উইকেট হাতে অভিযুক্ত অচিন্ত্য বাগদী। নিজস্ব চিত্র
জেএনইউ-এর পরে এবার বিশ্বভারতীর ক্যাম্পাসে রাতের অন্ধকারে বাম ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠল। শুধু ক্যাম্পাসেরই নয়, অভিযোগ হামলাকারীরা হাসপাতালে ঢুকেও মারধর করেছে বাম ছাত্রদের। এসএফআইয়ের দাবি, এবিভিপির তরফেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এবিভিপি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলছে অভিযুক্তরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিল। এবিভিপিকে দায়ী করছে তৃণমূলও। ছাত্রদের একাংশ আবার আঙুল তুলছেন উপাচার্যের দিকে। তাঁদের মতে, অভিযুক্তরা উপাচার্যের ছায়াসঙ্গী, যা হয়েছে তাতে মদত রয়েছে উপাচার্যেরই। তাঁরা বলছেন, ক্যাম্পাসে এনআরসির সমর্থনে হওয়া সভার বিরোধিতারই মাশুলই দিতে হচ্ছে বামছাত্রদের।
এ দিন তৃণমূলের তরফ টুইটারে দাবি করা হয়, বিশ্বভারতীতে হামলায় জড়িত অভিযুক্তরা সকলে এবিভিপির সদস্য। দ্রুত পুলিশি তৎপরতার ও গ্রেফতারির আবেদনও জানানো হয় প্রশাসনকে। এসএফআই-এর তরফে একই দাবি করা হয়।
তৃণমূলের টুইট:
On behalf of all peace loving citizens,especially students,we strongly condemn the violent acts of students affiliated to BJP on hallowed portals of Visva Bharati, a central Univ campus. We welcome swift action taken by police & appeal to admin to continue action to book culprits
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) January 16, 2020
বুধবার রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একাধিক পোস্টে জানা যায়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যাভবন সিনিয়র বয়েজ় হস্টেলে ঢুকে অন্তত দু’জন ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করে বহিরাগতেরা। রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় আহতদের। সেখান থেকেও ভিডিয়ো পোস্ট করে এক ছাত্র দাবি করেন, রড-উইকেট-কাঠের তক্তা দিয়ে প্রথমে পূর্বপল্লির রাস্তায় এবং পরে হস্টেলে ঢুকে তাঁদের মারা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিয়োয় মারমুখী বেশ কয়েক জনকে দেখাও গিয়েছে ভাঙা উইকেট ইত্যাদি হাতে। বিশ্বভারতীর পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতাল সূত্রে খবর, সেখানে ভর্তি স্বপ্ননীল মুখোপাধ্যায় ও শুভ নাথ নামে দুই ছাত্র। অভিযোগ, ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটিয়ে হাসপাতালেও পৌঁছে যায় দুষ্কৃতীরা এই দুই ছাত্রকে মারতে। হামলা ঠেকাতে হাসপাতালের মেন গেটে তালা দিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার রাতে হামলার ঘটনায় উঠে এসেছে তিনজনর নাম। অচিন্ত্য বাগদি, সাবির আলি ও সুলভ কর্মকার। বেশ কয়েকটি ভিডিওতেই তাদের দেখা যাচ্ছে। জল্পনা তাদের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েই। বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই বলছেন, অভিযুক্তদের শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের পতাকা হাতেই দেখা গিয়েছে শেষ কয়েক বছর। কেউ আবার বলছেন, উপাচার্য ঘনিষ্ঠতাই এদের সবচেয়ে বড় পরিচয়। যা হয়েছে তাঁর দায় উপাচার্যেরই। সঙ্গীতভবনের ছাত্রী মৌমিতা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘অভিযুক্তরা ক্যাম্পাসের পরিচিত মুখ। তাঁরা আগে তৃণমূল করত। কিন্তু এখন এবিভিপিতে নাম লিখিয়েছে ওরা। যা হয়েছে তা উপাচার্যের প্ররোচনাতেই হয়েছে।’’ অনেকে বলছেন, হামলাকারীরা ক্যাম্পাসে ঢোকার কিছুক্ষণ আগেই সেখানে উপাচার্যের গাড়ি ঢুকেছিল। এ দিনের ঘটনায় পুলিশি নিস্ক্রিয়তারও অভিযোগ তুলছেন বিশ্বভারতীর কয়েকজন ছাত্রছাত্রী। তাদের দাবি, রাতে থানায় ফোন করে ঘটনা জানানো হলেও কোনও তৎপরতা দেখায়নি পুলিশ।
এই হামলার খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই উত্তপ্ত হতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাস। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে জমায়েত শুরু করেছেন বহু ছাত্র ও প্রাক্তনী। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সরব তাঁরা। এ দিন দুপুর ১টায় গণবিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy