মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী। রয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও। মঙ্গলবার মেদিনীপুরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
এত দিন পুরস্কারে মিলত মোটরবাইক, মোবাইল, মিউজিক সিস্টেম। এ বার মিলবে সরকারি চাকরিও। জঙ্গলমহল কাপ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সফলদের কোনও না কোনও সরকারি চাকরি দেওয়া হবে বলে মঙ্গলবার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন মেদিনীপুর শহরে জঙ্গলমহল কাপ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ এবং জঙ্গলমহল উত্সবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশ আয়োজিত এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় একক ও দলগত ভাবে পুরস্কার প্রাপকের সংখ্যা ৫৫৩ জন। এঁদের সকলকেই সরকারি চাকরি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চ থেকে তাঁর ঘোষণা, ‘‘৫৫৩ জনকে চাকরি দেওয়া হবে। হয়তো বড় চাকরি দিতে পারব না। তবে কোনও না কোনও চাকরি সরকার থেকে পাবেন। ছোট হলেও পাবেন। এটা আজ থেকে সিস্টেম করলাম।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, জঙ্গলমহল দিয়ে এই প্রক্রিয়া শুরু হল। এতে আগামী দিনে ছেলেমেয়েদের মধ্যে খেলাধুলোয় উত্সাহ বাড়বে। আজ, বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কথা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম— এই পাঁচ পুলিশ জেলা নিয়ে হয়ে আসছে জঙ্গলমহল কাপ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। এ বছর ফুটবল, কবাডি, তিরন্দাজি-সহ বিভিন্ন ইভেন্টে পাঁচ জেলার প্রায় ৪৫ হাজার ছেলমেয়ে প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিলেন। তার মধ্যে ৫৫৩ জন কোনও না কোনও বিভাগে সফল হয়েছেন। যেমন পশ্চিম মেদিনীপুরে পুরুষ বিভাগে সেরা ফুটবলার মেঘনাদ হেমব্রম, মহিলা বিভাগে ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সেরা ফুটবলার মমতা হাঁসদা। মেঘনাদ, মমতারা বলছেন, “দারুণ পদক্ষেপ। চাকরিটা আমাদের সত্যিই দরকার।”
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরেই তৃণমূল সরকার জঙ্গলমহলের প্রচুর যুবক-যুবতীকে পুলিশে চাকরির সুযোগ করে দিয়েছিল। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, “এর আগেও জঙ্গলমহলের ছেলেমেয়েদের পুলিশে নিয়েছি, হোমগার্ডে নিয়েছি, সিভিক ভলান্টিয়ারে নিয়েছি। সিভিক ভলান্টিয়ার চাকরিও খারাপ নয়। এখন ৬০ বছর পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। যারা ভাল করে কাজ করবে, তারা সুযোগ পাবে।”
যদিও বিরোধীরা এ নিয়ে বিঁধতে ছাড়ছে না। সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক তরুণ রায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এ ভাবে জঙ্গলমহলের যুবক-যুবতীদের মধ্যে মোহ তৈরির চেষ্টা করছেন। কিন্তু এতে কাজের সুযোগ তৈরি হয় না।’’ বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি অরূপ দাসেরও মন্তব্য, “রাজ্যে বহু কলকারখানা বন্ধ। বেকারত্ব বাড়ছে। এ সব ফাঁপা প্রতিশ্রুতি।”
এ দিনের অনুষ্ঠানে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ অবশ্য বলেন, “আমাদের পরমপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী বাংলার অন্তরাত্মা। ওঁর জাদু স্পর্শে এই প্রতিযোগিতা আরও বড় হবে।” পাল্টা প্রশংসা ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেও বলতে শোনা যায়, “ভারতী আজকের প্রোগ্রামটা বেশ ভাল ভাবে আয়োজন করেছে। খুব সুন্দর।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy