Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

সাজা চেয়ে সওয়াল কি সারদাকর্তার আইনি কৌশল

আদালত সূত্রে খবর, সম্প্রতি বারাসত বিশেষ আদালত, হাওড়া ও সিউড়ি আদালতে সুদীপ্ত বিচারককে বলেছেন, ‘‘আমি দোষী। আপনি ব্যবস্থা নিন।’’

সুদীপ্ত সেন। ফাইল চিত্র।

সুদীপ্ত সেন। ফাইল চিত্র।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০৯
Share: Save:

তিনি দোষী এবং সর্বস্বান্ত—এ কথা বলে রাজ্য সরকারের করা আর্থিক প্রতারণার মামলায় নিজেই সওয়াল শুরু করছেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন।

আদালত সূত্রে খবর, সম্প্রতি বারাসত বিশেষ আদালত, হাওড়া ও সিউড়ি আদালতে সুদীপ্ত বিচারককে বলেছেন, ‘‘আমি দোষী। আপনি ব্যবস্থা নিন।’’ সরকারি আইনজীবীদের মতে, ‘ব্যবস্থা-নিন’ এর অর্থ সাজা ঘোষণা করুন। তবে সুদীপ্ত এখনও কোনও আদালতে লিখিত হলফনামা জমা দেননি বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। তিনি আইনজীবীর খরচ যোগাতে পারছেন না বলেও ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন সুদীপ্ত। সম্প্রতি বারাসত বিশেষ আদালতে রাজ্য ‘লিগাল এড’-এর আইনজীবীর সাহায্য নিয়েছিলেন তিনি।

আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সারদা কাণ্ডে ২০১৩ সালে রাজ্য সরকারের তরফে রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জেলায় সুদীপ্ত সেনের বিরুদ্ধে ২৯৩টি মামলা করা হয়েছিল। ১৯৫টি মামলা একত্র করে চারটি মামলা দায়ের করে সিবিআই। সুদীপ্তের বিরুদ্ধে রাজ্যের করা ৯৮টি মামলার শুনানি চলছে। বিধাননগর (উত্তর) থানার একটি মামলায় ২০১৪ সালে বিধাননগর মহকুমা আদালতের বিচারক সুদীপ্ত সেনকে তিন বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ২০১৭ সালে ওই সাজা মকুব হয়ে গিয়েছে। কারণ, সুদীপ্ত জেল হেফাজতেই রয়েছেন। সে ক্ষেত্রে আইনের চোখে সুদীপ্তের ওই মামলায় জেল খাটা হয়ে গিয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, সুদীপ্ত সেনের আচমকা এখন এমন আচরণ কেন? সরকারি আইনজীবীদের একাংশের মতে, এটা তাঁর আইনি কৌশলও হতে পারে। সুদীপ্তের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণা ধারায় মামলা দায়ের করেছে রাজ্য সরকার। ওই মামলার ধারা অনুযায়ী, সাজার মেয়াদ সাত বছর কারাদণ্ড। ২০১৩ সালের এপ্রিল এবং মে মাসেই রাজ্যের তরফে সব মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে সাজা ঘোষণা করা হলে তিনি ২০২০ সালের এপ্রিল মাসের পর রাজ্য সরকারের মামলাগুলি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। কারণ, ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে তিনি সাত বছর জেলেই রয়েছেন। কিন্তু আইনজীবী মারফত ওই সব মামলায় জামিন নিতে হলে প্রতি মামলায় জামিনদার ও ‘বেল-বন্ড’ বাবদ কয়েক লক্ষ টাকা জমা দিতে হবে। সঙ্গে আইনজীবীর খরচও বহন করতে হবে।

রাজ্য সরকারের মামলায় তিনি আইনজীবীর খরচ যোগাড় করতে পারছেন না বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন সুদীপ্ত। তবে সিবিআই ও ইডির মামলায় সুদীপ্তের আইনজীবী রয়েছেন। সেই আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী রাজ্য সরকারের দায়ের করা মামলার বিষয়ে মন্তব্য করেননি। তবে তিনি বলেন, ‘‘সুদীপ্ত আমাকে বেশ কয়েক মাস জেল থেকে ফোন করা বন্ধ করেছেন। আদালতে আসার পর আমার সঙ্গে মামলার বিষয়ে কথা বলেন। শুনেছি, টাকার অভাবে জেল থেকে ফোন করতে পারছেন না।’’

যদিও প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার সূত্রের খবর, সুদীপ্ত দু’টি নম্বরে নিয়মিত ফোন করেন। সংশোধনাগারের নিয়ম অনুযায়ী, বিচারাধীন বন্দিরা মাসিক ২০০ টাকা জমা দিলে তিনটি নম্বরে মোট ৫০ মিনিট ফোন করতে পারেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Sudipta Sen Saradha Scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy