উদ্ধার করা না-গেলেও ‘অনুলিখন’ উদ্ধার হয়েছে বলে চার্জশিটে জানিয়েছে সিবিআই। ওই মহিলার সঙ্গেও তারা কথা বলেছে। শুক্রবার আদালতে কেন্দ্রীয় সংস্থার এই দাবির বিরোধিতা করেছেন পার্থের আইনজীবী। তাঁর যুক্তি, পার্থের হাতের লেখা উদ্ধার করা যায়নি। ফলে এই অভিযোগের প্রমাণ নেই।
আরও পড়ুন:
সিবিআইয়ের অভিযোগ, একটি প্রার্থিতালিকায় ১৫টি নাম আলাদা করে ঢুকিয়ে দিতে বলেছিলেন পার্থ। ৭০০ জনের বেশি চাকরিপ্রার্থীর নাম ছিল ওই তালিকায়। পার্থের আইনজীবী জানান, এই অভিযোগের সপক্ষে কোনও নথি দেখাতে পারেনি কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাদের হাতে আছে কেবল পার্থের তৎকালীন ওএসডি প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়ান। তা যথেষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন আইনজীবী।
প্রবীরের বয়ান নিয়ে আরও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। আইনজীবীর বক্তব্য, ২০২২ সাল থেকে এই মামলা চলছে। একাধিক বার প্রবীরকে তলব করেছিল সিবিআই। কিন্তু আগে এই সংক্রান্ত কোনও কথাই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে জানাননি তিনি। প্রার্থীদের নামের তালিকাটি উদ্ধার হওয়ার পরে গত বছর অগস্ট মাসে এই সংক্রান্ত বয়ান দেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২০২২ সালে পার্থকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তবে প্রাথমিক মামলায় গত বছরের অক্টোবরে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। এই মামলায় কেন্দ্রীয় সংস্থা যে চার্জশিট জমা দিয়েছে, তার ছত্রে ছত্রে রয়েছে পার্থের নাম। প্রাথমিকে ইডির মামলা থেকে আগেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন পার্থ। সিবিআইয়ের মামলা এখনও চলছে।