স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, দূরের জেলা থেকেও প্রসূতিরা এসে ভর্তি হন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ফলে মহানগরীতে মৃত প্রসূতির সংখ্যাটি কলকাতার খাতে দেখানো হলেও তার অনেকটাই আদতে অন্যান্য জেলার।
প্রতীকী ছবি।
শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, শিল্প-বাণিজ্য থেকে শিল্প-সংস্কৃতি— দীর্ঘস্থায়ী অতিমারিতে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়েছে সব কিছুই। রাজ্যে প্রসবকালীন মৃত্যুহার বৃদ্ধির মূলেও সেই করোনা কি না, স্বাস্থ্য দফতরের একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে সেই প্রশ্ন উঠে এসেছে।
স্বাস্থ্য দফতরের ওই অভ্যন্তরীণ রিপোর্টের পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০-২১ সালে রাজ্যে প্রসবকালে মৃত্যু হয়েছে ১২০৬ জন মহিলার। তার পরে ২০২১-র মার্চ থেকে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা হল ১১২৯। আর এই দু’টি বছরেই বাংলায় চলছিল করোনার প্রবল দাপট।
প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব বাড়াতে এবং প্রসবকালীন সমস্যা এড়াতে বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রসূতিদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন আশাকর্মীরা। প্রসূতিকে নির্দিষ্ট সময়ে চিকিৎসক দেখানো, প্রতিষেধক দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে সহযোগিতা করেন তাঁরাই। কিন্তু কোভিড-যুদ্ধে তাঁদেরও ব্যবহার করায় প্রসূতিদের স্বাস্থ্যের প্রতি নজরদারিতে কিছুটা হলেও খামতি হয়েছিল বলে স্বাস্থ্য শিবিরের পর্যবেক্ষণ। আশাকর্মীদের সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ইসমত আরা খাতুন বলেন, ‘‘কোভিডে সমস্যা হয়েছে, এটা বাস্তব। ওই পর্বে প্রত্যন্ত এলাকায় প্রসূতিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতে সমস্যা হয়েছে। আবার কোভিড পরিস্থিতিতে হাসপাতালে যেতেও ভরসা পাননি অনেকে।’’
কোভিডের কারণে কিছুটা সমস্যা যে হয়েছেই, তা মেনে নিচ্ছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীও। তাঁর কথায়, ‘‘সেই সমস্যা এখন আর নেই। প্রসবকালীন মৃত্যু রুখতে জোরদার ভাবে সব রকমের পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বছরে সংখ্যাটি ১৫০০-র মধ্যে থাকার কথা। সেই তুলনায় সংখ্যাটা এখনও কম। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য, বছরে এক হাজারের নীচে অর্থাৎ ৭০০-৮০০-র মধ্যে নামিয়ে আনা।’’ অভ্যন্তরীণ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, প্রসূতি-মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। ওই জেলায় ২০২০-২১ বছরে প্রসবকালে মৃত মহিলার সংখ্যা ছিল ১৮১। ২০২১-২২ সালে সেটি হয় ১৩৯। ২০২১-২২ সালে মৃতের সংখ্যা পঞ্চাশের উপরে রয়েছে দার্জিলিং (৬৮), মালদহ (৬৩), পূর্ব বর্ধমান (৬৩) ও পশ্চিম মেদিনীপুরে (৬০)। আর কলকাতায় ২০২০-’২১ সালের (১১৫) তুলনায় ২০২১-২২ সালে মৃত প্রসূতির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫৯। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, দূরের জেলা থেকেও প্রসূতিরা এসে ভর্তি হন কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ফলে মহানগরীতে মৃত প্রসূতির সংখ্যাটি কলকাতার খাতে দেখানো হলেও তার অনেকটাই আদতে অন্যান্য জেলার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy