Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Murshidabad

Murshidabad Mango: নবাবি আমলের আম ফেরানোর উদ্যোগ

এ ছাড়া, আম পাড়ার পরে তা তুলোর মধ্যেই রাখতে হয়। শুধু তাই নয়, নবাবি আমলের আমের স্বাদ ভাল রাখার জন্য ছুরি নয়, বাঁশের চাঁচ দিয়ে আম কাটা হত। সেই সব দিক খতিয়ে দেখেই ফেরানো হবে আমের স্বর্ণযুগ। এই আমবাগান পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০২২ ০৭:২৮
Share: Save:

মুর্শিদাবাদের আমের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সুবে বাংলার নবাবদের নাম। নবাবদের পৃষ্ঠপোষকতায় এক সময়ে মুর্শিদাবাদে কোহিতুর, জাহান্নারা, মির্জাপছন্দ, সাহুপছন্দ, দিলসাধ, দিলপছন্দ, কালাপাহাড়, চন্দনকোষা, চম্পা, তোতা, সারেঙ্গার মতো শতাধিক প্রজাতির আমের চাষ শুরু হয়েছিল। নানা কারণে নবাবি আমলের সে সব আমের অনেক প্রজাতি আজ বিলুপ্তির পথে।

এমন পরিস্থিতিতে নবাবি আমলের সেই সব প্রজাতির আমের গাছ ফিরিয়ে আনতে চাইছে রাজ্যের উদ্যান পালন দফতর। মুর্শিদাবাদ শহর লাগোয়া খানপুর ও কদমশরিফ মৌজায় রাজ্যের বিচার বিভাগের অধীন থাকা মুর্শিদাবাদ এস্টেটের প্রায় ৩৫ একর জমিতে নবাবি আমলের সেই সব আমের গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মুর্শিদাবাদ এস্টেট সেই জমি চিহ্নিত করেছে। কদমশরিফ মৌজায় ৭.৩৩ একর ও খানপুর মৌজায় ২৬.৩৫ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে।

সেই সঙ্গে, মুর্শিদাবাদ এস্টেট-এর ম্যানেজার জয়ন্ত মণ্ডল বলছেন, ‘‘নবাবি আমলের আমের বাগান করার পাশাপাশি উন্নত মানের নার্সারি তৈরি করবে উদ্যান পালন দফতর।’’ উদ্যান পালন দফতরের জেলা আধিকারিক প্রভাস মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব প্রস্তাবিত জমি ঘুরেও গিয়েছেন।’’

মুর্শিদাবাদ জেলা উদ্যান পালন দফতর সূত্রের খবর, জেলায় ঠিক কত প্রজাতির আম রয়েছে, তা দীর্ঘ দিন খতিয়ে দেখা হয়নি। তবে অতীতে এক সময় জেলায় প্রায় ১০০টিরও বেশি প্রজাতির আম গাছ ছিল বলে শোনা যায়। তার মধ্যে কৃষকদের মুখে প্রায় ৫০টি প্রজাতির আমের প্রজাতির খোঁজ এখনও মেলে।

জেলার ইতিহাসবিদরা জানান, মুর্শিদকুলি খাঁ এবং তাঁর পরবর্তী কালের নবাবদের তত্ত্বাবধানে মুর্শিদাবাদে বিঘের পর বিঘে জমিতে আমের বাগান তৈরি হয়েছিল। আমের বাগান দেখভালের জন্য নবাবরা কর্মচারী রাখতেন। তাঁদের ‘আম পেয়াদা’ বা ‘আম কেরানি’ বলা হত। তাঁরা আমের চাষের সব কিছু দেখতেন। তাঁরাই বুঝতেন, আমের বাগানে কোন কীট উপকারী, কিংবা কোন কীট ক্ষতিকর। জাহান্নারা, মির্জাপছন্দ, সাহুপছন্দ, দিলসাধ, দিলপছন্দ, চন্দনকোষার, স্যারেঙা, চম্পা, হিমসাগরের মতো আমের নাম সকলে জানলেও এখন হিমসাগর ছাড়া অন্যগুলো আর পাওয়া দুষ্কর। এই সব আমের পরিচর্যা করাও বেশ শক্ত। যেমন, কোহিতুর পাকার দেড় থেকে দু’দিন আগে পাড়তে হয়। কোহিতুর আমে আঘাত লাগলে স্বাদ হারায়। তাই আঘাতের হাত থেকে রক্ষা করতে আম পাড়ার ঠুসির মধ্যে তুলো বেঁধে তা পাড়া হয়।

এ ছাড়া, আম পাড়ার পরে তা তুলোর মধ্যেই রাখতে হয়। শুধু তাই নয়, নবাবি আমলের আমের স্বাদ ভাল রাখার জন্য ছুরি নয়, বাঁশের চাঁচ দিয়ে আম কাটা হত। সেই সব দিক খতিয়ে দেখেই ফেরানো হবে আমের স্বর্ণযুগ। এই আমবাগান পর্যটকদেরও আকৃষ্ট করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Murshidabad Mangoes
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy