সিবিআই দফতরে হুগলি তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে এসে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন হুগলি তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল ঘোষ। নিজাম প্যালেস থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমি যদি টাকা নিতাম, সিবিআই কি এত সহজে আমাকে ছেড়ে দিত?’’
নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল কুন্তলের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন, দাবি সিবিআইয়ের কাছে। তাপস নাকি তাঁদের জানিয়েছেন, বেআইনি শিক্ষক নিয়োগের ১৯ কোটি টাকা পৌঁছেছে কুন্তলের কাছে। সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুন্তলকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। বুধবার বিকেল ৩টের পর নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেন তৃণমূলের যুব নেতা।
কুন্তল সিবিআই দফতরে বেশ কিছু নথিপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। এক ঘণ্টা থাকার পর আবার বেরিয়ে যান। বুধবার দুপুরে নিজাম প্যালেসে আসেন তাপসের এক প্রতিনিধিও।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে কুন্তলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কী বিষয়ে সিবিআই আমাকে ডেকেছে, আমি তা বলে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটাতে চাই না। গত বুধবারও আমাকে এখানে ডাকা হয়েছিল। ঘণ্টাখানেক তদন্তকারীরা আমার সঙ্গে কথা বলেন। তার পর আমি বেরিয়ে যাই। আমি যদি সত্যিই টাকা নিতাম, আমাকে কি এত সহজে ওরা ছেড়ে দিত?’’
তাপসের দাবি ছিল, টাকা নেওয়ার কথা সিবিআইয়ের কাছে স্বীকার করে নিয়েছেন কুন্তল। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি যদি ১০০ টাকাও বেআইনি ভাবে নিয়ে স্বীকার করতাম, আমাকে সিবিআই ছেড়ে দিত না। ৮ দিন পর আবার দেখা করতেও বলত না। আদালতের নির্দেশে সিবিআই এই মামলার তদন্ত করছে। আমি তাদের সাহায্য করছি।’’
শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত না থাকা সত্ত্বেও কেন তদন্তে উঠে এল কুন্তলের নাম? প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘তাপস কী বলছেন, তা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ সিবিআই কী বলছে, আদালত কী বলছে। চার্জশিটে অভিযুক্ত কেউ যদি কিছু বলেন, তাঁর সেই অভিযোগ নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না।’’ নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন কখনও বিকাশ ভবনে তিনি যাননি বলেও দাবি করেছেন কুন্তল।
তাপস মণ্ডলের দাবি ছিল, ৩২৫ জন শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা নিয়েছেন কুন্তল। এই সংক্রান্ত নথিও তাঁর কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন। এর পর শুক্রবার তিনি নতুন করে দাবি করেন, মোট ২৬০০ চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন কুন্তল। অভিযোগ, টাকা দিয়েও চাকরি হয়নি কারও।
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় জেল হেফাজতে থাকা মানিকের বিরুদ্ধে পেশ করা চার্জশিটে তাপসকে অভিযুক্ত করেছে ইডি। পাশাপাশি, ৩২৫ জন প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া বাবদ এক ‘ঘোষবাবু’কে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু চার্জশিটে সেই ‘ঘোষবাবু’-র পরিচয় প্রকাশ্য আনা হয়নি। সূত্রের দাবি, ওই ঘোষবাবুই আদতে হুগলির যুব নেতা কুন্তল ঘোষ বলে সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন তাপস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy