Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
BJP

এক ভাষা-এক টুইট, মমতা ও নন্দীগ্রাম নিয়ে আক্রমণের নয়া অস্ত্র বিজেপি-র

এটা কি আক্রমণের নয়া কৌশল? এর পিছনে ‘মূল মস্তিষ্ক’ অমিত মালব্যর বক্তব্য, ‘‘এত জন নেতা যে কথা বলেছেন, তার বিষয়টাকে দেখুন, পদ্ধতি নয়।’’ 

গ্রাফিক: নিরুপম পাল

গ্রাফিক: নিরুপম পাল

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:০৮
Share: Save:

তৃণমূলের নির্বাচনী স্লোগান ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ যে দিন প্রকাশ্যে এল, সে দিনই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণের নতুন কৌশল নিল বিজেপি। মোটামুটি একই ভাষা। একটাই বক্তব্য। প্লাটফর্মও এক। টুইটার। শনিবার বিকেল থেকে সন্ধে পর্যন্ত বিজেপি-র রাজ্য ও বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আক্রমণ করলেন নিজেদের টুইটার হ্যান্ডেলে। সেই তালিকায় বিজেপি-র কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, শুভেন্দু অধিকারী, দেবশ্রী চৌধুরী। শনিবার সন্ধেয় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মোট ১২ জন।

কী লেখা হল সেই টুইটে? ‘বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হবেন বলে নিজেই ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কেন্দ্র থেকে তিনি জিতবেন, এমনটা সুনিশ্চিত হলে তবেই ঘোষণা করুন যে, ওই কেন্দ্র থেকেই তিনি লড়বেন। পরে যেন মুখ্যমন্ত্রী কথার খেলাপ না করেন। নাহলে তিনি কী করবেন, তা জানা আছে’।

এর জবাবও দিয়েছে তৃণমূল। দলের পক্ষে বলা হয়েছে, ‘‘বিজেপি কেন নন্দীগ্রামে নিজেদের প্রার্থীর নাম জানাতে ভয় পাচ্ছে? মমতাদি ২৯৪টা আসনেই দলের মুখ। বিজেপি-র উচিত সবার আগে নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কে লড়বেন তা ঘোষণা করা‌। আমরা বড় ব্যবধানে জয়ের জন্য তৈরি।’

বিজেপি-র পক্ষে মমতাকে আক্রমণ করে শনিবার বিকেলে ৩টের পরে প্রথম টুইটটি করেন দলের তথ্য-প্রযুক্তি শাখার সর্বভারতীয় প্রধান তথা রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। সেটি ছিল ইংরেজিতে। এর পরে হিন্দিতে কৈলাস। তার পরেই যেন টুইটের ‘কার্পেট বোম্বিং’ শুরু হয় বাংলায়। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, রাহুল সিংহ, অনুপম হাজরা, অমিতাভ চক্রবর্তী, রাহুল সিংহ, মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়রাও টুইট করেন। একটু দেরিতে হলেও তাতে যোগ দেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিষয় শুধু নয়, যার ভাষাও এক। সকলের একই ভাষা কেন? এটা কি আক্রমণের নয়া পদ্ধতি? এই ব্যাপারে লকেট এবং রাহুলকে ফোন প্রশ্ন করা হলে দু‍’জনেই বলেন, তাঁরা নিজেরা কী টুইট করেছেন, সেটা জানেন। কিন্তু বাকিদের বিষয় ও ভাষা হুবহু এক কি না, তা জানা নেই। তবে রাজ্য বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘এটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই হয়েছে। আক্রমণকে জোরালো করার জন্য এমন নজির বাংলায় আগে দেখা না গেলেও অন্যত্র ছিল। সেটাই এ বার বাংলায় যুক্ত হল।’’ রাজ্য বিজেপি নেতারা বলছেন, এর পিছনে মূল মস্তিষ্ক অমিত মালব্য। তা নিয়ে অমিতের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি বিষয়টি নিয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি। এটা কি আক্রমণের নতুন পরিকল্পনা? অমিতের বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের এত জন নেতা এক সঙ্গে যে কথা বলেছেন, তার বিষয়টাকে দেখুন, পদ্ধতি নয়।’’ তবে এই টুইটার-মালা যে কেন্দ্রীয় ভাবেই করা হয়েছে, তা স্পষ্ট এর ভাষায়। উল্লেখযোগ্য ভাবে কারও কারও ক্ষেত্রে টুইটের বয়ানে ‘দাঁড়ি’, ‘কমা’ও এক। আর তা নিয়ে হাসাহাসি হচ্ছে বিজেপি-র অন্দরেও।

মমতা নন্দীগ্রাম থেকে বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান বলে জানানোর পর থেকেই আক্রমণাত্মক বিজেপি। প্রথম সরব হন একদা নন্দীগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। ওই আসনে ৫০ হাজার ভোটে মমতাকে হারাতে না পারলে তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেবেন বলে ঘোষণা করেন। এর পরে প্রায় সব জনসভাতেই তিনি নিয়ম করে ওই প্রসঙ্গ তোলেন এবং বলেন, “মাননীয়াকে শুধু নন্দীগ্রামেই দাঁড়াতে হবে।” এ বার সেই একই বক্তব্য নিয়ে শুরু হল দল বেঁধে আক্রমণ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy