পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদে পুজোর মুখে ফের ধর্মঘটের ডাক দিল বেসরকারি বাস-মিনিবাস মালিকেরা। বুধবার বেসরকারি বাসমালিক সংগঠন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট্স, মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটি এবং বাস-মিনিবাস সমন্বয় সমিতি বৈঠক করে। বৈঠকের পরে ওই সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ফের ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। এর আগে জুলাই মাসে একই দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল বাসমালিক সংগঠনগুলি। তার আগেও কয়েক বার একই দাবিতে ধর্মঘটের ডাক দেয় তারা। কিন্তু প্রতি বারই সরকারের সঙ্গে আলোচনার পরে শেষ মুহূর্তে ধর্মঘট তুলে নেয়। তবে এ বার রাজ্য জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দেয়নি সংগঠনগুলি। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শুধুমাত্র কলকাতা, হাওড়া ও দুই ২৪ পরগনায় বাস চালানো হবে না।
তবে পুজোর মুখে ধর্মঘট ডাকা নিয়ে বাসমালিকদের দাবি, ‘‘বারবার সরকারকে পুলিশি জুলুমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীকে পর্যন্ত চিঠি দিয়েছি। কিন্তু সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। এর পরে আমাদের ধর্মঘট ডাকা ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা ছিল না। এ বারে সরকার নির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা ঘোষণা না করলে ধর্মঘট থেকে পিছিয়ে আসার কোনও প্রশ্ন নেই।’’ সংগঠনের এক নেতার দাবি, ‘‘জুলাই মাসে সরকার আশ্বাস দিয়েছিল, পুলিশি জুলুমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু আশ্বাসই সার। এই তিন মাসে সরকার কোনও পদক্ষেপই করেনি। বাধ্য হয়ে আমরা ফের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। সরকার নির্দিষ্ট ব্যবস্থা না নিলে ধর্মঘট তুলব না।’’ পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বাসমালিকদের মূলত অভিযোগ কলকাতা ও হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের বিরুদ্ধে। বাসমালিকদের দাবি, অনেক সময়েই অযথা তাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। বাস অনেক দিন ধরে আটকে রাখা হচ্ছে। বাস দাঁড় করিয়ে ইচ্ছেমতো কেস দেওয়া হচ্ছে। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার মতে, ‘‘পুলিশি জুলুমের দাবি যে একেবারে অযৌক্তিক নয়, তা আমরাও মানি। কিন্তু তা দূর করার ক্ষমতা আমাদের নেই। ধর্মঘট ডেকেও এই সমস্যা দূর করা যাবে না।’’
প্রত্যাশিত ভাবে সরকারের পক্ষ থেকে ধর্মঘটের বিরোধিতা করা হয়েছে। রাজ্যের পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘নীতিগত ভাবে সরকার সাধারণ মানুষের অসুবিধে তৈরি করে ধর্মঘট ডাকার বিরোধী। আলোচনা তো চলছেই। বাসমালিকদের আমরা তাঁদের দাবি নিয়ে আলোচনায় বসতে অনুরোধ করব।’’
পুজোর আগে ধর্মঘট ডাকার বিরোধিতা করেছে রাজ্যের শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-ও। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি এবং পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘বাসমালিকদের বোঝা উচিত, এটা একটা পরিষেবামূলক ব্যবসা। মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে কী আন্দোলন হবে! ওঁদের বোঝা উচিত, ধর্মঘট করলে ওঁরা আরও বেশি করে মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। ওঁদের বরং ধর্মঘট না করে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করার কথা ভাবা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy