ফাইল চিত্র।
দশ হোক বা পনেরো, নম্বর কিছু বাড়বে— এই আশায় বুক বেঁধেই রিভিউ বা পুনর্মূল্যায়নের আবেদন। কিন্তু এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের মার্কশিট সংশোধন বা রিভিউয়ের জন্য আবেদন করে এখনও পরিবর্তিত মার্কশিট হাতে পাননি অনেকেই। অথচ কলেজে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সংশোধনের জন্য উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদে মার্কশিট জমা দিয়েছেন, এমন অনেক ছাত্রছাত্রীর অভিযোগ, নতুন মার্কশিট না-আসায় তাঁরা কলেজে ভর্তির জন্য আবেদনই করতে পারছেন না। কলেজে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করার শেষ তারিখ ২০ অগস্ট। কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেই সময়সীমা তার আগে শেষ হচ্ছে। পড়ুয়ারা তাই চিন্তিত।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস ২ অগস্ট বলেছিলেন, সংশোধন বা রিভিউয়ের জন্য প্রায় ১৪ হাজার মার্কশিট জমা পড়েছে। খুব দ্রুত সেগুলো খতিয়ে দেখে স্কুলগুলিতে সংশোধিত মার্কশিট পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সংসদ সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই কিছু সংশোধিত মার্কশিট স্কুলে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, বেশির ভাগ সংশোধিত মার্কশিট পাঠানো বাকি।
নদিয়ার কল্যাণীর পান্নালাল ইনস্টিটিউশনের ছাত্র সপ্তর্ষি দত্ত জানান, উচ্চ মাধ্যমিকে তিনি ৪৬১ নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে যে-ভাবে মূল্যায়ন হয়েছে, তাতে তাঁর নম্বর হওয়া উচিত ৪৮৪। “মার্কশিট সংশোধন করতে দিয়েছি। পরিবর্তিত মার্কশিট না-আসায় কলেজে আবেদনই করতে পারছি না। আমাদের স্কুলের আরও অনেকেই মার্কশিট সংশোধন করতে দিয়েছে। কেউই পায়নি। দুঃশ্চিন্তায় আছি,” বলেন সপ্তর্ষি। ওই ছাত্রের বাবা সুভাষচন্দ্র দত্ত বলেন, “ছেলের অঙ্ক নিয়ে পড়ার ইচ্ছা। ও যে-সব কলেজে আবেদন করতে চায়, তার মধ্যে সেন্ট জেভিয়ার্সও রয়েছে। কিন্তু সেখানে আবেদনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে ২০ তারিখের অনেক আগে। ২০ তারিখের আগে মার্কশিট হাতে না-পেলে ও কি এক বছর পিছিয়ে পড়বে?”
অনেক ছাত্রছাত্রী বা তাঁদের অভিভাবকের দাবি, তাঁর ছেলে বা মেয়ের নম্বর অনেক বাড়বে। কলেজে ভর্তির বিষয়টি চূড়ান্ত নম্বরের উপরে নির্ভর করছে অনেকটাই। যেমন সায়ন্তন রায় নামে নদিয়ার এক ছাত্রের বাবা মলয় রায় বলেন, “এ বারের মূল্যায়ন-পদ্ধতি অনুযায়ী আমার ছেলের ১৬ নম্বর বাড়ার কথা। কিন্তু মার্কশিট সংশোধন করতে দিয়ে এখনও নতুন মার্কশিট পাইনি। এ দিকে আবেদন করতে গিয়ে জানতে পেরেছি, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ২০ অগস্টের আগেই ফর্ম পূরণ করতে হবে। সমস্যায় পড়েছি।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের চাঁইপাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহনকুমার মাইতি জানান, তাঁদের স্কুলের ৪৩ জন পড়ুয়া মার্কশিট সংশোধন করতে দিয়েছেন। কিন্তু কেউই এখনও সংশোধিত মার্কশিট হাতে পাননি। “গত ২৭ জুলাই সংসদে মার্কশিটগুলো জমা দিয়ে এসেছি। এখনও হাতে পেলাম না। স্কুলের ছাত্র, অভিভাবকেরা চিন্তিত হয়ে বার বার ফোন করছেন। ওঁদের কোনও উত্তর দিতে পারছি না,” বলেন মোহনবাবু। তাঁর দাবি, হয় সব সংশোধিত মার্কশিট দ্রুত স্কুলে পাঠানো হোক অথবা ২০ অগস্টের বদলে কলেজে আবেদনের সময়সীমা কিছুটা বাড়ানো হোক।
সংশোধিত মার্কশিট কবে সব আবেদনকারী পড়ুয়ার কাছে পৌঁছবে, তা জানতে সংসদ-সভানেত্রীর সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি এসএমএসেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy