Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Flood Situation in Bengal

বন্যাত্রাণে ডিভিসি-র ‘দান’ নেবে না রাজ্য, যদিও কর্মীদের ব্যক্তিগত সাহায্যে আপত্তি নেই: শোভনদেব

বৃহস্পতিবার শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, ডিভিসি রাজ্যের বন্যা ত্রাণ তহবিলে কর্মচারীদের এক দিনের বেতন দান করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই দান গ্রহণ করবে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

বন্যাদুর্গতদের জন্য ডিভিসির দান নেবে না রাজ্য, জানালেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।

বন্যাদুর্গতদের জন্য ডিভিসির দান নেবে না রাজ্য, জানালেন মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:১৮
Share: Save:

ডিভিসির ‘দান’ নেবে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এমনটাই জানালেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতিতে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিভিসি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রাণ তহবিলে তারা প্রত্যেক কর্মচারীর এক দিনের বেতন দান করতে চেয়েছে। এই মর্মে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় বুধবার। সেখানে ডিভিসির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার রাজেশ কুমার জানান, ডিভিসির যে কর্মীরা আয়করের আওতায় রয়েছেন, তাঁদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে এক দিনের বেতন কাটা যাবে। সেই টাকা দান করা হবে পশ্চিমবঙ্গের বন্যা ত্রাণ তহবিলে। ডিভিসির এই ‘দান’ প্রত্যাখ্যান করতে চলেছে রাজ্য সরকার, জানিয়েছেন শোভনদেব।

বৃহস্পতিবার শোভনদেব জানান, ডিভিসি রাজ্যের বন্যা ত্রাণ তহবিলে কর্মচারীদের এক দিনের বেতন দান করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেই দান গ্রহণ করবে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তবে যদি ডিভিসির কোনও কর্মচারী ব্যক্তিগত ভাবে বন্যাদুর্গতদের জন্য দান করতে চান, সেই দান গৃহীত হবে। ডিভিসির তরফে কোনও দান নেবে না রাজ্য।

শোভনদেব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ডিভিসির কাছ থেকে কোনও সাহায্য আমরা নেব না। ডিভিসিতে আমাদের ইউনিয়ন আছে। ডিভিসির কর্মচারীদের বেতন কাটতে দেবে না। বন্যা তো হয়েই গিয়েছে। মানুষ তো জলের তলায়। এখন টাকা দিয়ে কী হবে?’’

ডিভিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে শোভনদেব আরও বলেছেন, ‘‘১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডিভিসি মোট ৮ লক্ষ ২৭ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হল, জল ছাড়ার আগে মাত্র তিন ঘণ্টা সময় তারা দিয়েছে। তা-ও মধ্যরাতে। মানুষ তখন ঘুমোয়। ওই অবস্থায় উদ্ধারকার্য সম্ভব নয়। ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের রাজ্যে মানুষ মারা যাননি। আগে থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া গিয়েছিল। এই বন্যায় অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ডিভিসি আমাদের সঙ্গে কোনও সহযোগিতা করে না। পাঞ্চেত এবং মাইথনের ধারণক্ষমতা কমে গিয়েছে। সেই সংস্কারের দিকে কর্তৃপক্ষ নজর দিচ্ছেন না। এখন বড় বড় প্ল্যান্ট তৈরি করাই ওঁদের লক্ষ্য।’’

কয়েক দিনের বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হয়ে পড়েছিল। বন্যা পরিস্থিতির জন্য প্রথম থেকেই ডিভিসিকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ, রাজ্যের আপত্তি সত্ত্বেও ঝাড়খণ্ডকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে কয়েক লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। অনেক ক্ষেত্রেই রাজ্যের পরামর্শ না নিয়েই জল ছাড়া হয়ে থাকে। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দু’বার চিঠি লিখেছেন মমতা। হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ডিভিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার। দুই জলাধার থেকে জল ছাড়ার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের জন্য যে কমিটি রয়েছে, সেই দামোদর ভ্যালি জলাধার নিয়ন্ত্রণ কমিটি (ডিভিআরআরসি) থেকে রাজ্যের প্রতিনিধিও তুলে নেওয়া হয়েছে। পরে প্রকাশ্যে আসা একটি নথি থেকে জানা যায়, ডিভিসির জল ছাড়ার খবর আগে থেকেই রাজ্যের কাছে ছিল। সেই অনুযায়ী রাজ্য সরকার আটটি জেলাকে সতর্কও করেছিল। যা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার ডিভিসি ত্রাণ তহবিলে কর্মীদের এক দিনের বেতন দানের সিদ্ধান্ত জানায়। তা গ্রহণ করা হবে না বলে জানিয়ে দিলেন পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy