তাপস মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগের দিন অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যে বেআইনি শিক্ষক নিয়োগে ১৯ কোটি টাকা পৌঁছেছে হুগলির যুব নেতা কুন্তল ঘোষের কাছে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি সূত্রে দাবি, ওই টাকা কী ভাবে দেওয়া হয়েছিল, তা তাদের বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছেন তাপস মণ্ডল। যিনি শুধু বেসরকারি বিএড এবং ডিএলএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি নন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যে ও প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠবলেও পরিচিত।
তাপসের বক্তব্য, কুন্তল তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে এই মর্মে চিঠি এসেছে। কিন্তু তাঁর দাবি, ‘‘বেআইনি নিয়োগ সংক্রান্ত যে টাকা কুন্তল নিয়েছিলেন, তার যাবতীয় নথি আমার কাছে রয়েছে।’’
আগের দিন তাপস ৩২৫ জন শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছে কুন্তলের প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। শুক্রবার তিনি আর এক ধাপ এগিয়ে বলেন, চাকরির আশ্বাস দিয়ে ২৬০০ চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছিলেন কুন্তল। তার পরে তাঁদের চাকরিও হয়নি বলে তাঁর অভিযোগ।
টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে এ দিন তাপস ফোনে বলেন, ‘‘কুন্তল চাকরির পরীক্ষায় পাশ করিয়ে ‘দিতে’ প্রথমে এক লক্ষ টাকা করে নিয়েছিলেন। তার পরে আবার ধাপে ধাপে নিয়েছেন। টাকা নেওয়ার পরে তিনি একটি ছোট ডায়েরিতে লিখে সই করে দিতেন। বিষয়টি ইডি-কে জানিয়েছি। ওই ডায়েরিটিও ইডির তদন্তকারীদের হেফাজতে রয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, বুধবার সিবিআইয়ের দফতর থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে তাপস বলেছিলেন, ‘‘এটা প্রায় ১০০ কোটি টাকার খেলা।’’ ওই দিন কুন্তলের সঙ্গে তাপসকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর পরে তাপসকে ফের বৃহস্পতিবার তলব করা হয়। কিন্তু ওই দিন তিনি হাজির হননি। শুক্রবার বিকেল তিনটে নাগাদ সিবিআই দফতরে আসেন তিনি।
নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় জেল হেফাজতে থাকা মানিকের বিরুদ্ধে পেশ করা চার্জশিটে তাপসকে অভিযুক্ত করেছে ইডি। পাশাপাশি, ৩২৫ জন প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া বাবদ এক ‘ঘোষবাবু’কে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু চার্জশিটে সেই ‘ঘোষবাবু’-র পরিচয় প্রকাশ্য আনা হয়নি। সূত্রের দাবি, ওই ঘোষবাবুই আদতে হুগলির যুব নেতা কুন্তল ঘোষ বলে সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছেন তাপস।
এ দিন কলেজ সংগঠনের আর এক নেতার নাম উঠেছে বলে সিবিআই সূত্রের খবর। কুন্তল মারফত ওই নেতার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়েছিল বলে নাকি তাপস তাদের জানিয়েছেন। তাপস বলেন, ‘‘আমার পরিবারের কোনও সদস্য (কুন্তলের সূত্রে) চাকরি পাননি। কিন্তু কয়েক জন দূর সম্পর্কের আত্মীয় কুন্তলের সঙ্গে যোগাযোগ করে চাকরি পেয়েছেন বলে শুনেছি।’’
সিবিআই সূত্রের খবর, শুক্রবার তাপসের জমা দেওয়া নথি যাচাই করে কুন্তলকে ফের তলব করা হবে। ডাকা হবে দ্বিতীয় ওই শিক্ষক নেতাকেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy